বিভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতির যোগ ও বিয়োগ
সংখ্যা পদ্ধতি বিভিন্ন ধরনের হয়, যেমন দশমিক (Decimal), বাইনারি (Binary), অক্টাল (Octal), এবং হেক্সাডেসিমেল (Hexadecimal)। প্রতিটি সংখ্যা পদ্ধতির নিজস্ব নিয়ম রয়েছে এবং এগুলির যোগ ও বিয়োগ করতে হলে সেই নিয়ম মেনে চলতে হয়। এখানে আমরা বিভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতির যোগ ও বিয়োগ কিভাবে করা হয় তা আলোচনা করবো।
১. দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির যোগ ও বিয়োগ: দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি হলো ১০ ভিত্তিক পদ্ধতি, যেখানে শূন্য (০) থেকে নয় (৯) পর্যন্ত সংখ্যা ব্যবহার করা হয়।
আরো পড়ুনঃ বাঙালি জাতির জনগোষ্ঠীর নৃগোষ্ঠীগত পরিচয়
দশমিক সংখ্যার যোগ: দশমিক সংখ্যার যোগ আমাদের দৈনন্দিন গণনার মতোই হয়, যেখানে প্রথমে এককের স্থানের সংখ্যা যোগ করা হয়, অতিরিক্ত থাকলে তা পরবর্তী স্থানে যোগ করা হয়।
উদাহরণ:
৫৭৮ + ৩২৬
১ | ১ | |
৫ | ৭ | ৮ |
+ ৩ | ২ | ৬ |
—– | —- | —- |
৯ | ০ | ৪ |
সুতরাং, ৫৭৮ + ৩২৬ = ৯০৪।
দশমিক সংখ্যার বিয়োগ: দশমিক সংখ্যার বিয়োগের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম অনুসরণ করা হয়। প্রয়োজন হলে এক স্থান থেকে ধার নেওয়া হয়।
উদাহরণ:
৭৩৫ – ৪৮৯
৬ | ১ | ||
۷ | ۳ | ۵ | |
– ۴ | ۸ | ۹ | |
— | —- | —– | —- |
۲ | ৪ | ৬ |
সুতরাং, ৭৩৫ – ৪৮৯ = ২৪৬।
২. বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির যোগ ও বিয়োগ: বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি হলো ২ ভিত্তিক পদ্ধতি, যেখানে কেবল ০ এবং ১ ব্যবহৃত হয়। এখানে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির যোগ এবং বিয়োগ করার পদ্ধতি আলোচনা করা হলো।
বাইনারি সংখ্যার যোগ: বাইনারি সংখ্যার যোগের জন্য কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করতে হয়:
- ০ + ০ = ০
- ০ + ১ = ১
- ১ + ০ = ১
- ১ + ১ = ১০ (এখানে ১ ক্যারি হবে)
আরো পড়ুনঃ ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষা কী?
