রঙ এবং রং-এর মধ্যে শুদ্ধ বানান কোনটি?
“রং” শব্দটিই বাংলা ভাষার শুদ্ধ ও প্রমিত বানান, কারণ বাংলা একাডেমির বানান নির্দেশিকা অনুযায়ী শব্দের শেষে “ং” ব্যবহার করা হয়, “ঙ” নয়। যদিও অনেক সময় উচ্চারণে শব্দটি “রঙ” এর মতো শোনায়, কিন্তু বানান এবং প্রমিত লেখা অনুযায়ী শেষের অক্ষর হিসেবে “ং” ব্যবহার করা সঠিক। “রং” শব্দটি সাধারণত রঙিন বস্তু, আলোক প্রতিফলন বা বস্তুর স্বভাবের রঙ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, যেমন কাপড়ের রঙ, ফুলের রঙ ইত্যাদি।
বাংলা ভাষার বানান নিয়ম ও প্রমিত লেখার ইতিহাস থেকে দেখা যায়, সংস্কৃত শব্দ “रङ्ग (raṅga)” থেকে “রং” শব্দটি উদ্ভূত হলেও, বাংলা উচ্চারণ ও বানান নিয়ম অনুযায়ী শব্দশেষে ং অক্ষরই ব্যবহার হয়। এ কারণে “রং” শব্দটি সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত শুদ্ধ রূপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
-
শব্দের বানান: রং
-
অশুদ্ধ বা অপ্রমিত রূপ: রঙ
-
ব্যবহার: রঙিন বস্তু, আলোক প্রতিফলন, জীবজন্তু বা উদ্ভিদের রঙ প্রকাশে।
-
উদাহরণ:
-
আমার প্রিয় ফুলের রং লাল।
-
শিশুর জামার রং সুন্দর।
-
এই চশমার লেন্সের রং নীল।
-
টেবিলের মাধ্যমে তুলনা করা যায়—
| দিক | শুদ্ধ রূপ | অশুদ্ধ রূপ | মন্তব্য |
|---|---|---|---|
| বানান | রং | রঙ | শব্দের শেষে “ং” ব্যবহার প্রমিত, “ঙ” অশুদ্ধ |
| উচ্চারণ | raṅ | raṅ | উচ্চারণ প্রায় একই, তবে বানান ভিন্ন |
| ব্যবহার | রঙিন বস্তু, আলোক প্রতিফলন | ভুল বানান, লেখায় অগ্রহণযোগ্য | একাডেমিক ও সাহিত্যিক কাজে শুদ্ধ রূপ ব্যবহার বাধ্যতামূলক |
বাংলা ভাষায় শব্দের বানান নির্ধারণে দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ— উচ্চারণ এবং ঐতিহাসিক সূত্র। “রং” শব্দটির ক্ষেত্রে উচ্চারণে সমাপ্ত ধ্বনি ঙ শোনালেও বানান নিয়ম অনুসারে শেষ অক্ষর ং লিখতে হয়। এটি বাংলা একাডেমি, শিক্ষাবোর্ড ও সরকারি প্রকাশিত গ্রন্থসমূহে সর্বজনীনভাবে প্রযোজ্য। এছাড়া, সাহিত্যিক, সংবাদপত্র ও শিক্ষামূলক প্রকাশনাতেও “রং” শব্দটি প্রমিত হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সুতরাং, শুদ্ধ বানান হলো “রং” এবং এটি বাংলা ভাষার প্রমিত, স্বীকৃত ও একাডেমিকভাবে গ্রহণযোগ্য রূপ। “রঙ” শব্দটি উচ্চারণগতভাবে বিভ্রান্তিকর এবং লিখন বা প্রকাশনায় ব্যবহার উপযুক্ত নয়। ভবিষ্যতের লেখালিখিতে, শিক্ষা ও সাহিত্যিক কাজে “রং” বানানই প্রাধান্য দেওয়া উচিত।