চিহ্নযুক্ত সংখ্যা (১ এর পরিপূরক ও ২ এর পরিপূরক) এবং যোগের মাধ্যমে বিয়োগ
কম্পিউটার সিস্টেমে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা (Signed Numbers) বলতে বোঝায় পজিটিভ (+) ও নেগেটিভ (-) সংখ্যা। বাইনারি পদ্ধতিতে নেগেটিভ সংখ্যা প্রকাশের জন্য চিহ্নযুক্ত সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটারে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা প্রকাশের জন্য সাধারণত ১ এর পরিপূরক (1’s Complement) এবং ২ এর পরিপূরক (2’s Complement) পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে যোগের মাধ্যমে বিয়োগ সম্পন্ন করা যায়।
১. ১ এর পরিপূরক (1’s Complement)
১ এর পরিপূরক পদ্ধতিতে, একটি বাইনারি সংখ্যাকে নেগেটিভ করতে হলে প্রতিটি বিটকে উল্টিয়ে দিতে হয়। অর্থাৎ, ০ হলে ১ এবং ১ হলে ০ বসিয়ে দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে একটি সংখ্যার নেগেটিভ মান বের করা খুব সহজ।
আরো পড়ুনঃ বাঙালি জাতির জনগোষ্ঠীর নৃগোষ্ঠীগত পরিচয়
উদাহরণ:
ধরা যাক, ৫ সংখ্যাটি বাইনারিতে ০১০১।
এখন, যদি আমরা ৫-এর নেগেটিভ মান পাই ১ এর পরিপূরক পদ্ধতিতে, তাহলে প্রতিটি বিট উল্টিয়ে দিতে হবে:
- ০ → ১
- ১ → ০
সুতরাং, ০১০১ এর ১ এর পরিপূরক হবে ১০১০। এটি -৫ প্রকাশ করবে।
২. ২ এর পরিপূরক (2’s Complement)
২ এর পরিপূরক পদ্ধতি হলো সবচেয়ে সাধারণ এবং জনপ্রিয় পদ্ধতি, যা কম্পিউটারে নেগেটিভ সংখ্যা প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হয়। ২ এর পরিপূরক বের করার জন্য প্রথমে ১ এর পরিপূরক নিতে হয়, এরপর তার সাথে ১ যোগ করতে হয়।
উদাহরণ:
ধরা যাক, ৫ সংখ্যাটি বাইনারিতে ০১০১।
এখন, ৫-এর ২ এর পরিপূরক বের করতে হলে প্রথমে এর ১ এর পরিপূরক নিতে হবে:
- ৫ = ০১০১
- ১ এর পরিপূরক = ১০১০
এখন এর সাথে ১ যোগ করলে:
- ১০১০ + ১ = ১০১১
সুতরাং, ১০১১ হলো ৫-এর নেগেটিভ সংখ্যা (-৫)।
৩. যোগের মাধ্যমে বিয়োগ
যোগের মাধ্যমে বিয়োগ করার জন্য, বিয়োগ করতে ইচ্ছুক সংখ্যাটির ২ এর পরিপূরক বের করতে হবে এবং তারপর এটি প্রথম সংখ্যার সাথে যোগ করতে হবে। কারণ ২ এর পরিপূরক পদ্ধতিতে একটি সংখ্যার নেগেটিভ মান বের করা যায় এবং যোগের মাধ্যমে সহজে বিয়োগ করা সম্ভব হয়।
উদাহরণ ১: ৫ – ৩
ধাপ ১: ৫ এবং ৩ কে বাইনারিতে প্রকাশ করি
- ৫ = ০১০১
- ৩ = ০০১১
ধাপ ২: ৩ এর ২ এর পরিপূরক বের করি
আরো পড়ুনঃ বাংলায় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব ও বিকাশ
- ৩ = ০০১১
- ১ এর পরিপূরক: ১১০০
- ২ এর পরিপূরক: ১১০১ (১ যোগ করলাম)
ধাপ ৩: ৫ এর সাথে ৩ এর ২ এর পরিপূরক যোগ করি
- ৫ = ০১০১
- ৩ এর ২ এর পরিপূরক = ১১০১
০১০১ + ১১০১ = ১০০১০
এখানে ৫ম বিট (carry) বাদ দিয়ে দিলে, ফলাফল হবে: ০০০১০, যা দশমিক ২।
সুতরাং, ৫ – ৩ = ২।
উদাহরণ ২: ৭ – ৫
ধাপ ১: ৭ এবং ৫ কে বাইনারিতে প্রকাশ করি
- ৭ = ০১১১
- ৫ = ০১০১
ধাপ ২: ৫ এর ২ এর পরিপূরক বের করি
- ৫ = ০১০১
- ১ এর পরিপূরক: ১০১০
- ২ এর পরিপূরক: ১০১১
ধাপ ৩: ৭ এর সাথে ৫ এর ২ এর পরিপূরক যোগ করি
- ৭ = ০১১১
- ৫ এর ২ এর পরিপূরক = ১০১১
০১১১ + ১০১১ = ১০০১০
৫ম বিট (carry) বাদ দিয়ে দিলে, ফলাফল হবে: ০০০১০, যা ২ প্রকাশ করে।
সুতরাং, ৭ – ৫ = ২।
উদাহরণ ৩: ৫ – ৯ (নেগেটিভ ফলাফল)
ধাপ ১: ৫ এবং ৯ কে বাইনারিতে প্রকাশ করি
- ৫ = ০১০১
- ৯ = ১০০১
ধাপ ২: ৯ এর ২ এর পরিপূরক বের করি
- ৯ = ১০০১
- ১ এর পরিপূরক: ০১১০
- ২ এর পরিপূরক: ০১১১
ধাপ ৩: ৫ এর সাথে ৯ এর ২ এর পরিপূরক যোগ করি
- ৫ = ০১০১
- ৯ এর ২ এর পরিপূরক = ০১১১
০১০১ + ০১১১ = ১১০০
আরো পড়ুনঃ সমাজ বিজ্ঞান পরিচিতি বিগত সালের প্রশ্ন
এটি একটি নেগেটিভ ফলাফল প্রকাশ করছে (২ এর পরিপূরক), তাই এর ২ এর পরিপূরক বের করতে হবে:
- ১১০০ এর ১ এর পরিপূরক: ০০১১
- ২ এর পরিপূরক: ০১০০
সুতরাং, ৫ – ৯ = -৪।
উপসংহার: ১ এর পরিপূরক ও ২ এর পরিপূরক পদ্ধতিতে বাইনারি সংখ্যা দ্বারা নেগেটিভ সংখ্যা প্রকাশ করা হয় এবং সহজেই যোগের মাধ্যমে বিয়োগ করা যায়। ২ এর পরিপূরক পদ্ধতি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নেগেটিভ সংখ্যা যোগ করে বিয়োগ সম্পন্ন করতে সাহায্য করে, যা কম্পিউটার সিস্টেমে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।