ডেসিমেল সংখ্যাকে বাইনারি, অক্টাল এবং হেক্সাডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর

ডেসিমেল সংখ্যাকে বাইনারি, অক্টাল এবং হেক্সাডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর

ডেসিমেল (Decimal) সংখ্যা পদ্ধতি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সংখ্যা পদ্ধতি, যেখানে সংখ্যা প্রকাশের জন্য ভিত্তি (base) হিসেবে ১০ ব্যবহার করা হয়। বাইনারি (Binary), অক্টাল (Octal), এবং হেক্সাডেসিমেল (Hexadecimal) পদ্ধতিগুলো যথাক্রমে ২, ৮ এবং ১৬ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি। কম্পিউটার সিস্টেমে কাজ করার সময় প্রায়ই ডেসিমেল সংখ্যাকে এই তিনটি পদ্ধতিতে রূপান্তর করতে হয়।

এখানে আমরা দেখব কীভাবে ডেসিমেল সংখ্যাকে বাইনারি, অক্টাল, এবং হেক্সাডেসিমেল পদ্ধতিতে রূপান্তর করা যায়।

১. ডেসিমেল থেকে বাইনারি রূপান্তর: বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি হলো ২ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, যেখানে শুধুমাত্র দুটি সংখ্যা ব্যবহৃত হয়: ০ এবং ১।

আরো পড়ুনঃ ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের প্রভাব আলোচনা কর।  

রূপান্তরের পদ্ধতি:

ডেসিমেল সংখ্যাকে বাইনারিতে রূপান্তর করার জন্য, সংখ্যাটিকে ২ দিয়ে ভাগ করতে হয় এবং প্রতিটি ভাগের ভাগশেষ (remainder) সংগ্রহ করতে হয়। যখন ভাগফল শূন্যে পৌঁছাবে, তখন সংগৃহীত ভাগশেষগুলোকে উল্টোদিকে সাজালে বাইনারি সংখ্যা পাওয়া যায়।

উদাহরণ:

ডেসিমেল সংখ্যা: ২৫

রূপান্তর প্রক্রিয়া:

ধাপভাগফলভাগশেষ
২৫ ÷ ২১২
১২ ÷ ২
৬ ÷ ২
৩ ÷ ২
১ ÷ ২

এখন ভাগশেষগুলোকে উল্টো করে সাজালে বাইনারি সংখ্যা হবে: ১১০০১

সুতরাং, ২৫ (ডেসিমেল) = ১১০০১ (বাইনারি)।

২. ডেসিমেল থেকে অক্টাল রূপান্তর

অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি হলো ৮ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, যেখানে ০ থেকে ৭ পর্যন্ত সংখ্যা ব্যবহার করা হয়।

রূপান্তরের পদ্ধতি:

ডেসিমেল সংখ্যাকে অক্টালে রূপান্তর করার জন্য, সংখ্যা ৮ দিয়ে ভাগ করতে হয় এবং প্রতিটি ভাগের ভাগশেষ সংগ্রহ করতে হয়। যখন ভাগফল শূন্যে পৌঁছায়, তখন সংগৃহীত ভাগশেষগুলোকে উল্টো করে সাজালে অক্টাল সংখ্যা পাওয়া যায়।

উদাহরণ:

ডেসিমেল সংখ্যা: ২৫

রূপান্তর প্রক্রিয়া:

ধাপভাগফলভাগশেষ
২৫ ÷ ৮
৩ ÷ ৮

এখন ভাগশেষগুলোকে উল্টো করে সাজালে অক্টাল সংখ্যা হবে: ৩১

সুতরাং, ২৫ (ডেসিমেল) = ৩১ (অক্টাল)।

৩. ডেসিমেল থেকে হেক্সাডেসিমেল রূপান্তর

হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি হলো ১৬ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, যেখানে ০ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা এবং A থেকে F পর্যন্ত বর্ণ ব্যবহার করা হয়। এখানে A = ১০, B = ১১, C = ১২, D = ১৩, E = ১৪, এবং F = ১৫।

