আয়নিক ও সমযোজী বন্ধন কাকে বলে ?
আয়নিক বন্ধন হলো সেই রাসায়নিক বন্ধন যা ইলেকট্রনের সম্পূর্ণ স্থানান্তরের মাধ্যমে গঠিত হয়, যেখানে একটি পরমাণু অন্য পরমাণুর কাছে ইলেকট্রন দিয়ে ধনাত্মক আয়ন (cation) এবং গ্রহনকারী পরমাণু ঋণাত্মক আয়ন (anion) তৈরি করে। এই ধরণের বন্ধন সাধারণত ধাতু এবং অ-ধাতুর মধ্যে ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) এ সোডিয়াম ইলেকট্রন দান করে ধনাত্মক হয়ে যায় এবং ক্লোরিন ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক হয়ে যায়, ফলে আয়নিক বন্ধন গঠিত হয়।
সমযোজী বন্ধন (কভালেন্ট বন্ধন) হলো সেই রাসায়নিক বন্ধন যেখানে দুটি বা ততোধিক পরমাণু ইলেকট্রন ভাগাভাগি করে নতুন অণু তৈরি করে। এটি সাধারণত অ-ধাতু পরমাণুর মধ্যে ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, জল (H₂O) বা অক্সিজেন (O₂) অণুতে হাইড্রোজেন বা অক্সিজেন পরমাণুগুলো ইলেকট্রন ভাগাভাগি করে সমযোজী বন্ধন তৈরি করে।
মূল বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পার্থক্য:
-
আয়নিক বন্ধনে ইলেকট্রন সম্পূর্ণ স্থানান্তরিত হয়, সমযোজী বন্ধনে ইলেকট্রন ভাগাভাগি হয়।
-
আয়নিক যৌগ সাধারণত দৃঢ় কঠিন হয় এবং উচ্চ গলনবিন্দু থাকে। সমযোজী যৌগ সাধারণত গ্যাস, তরল বা নরম কঠিন হয় এবং গলনবিন্দু কম।
-
আয়নিক যৌগ পানি বা দ্রাবকতে দ্রবণীয় এবং বৈদ্যুতিক চার্জ পরিবাহক হতে পারে। সমযোজী যৌগ সাধারণত অদ্রবণীয় এবং অ-পরিবাহক।
| ধরন | গঠন | উদাহরণ | বৈশিষ্ট্য |
|---|---|---|---|
| আয়নিক বন্ধন | ইলেকট্রন সম্পূর্ণ স্থানান্তর | NaCl, MgO | শক্ত, উচ্চ গলনবিন্দু, জলীয় দ্রাবণে পরিবাহক |
| সমযোজী বন্ধন | ইলেকট্রন ভাগাভাগি | H₂O, O₂, CO₂ | সাধারণত গ্যাস/তরল, কম গলনবিন্দু, অ-পরিবাহক |
আয়নিক ও সমযোজী বন্ধন দুটি মৌলিক রাসায়নিক বন্ধনের ধরন। আয়নিক বন্ধন শক্তিশালী ইলেকট্রনের স্থানান্তরের মাধ্যমে গঠিত এবং মূলত ধাতু-অধাতু যৌগে দেখা যায়, যেখানে সমযোজী বন্ধন ইলেকট্রন ভাগাভাগির মাধ্যমে গঠিত এবং মূলত অ-ধাতু পরমাণুর মধ্যে ঘটে। এই দুই বন্ধন রাসায়নিক যৌগের গঠন, বৈশিষ্ট্য ও আচরণ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।