এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন কী?

এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন কী?

এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন হলো এমন একটি ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতি, যেখানে ডেটা নির্দিষ্ট কোনো সময়সূচী বা ক্লকের সাথে সিঙ্ক্রোনাইজ না করে প্রেরণ করা হয়। অর্থাৎ, প্রেরক এবং গ্রহণকারী ডিভাইসের মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট ক্লক সিগন্যাল থাকে না যা ট্রান্সমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করে। এর পরিবর্তে, প্রতিটি ডেটা ব্লকের শুরু এবং শেষের জন্য আলাদা আলাদা স্টার্ট এবং স্টপ বিট ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে ডেটা ব্লকগুলো অনিয়মিত বিরতিতে প্রেরিত হয়।

এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্য

১. স্টার্ট এবং স্টপ বিটের ব্যবহার: এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনে প্রতিটি ডেটা ফ্রেম বা প্যাকেটের শুরুতে একটি স্টার্ট বিট এবং শেষে একটি স্টপ বিট যোগ করা হয়। স্টার্ট বিট গ্রহণকারীকে জানায় যে একটি নতুন ডেটা ফ্রেম আসছে, এবং স্টপ বিট জানায় যে ডেটা প্রেরণ সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রেরক এবং গ্রহণকারী তাদের নিজ নিজ ক্লকের সাথে সিঙ্ক্রোনাইজ না হয়েও ডেটা পাঠাতে এবং গ্রহণ করতে সক্ষম হয়।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর নরগোষ্ঠী গত পরিচয়

২. নিয়মিত বিরতির প্রয়োজন নেই: ডেটা প্যাকেটের মধ্যে কোনো স্থায়ী বা নির্ধারিত বিরতি থাকার প্রয়োজন নেই। যখন প্রেরক ডেটা পাঠাতে চায়, তখন এটি একটি স্টার্ট বিট পাঠিয়ে ডেটা প্রেরণ শুরু করে এবং স্টপ বিটের মাধ্যমে প্রক্রিয়া শেষ করে। এর ফলে ডেটা প্রেরণের সময়ের কোনো নির্দিষ্ট ধারাবাহিকতা বজায় থাকে না।

৩. কম্পিউটিং ওভারহেড কম: যেহেতু ডেটা প্রেরণের জন্য প্রেরক এবং গ্রহণকারীর মধ্যে একটি নির্দিষ্ট ক্লক সংকেতের প্রয়োজন নেই, তাই এই পদ্ধতিতে কম কম্পিউটিং ওভারহেড থাকে। এটি কমপ্লেক্সিটি কমিয়ে আনে এবং ডেটা ট্রান্সফার প্রক্রিয়া সহজ করে তোলে।

এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের ব্যবহার

১. ইন্টারনেট যোগাযোগ: এসিনক্রোনাস পদ্ধতি ইন্টারনেটের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন ইমেইল পাঠানো, ওয়েব ব্রাউজিং ইত্যাদি। এই ধরনের কাজগুলোতে ডেটা প্রেরণের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বা ধারাবাহিকতার প্রয়োজন হয় না, তাই এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন যথাযথভাবে কাজ করে।

২. সিরিয়াল পোর্ট কমিউনিকেশন: কম্পিউটারের সিরিয়াল পোর্ট যোগাযোগে এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন ব্যবহৃত হয়, যেখানে স্টার্ট এবং স্টপ বিট ব্যবহার করে ডেটা প্রেরণ করা হয়। এটি সহজ ডেটা প্রোটোকল পরিচালনা করার জন্য কার্যকর পদ্ধতি।

৩. চ্যাট এবং মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন: এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন চ্যাট এবং মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনে কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হয়, কারণ ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন সময়ে মেসেজ পাঠায় এবং গ্রহণ করে। এই পদ্ধতিতে মেসেজগুলো পাঠানো এবং গ্রহণ করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সিঙ্ক্রোনাইজেশনের প্রয়োজন নেই।

আরো পড়ুনঃ বাস টপোলজি কি?

এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের সুবিধা

১. সহজ এবং সাশ্রয়ী: এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন পদ্ধতি সহজ এবং সাশ্রয়ী। এটি বাস্তবায়ন এবং পরিচালনা করা তুলনামূলকভাবে সহজ। প্রেরক এবং গ্রহণকারীর মধ্যে সিঙ্ক্রোনাইজেশন করার প্রয়োজন না থাকায় এর জটিলতা কম।

২. স্বাধীন ডেটা ট্রান্সফার: এই পদ্ধতিতে প্রেরক এবং গ্রহণকারীকে একই সময়ে কাজ করতে হয় না। তারা নিজেদের মতো করে ডেটা পাঠাতে এবং গ্রহণ করতে পারে। এটি ডেটা প্রেরণকে আরও স্বাধীন এবং সহজ করে তোলে।

৩. ছোট ডেটার জন্য কার্যকর: ছোট ডেটা প্যাকেট বা ফ্রেম প্রেরণের জন্য এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন উপযুক্ত। এটি সিরিয়াল পোর্ট যোগাযোগের মতো পরিস্থিতিতে কার্যকর, যেখানে বড় ডেটা প্যাকেটের প্রয়োজন নেই।

এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের অসুবিধা

১. কম কার্যক্ষমতা: ডেটা প্রেরণের সময় প্রতিটি প্যাকেটের জন্য স্টার্ট এবং স্টপ বিট ব্যবহৃত হয়, যা কার্যক্ষমতা কিছুটা হ্রাস করে। এই বিটগুলো প্রয়োজনীয় নয় কিন্তু তবুও সংযোগের জন্য প্রয়োজন হয়।

২. বড় ডেটার জন্য উপযুক্ত নয়: এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বড় ডেটা প্যাকেট প্রেরণের জন্য উপযুক্ত নয়, কারণ এতে স্টার্ট এবং স্টপ বিটের ব্যবহারের কারণে ব্যান্ডউইথের অপচয় হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ টেলিমেডিসিন কী এবং এর ব্যবহার

উপসংহার: এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে প্রেরক এবং গ্রহণকারী সিঙ্ক্রোনাইজেশন ছাড়াই ডেটা প্রেরণ করতে পারে। এটি ছোট ডেটা প্যাকেট প্রেরণ এবং অনিয়মিত যোগাযোগের জন্য কার্যকর, যেমন সিরিয়াল পোর্ট, চ্যাট অ্যাপ্লিকেশন, ইমেইল সিস্টেম ইত্যাদি। তবে বড় ডেটা প্রেরণের ক্ষেত্রে এটি তুলনামূলকভাবে কম কার্যকর এবং এর কার্যক্ষমতা কিছুটা কম।

Riya Akter
Riya Akter
Articles: 59