রূপান্তরের পদ্ধতি:

ডেসিমেল সংখ্যাকে হেক্সাডেসিমেলে রূপান্তর করার জন্য, সংখ্যা ১৬ দিয়ে ভাগ করতে হয় এবং প্রতিটি ভাগের ভাগশেষ সংগ্রহ করতে হয়। ভাগফল শূন্যে পৌঁছালে, সংগৃহীত ভাগশেষগুলোকে উল্টো করে সাজালে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পাওয়া যায়।

উদাহরণ:

ডেসিমেল সংখ্যা: ২৫

রূপান্তর প্রক্রিয়া:

ধাপভাগফলভাগশেষ
২৫ ÷ ১৬
১ ÷ ১৬

এখন ভাগশেষগুলোকে উল্টো করে সাজালে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা হবে: ১৯

সুতরাং, ২৫ (ডেসিমেল) = ১৯ (হেক্সাডেসিমেল)।

অন্যান্য উদাহরণ

উদাহরণ ১: ডেসিমেল সংখ্যা ৬৫৫ কে বাইনারি, অক্টাল, এবং হেক্সাডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর করা।

১. ডেসিমেল থেকে বাইনারি:

৬৫৫ ÷ ২ করে ভাগশেষ সংগ্রহ করে নিচের টেবিলটি তৈরি করি:

ধাপভাগফলভাগশেষ
৬৫৫ ÷ ২৩২৭
৩২৭ ÷ ২১৬৩
১৬৩ ÷ ২৮১
৮১ ÷ ২৪০
৪০ ÷ ২২০
২০ ÷ ২১০
১০ ÷ ২
৫ ÷ ২
২ ÷ ২
১ ÷ ২

আরো পড়ুনঃ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরগুলি

উল্টো করে সাজালে: ১০১০০০১১১১

সুতরাং, ৬৫৫ (ডেসিমেল) = ১০১০০০১১১১ (বাইনারি)।

২. ডেসিমেল থেকে অক্টাল:

৬৫৫ ÷ ৮ করে ভাগশেষ সংগ্রহ করি:

ধাপভাগফলভাগশেষ
৬৫৫ ÷ ৮৮১
৮১ ÷ ৮১০
১০ ÷ ৮
১ ÷ ৮

উল্টো করে সাজালে: ১২১৭

সুতরাং, ৬৫৫ (ডেসিমেল) = ১২১৭ (অক্টাল)।

৩. ডেসিমেল থেকে হেক্সাডেসিমেল:

৬৫৫ ÷ ১৬ করে ভাগশেষ সংগ্রহ করি:

ধাপভাগফলভাগশেষ
৬৫৫ ÷ ১৬৪০১৫ (F)
৪০ ÷ ১৬
২ ÷ ১৬

উল্টো করে সাজালে: ২৮F

সুতরাং, ৬৫৫ (ডেসিমেল) = ২৮F (হেক্সাডেসিমেল)।

আরো পড়ুনঃ সমাজকর্ম পরিচিতি বিগত সালের কোশ্চেন 

উপসংহার: ডেসিমেল সংখ্যাকে বাইনারি, অক্টাল, এবং হেক্সাডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর করা অত্যন্ত সহজ, যদি আমরা ধাপে ধাপে বিভাজন প্রক্রিয়া অনুসরণ করি। প্রতিটি সংখ্যা পদ্ধতির নিজস্ব ব্যবহার ও প্রয়োজন রয়েছে। বাইনারি পদ্ধতি ডিজিটাল কম্পিউটিংয়ে ব্যবহৃত হয়, অক্টাল সহজ গণনার জন্য, আর হেক্সাডেসিমেল বৃহৎ বাইনারি সংখ্যাকে ছোট আকারে প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হয়।

Riya Akter
Riya Akter
Articles: 59