শর্করা কাকে বলে?
শর্করা হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ জৈব অণু যা প্রধানত কার্বোহাইড্রেট শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত এবং এটি প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রধান শক্তি সরবরাহকারী উৎস। সাধারণত এটি স্বাদে মিষ্টি এবং পানি ও অন্যান্য দ্রাবক জলে সহজে দ্রবণীয়। শর্করা উদ্ভিদে মূলত শক্তি সংরক্ষণ ও পরিবহনের কাজ করে, যেমন গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ ইত্যাদি। মানবদেহে শর্করা খাদ্য থেকে প্রাপ্ত শক্তি প্রদান করে এবং বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস, পেশী সঞ্চালন, মস্তিষ্কের কার্যকলাপ ইত্যাদিতে অপরিহার্য।
শর্করার মূল বৈশিষ্ট্য হলো এটি কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত, সাধারণত সূত্রে প্রকাশ করা হয়। এটি বিভিন্ন আকারে থাকতে পারে: একক চিনি বা মোনোস্যাকারাইড (যেমন গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ), দুইটি চিনি বা ডাইস্যাকারাইড (যেমন সুক্রোজ, ল্যাকটোজ) এবং বহু চিনি বা পলিস্যাকারাইড (যেমন স্টার্চ, সেলুলোজ, গ্লাইকোজেন)। উদ্ভিদ ও প্রাণীর পুষ্টি, শক্তি সংরক্ষণ এবং কাঠামোগত উপাদান হিসেবে শর্করা অপরিহার্য।
শর্করার প্রধান বৈশিষ্ট্য:
-
স্বাদ: সাধারণত মিষ্টি।
-
উৎপাদন: উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়।
-
শক্তি প্রদান: শরীরের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপের জন্য অবিলম্বে শক্তি সরবরাহ করে।
-
সংরক্ষণ: উদ্ভিদ ও প্রাণীর কোষে স্টার্চ বা গ্লাইকোজেন আকারে শক্তি সংরক্ষণ।
-
ধরন: মোনোস্যাকারাইড, ডাইস্যাকারাইড, পলিস্যাকারাইড।
-
রাসায়নিক গঠন: সাধারণত সূত্র অনুযায়ী।
টেবিল আকারে সংক্ষিপ্ত তথ্য:
| বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
|---|---|
| সংজ্ঞা | কার্বোহাইড্রেট শ্রেণীর অণু যা শক্তি সরবরাহ করে |
| মূল উৎস | উদ্ভিদ: সালোকসংশ্লেষণ, প্রাণী: খাদ্য |
| রাসায়নিক গঠন | |
| ধরন | মোনোস্যাকারাইড, ডাইস্যাকারাইড, পলিস্যাকারাইড |
| উদাহরণ | গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ, স্টার্চ, সেলুলোজ |
| ব্যবহার | শক্তি সরবরাহ, কোষীয় সংরক্ষণ, কাঠামোগত উপাদান |
শর্করা হলো জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য শক্তির উৎস ও কাঠামোগত উপাদান, যা উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়েরই কোষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি সরাসরি শক্তি প্রদান করে, কোষে শক্তি সংরক্ষণে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় অবদান রাখে। তাই শর্করা শুধু খাদ্যগত নয়, জীববিজ্ঞানের মূল কাঠামোর অংশ হিসেবেও বিবেচিত হয়।