উদাহরণ:
১০১ + ১১
ক্যারি | ১ | ১ |
১ | ০ | ১ |
+ ০ | ১ | ১ |
——— | — | —- |
১ | ০ | ০ |
সুতরাং, ১০১ + ১১ = ১০০০।
বাইনারি সংখ্যার বিয়োগ: বাইনারি বিয়োগে কিছু নিয়ম আছে:
- ০ – ০ = ০
- ১ – ০ = ১
- ১ – ১ = ০
- ০ – ১ = ১ (এখানে পূর্বের স্থান থেকে ধার নিতে হয়)
উদাহরণ:
১০০১ – ১০১
ক্যারি | ১ | ১ | ||
১ | ০ | ০ | ১ | |
– ১ | ০ | ১ | ||
——— | —- | —- | — | |
১ | ০ | ০ |
সুতরাং, ১০০১ – ১০১ = ১০০।
৩. অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির যোগ ও বিয়োগ: অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি হলো ৮ ভিত্তিক পদ্ধতি, যেখানে ০ থেকে ৭ পর্যন্ত সংখ্যা ব্যবহৃত হয়। অক্টাল সংখ্যার যোগ ও বিয়োগ দশমিক সংখ্যার মতোই করা হয়, তবে এখানে ৮-এর ভিত্তিতে গণনা করা হয়।
অক্টাল সংখ্যার যোগ: অক্টাল যোগ করার সময়, যদি সংখ্যার যোগফল ৭ এর বেশি হয়, তাহলে অতিরিক্ত অংশটি পরবর্তী স্থানে ক্যারি হয়ে যায়।
উদাহরণ:
৬৭ + ২৩ (অক্টাল)
ক্যারি | ১ | |
৬ | ৭ | |
+ ২ | ৩ | |
——— | —– | —- |
১ | ২ |
সুতরাং, ৬৭ (অক্টাল) + ২৩ (অক্টাল) = ১১২ (অক্টাল)।
অক্টাল সংখ্যার বিয়োগ: অক্টাল বিয়োগের ক্ষেত্রেও, দশমিকের মতো একই নিয়ম অনুসরণ করা হয়, তবে প্রয়োজন হলে ৮-এর ভিত্তিতে ধার নেওয়া হয়।
উদাহরণ:
৭৫ – ৩৬ (অক্টাল)
ক্যারি | ১ | |
৭ | ৫ | |
– ৩ | ৬ | |
——— | —– | —- |
৩ | ৭ |
সুতরাং, ৭৫ (অক্টাল) – ৩৬ (অক্টাল) = ৩৭ (অক্টাল)।
৪. হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতির যোগ ও বিয়োগ: হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি হলো ১৬ ভিত্তিক পদ্ধতি, যেখানে ০ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা এবং A থেকে F পর্যন্ত বর্ণ ব্যবহৃত হয়। A = ১০, B = ১১, C = ১২, D = ১৩, E = ১৪, এবং F = ১৫।
হেক্সাডেসিমেল সংখ্যার যোগ: হেক্সাডেসিমেল যোগের সময়, যদি দুটি সংখ্যার যোগফল ১৫ এর বেশি হয়, তাহলে অতিরিক্ত অংশটি পরবর্তী স্থানে ক্যারি হয়ে যায়।
উদাহরণ:
A2 + 3F (হেক্সাডেসিমেল)
ক্যারি | ১ | |
A | ২ | |
+ ৩ | F | |
——— | —– | —- |
D | ১ |
সুতরাং, A2 (হেক্সাডেসিমেল) + 3F (হেক্সাডেসিমেল) = D1 (হেক্সাডেসিমেল)।
হেক্সাডেসিমেল সংখ্যার বিয়োগ: হেক্সাডেসিমেল বিয়োগের ক্ষেত্রেও, যদি একটি সংখ্যা অন্য সংখ্যার চেয়ে বড় হয়, তবে ধার নিতে হয় এবং ১৬-এর ভিত্তিতে বিয়োগ করতে হয়।
আরো পড়ুনঃ সামাজিক অসমতা বলতে কি বুঝ?
উদাহরণ:
B7 – 4A (হেক্সাডেসিমেল)
ক্যারি | ১ | |
B | ৭ | |
– ৪ | A | |
——— | —– | —- |
৬ | D |
সুতরাং, B7 (হেক্সাডেসিমেল) – 4A (হেক্সাডেসিমেল) = 6D (হেক্সাডেসিমেল)।
উপসংহার: বিভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতির যোগ ও বিয়োগের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে, এবং প্রতিটি পদ্ধতিতে এর ভিত্তির ওপর নির্ভর করে গণনা করতে হয়। বাইনারি, অক্টাল, এবং হেক্সাডেসিমেল পদ্ধতির যোগ ও বিয়োগ করতে হলে ভিত্তি অনুযায়ী ক্যারি এবং ধার নেওয়ার নিয়ম মেনে চলা জরুরি।