পদার্থ কী ও কত প্রকার?
যা দ্বারা স্থান পূর্ণ হয় এবং যার ভর আছে, তাকে পদার্থ বলে। অর্থাৎ, যে কোনো বস্তু—যা দেখা, ছোঁয়া বা কমপক্ষে কোনোভাবে অনুভব করা যায় এবং যা কিছু জায়গা দখল করে, তাকে পদার্থ বলে। বাতাস, পানি, লোহা, কাঠ, পাথর, মানুষ, প্রাণী—সবই পদার্থ; কারণ এগুলোর ভর আছে এবং স্থান দখল করে।
নিচে পদার্থের সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিকগুলো তালিকাভুক্তভাবে তুলে ধরা হলো—
-
পদার্থের সংজ্ঞা:
যে সব বস্তু স্থান দখল করে ও যার ভর আছে, তাকে পদার্থ বলে।-
যেমন: পানি, বায়ু, লোহা, বই, টেবিল, গাছ, মানবদেহ ইত্যাদি।
-
-
পদার্থের প্রধান প্রকার (অবস্থার ভিত্তিতে):
সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ে পদার্থকে সাধারণত তিন প্রকার ধরা হয়—
১. কঠিন (Solid)
২. তরল (Liquid)
৩. বায়বীয় বা গ্যাসীয় (Gas) -
কঠিন পদার্থ (Solid):
-
যার নির্দিষ্ট আকৃতি ও নির্দিষ্ট আয়তন আছে।
-
যেমন: পাথর, লোহা, কাঠ, বই, টেবিল ইত্যাদি।
-
এদের অণুগুলো খুব ঘনভাবে, কাছে কাছে সাজানো থাকে।
-
-
তরল পদার্থ (Liquid):
-
যার নির্দিষ্ট আয়তন আছে, কিন্তু নির্দিষ্ট আকৃতি নেই; পাত্রের আকার ধারণ করে।
-
যেমন: পানি, দুধ, তেল, কেরোসিন ইত্যাদি।
-
অণুগুলো কাছাকাছি থাকলেও কঠিনের মতো শক্ত করে বাঁধা নয়, তাই সহজে গড়ায়।
-
-
বায়বীয় বা গ্যাসীয় পদার্থ (Gas):
-
যার নির্দিষ্ট আকৃতি ও নির্দিষ্ট আয়তন—দু’টিই নেই।
-
যে পাত্রে থাকে, তার পুরো স্থান জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
-
যেমন: বায়ু, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি।
-
-
আরও উচ্চতর পর্যায়ে পদার্থের অন্যান্য অবস্থা (জেনে রাখা ভালো):
-
প্লাজমা: সূর্য, তারা, নিয়ন লাইট ইত্যাদিতে পাওয়া যায়; আয়নিত গ্যাসীয় অবস্থা।
-
বোস–আইনস্টাইন ঘনীভবন: অতিশীতল অবস্থায় কিছু পদার্থের বিশেষ অবস্থা।
(এসব সাধারণত উচ্চতর পদার্থবিজ্ঞানে পড়ানো হয়।)
-
-
গঠনভিত্তিক আরেকটা প্রকারভেদ (অতিরিক্ত তথ্য):
অনেক বইয়ে পদার্থকে গঠন অনুযায়ী আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়—-
বিশুদ্ধ পদার্থ:
-
মৌল (যেমন: অক্সিজেন, লোহা)
-
যৌগ (যেমন: পানি, লবণ, চিনি)
-
-
মিশ্রণ:
-
যেমন: বায়ু, লবণ-পানি, মাটি ইত্যাদি।
-
-
সব মিলিয়ে, পদার্থ হলো এমন বস্তু, যার ভর আছে ও স্থান দখল করে, এবং সাধারণ বিজ্ঞানে আমরা তাকে মূলত কঠিন, তরল ও বায়বীয়—এই তিন প্রকার অবস্থায় ভাগ করে থাকি।