মুদ্রাস্ফীতি কি?

Avatar
calender 16-11-2025

মুদ্রাস্ফীতি হলো এমন একটি অর্থনৈতিক অবস্থা, যখন একটি দেশের বাজারে বেশিরভাগ পণ্য ও সেবার দাম নির্দিষ্ট সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে, যার ফলে টাকার ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। সহজভাবে বললে, আগে যে টাকায় বেশি জিনিস কেনা যেত, মুদ্রাস্ফীতি বাড়লে একই টাকায় কম জিনিস পাওয়া যায়।

মুদ্রাস্ফীতির মূল ধারণা ও গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

  • সাধারণ মূল্যস্তর বৃদ্ধি
    মুদ্রাস্ফীতি বলতে শুধু চাল, তেল বা একটি–দুইটি পণ্যের দাম বাড়াকে বোঝায় না; বরং বাজারে বেশিরভাগ পণ্য ও সেবার গড় দাম যখন বাড়ে এবং তা কিছু সময় ধরে চলতে থাকে, তখন তাকে মুদ্রাস্ফীতি বলা হয়।

  • টাকার ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া
    দাম বাড়ার মানে একই পরিমাণ টাকায় আগের তুলনায় কম পণ্য কেনা যায়। ফলে টাকার বাস্তব “শক্তি” কমে যায়। যেমন, আগে ১০০ টাকায় যে পরিমাণ বাজার করা যেত, এখন একই ১০০ টাকায় কম জিনিস পাওয়া গেলে বুঝতে হবে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে।

  • প্রধান কয়েকটি কারণ

    • মানুষের হাতে টাকা বেশি, কিন্তু পণ্য উৎপাদন বা সরবরাহ তুলনামূলক কম হলে চাহিদা বাড়ে, এতে দাম বাড়ে।

    • কাঁচামাল, জ্বালানি, পরিবহন খরচ, শ্রমিকের মজুরি ইত্যাদি বেড়ে গেলে উৎপাদন খরচ বাড়ে, ফলে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বেশি রাখে।

    • কখনও কখনও বাজারে অতিরিক্ত টাকা ছাড়লেও, পর্যাপ্ত উৎপাদন না থাকায় চাহিদা–সরবরাহের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে দাম বাড়তে পারে।

  • মানুষের জীবনে প্রভাব
    মুদ্রাস্ফীতি বেশি হলে বিশেষ করে স্থির আয়ভুক্ত মানুষ (চাকরিজীবী, দিনমজুর, পেনশনভোগী) কষ্টে পড়ে, কারণ তাদের আয় আগের মতো থাকলেও খরচ বেড়ে যায়। সঞ্চয়ের প্রকৃত মূল্যও কমে যায়, কারণ ব্যাংকে রাখা টাকার সুদের হার অনেক সময় দাম বাড়ার গতির সঙ্গে তাল রাখতে পারে না।

সব মিলিয়ে, মুদ্রাস্ফীতি মানে হলো দাম বাড়া ও টাকার ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া। নিয়ন্ত্রিত ও স্বাভাবিক মাত্রার মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতির জন্য সহনীয়, কিন্তু অতিরিক্ত মুদ্রাস্ফীতি সাধারণ মানুষ এবং সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের চাপ ও ঝুঁকি তৈরি করে।

আরো পড়ুনঃ অংশীদারি চুক্তিপত্র কি?

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD