"Straightening of lumbar spine due to muscle spasm"-এর মানে কী?
“Straightening of lumbar spine due to muscle spasm” বলতে বোঝানো হয় — কোমরের মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বাঁক (যাকে lumbar lordosis বলা হয়) পেশির খিঁচুনি বা অতিরিক্ত সংকোচনের কারণে সোজা হয়ে যাওয়া। মানুষের মেরুদণ্ড প্রাকৃতিকভাবে বাঁকা থাকে যাতে শরীরের ওজন সঠিকভাবে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে। বিশেষ করে কোমরের অংশে একটি সামনের দিকে বাঁক (inward curve) থাকে, যা স্বাভাবিক ভঙ্গি এবং চলাচলের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু যখন কোনো কারণে muscle spasm বা পেশির খিঁচুনি ঘটে, তখন সেই পেশিগুলো শক্ত হয়ে যায় এবং তারা মেরুদণ্ডের ওপর অতিরিক্ত টান প্রয়োগ করে। এর ফলে স্বাভাবিক বাঁক হারিয়ে মেরুদণ্ড অস্বাভাবিকভাবে সোজা (straightened) হয়ে যায়, যা এক্স-রে রিপোর্টে “Straightening of lumbar spine due to muscle spasm” হিসেবে দেখা যায়।
এই অবস্থাটি সাধারণত অস্থায়ী হলেও এর মাধ্যমে শরীর একটি রক্ষামূলক প্রতিক্রিয়া (protective mechanism) দেখায়—অর্থাৎ শরীর ব্যথা বা ইনজুরির কারণে পেশিগুলো শক্ত করে ফেলে যাতে নড়াচড়া কমে যায় এবং আরও ক্ষতি না হয়।
এখন দেখা যাক এর কারণ, উপসর্গ, এবং প্রভাবগুলো কীভাবে দেখা দেয়—
-
দীর্ঘ সময় ভুল ভঙ্গিতে বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা: যেমন দীর্ঘক্ষণ চেয়ারে হেলান ছাড়া বসে থাকা, কম্পিউটারের সামনে কাজ করা বা মোবাইল ব্যবহারে ঝুঁকে থাকা।
-
মেরুদণ্ডে আঘাত বা ইনজুরি: হঠাৎ ভারি কিছু তোলা, পড়ে যাওয়া, বা দুর্ঘটনায় পিঠে আঘাত লাগা পেশিতে খিঁচুনি সৃষ্টি করতে পারে।
-
পেশির অতিরিক্ত ব্যবহার বা টান: অতিরিক্ত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম পেশির উপর চাপ সৃষ্টি করে, যা স্প্যাজম ঘটায়।
-
স্লিপ ডিস্ক বা ডিস্ক হারনিয়েশন: মেরুদণ্ডের ডিস্ক স্থানচ্যুত হলে তা স্নায়ুতে চাপ দেয়, যার প্রতিক্রিয়ায় আশেপাশের পেশিগুলো শক্ত হয়ে যায়।
-
মানসিক চাপ বা স্ট্রেস: অনেক সময় মানসিক টেনশনও শরীরের পেশিকে প্রভাবিত করে, ফলে মেরুদণ্ড শক্ত হয়ে যায়।
এই অবস্থার ফলে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে—
-
কোমরে ব্যথা বা জ্বালাভাব
-
পিঠ শক্ত হয়ে যাওয়া
-
হাঁটা, দাঁড়ানো বা বসার সময় অস্বস্তি
-
নড়াচড়া করলে ব্যথা বেড়ে যাওয়া
-
কখনো কখনো পায়ের দিকেও ব্যথা ছড়িয়ে পড়া
চিকিৎসা ও প্রতিকার:
এই সমস্যা সাধারণত অল্প সময়ের মধ্যে সেরে যায় যদি সঠিক যত্ন নেওয়া হয়।
-
বিশ্রাম: কয়েকদিনের বিশ্রাম পেশির খিঁচুনি কমাতে সাহায্য করে।
-
গরম বা ঠান্ডা সেঁক: ব্যথা ও শক্তভাব দূর করতে কার্যকর।
-
পেশি শিথিলকারী ওষুধ (Muscle relaxant): চিকিৎসকের পরামর্শে নেওয়া যায়।
-
ফিজিওথেরাপি ও হালকা স্ট্রেচিং: ধীরে ধীরে পেশিগুলো নমনীয় করে তোলে।
-
সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা: বসা, দাঁড়ানো বা হাঁটার সময় পিঠ সোজা ও ভারসাম্যপূর্ণ রাখা জরুরি।
সারসংক্ষেপে, এই বাক্যটির অর্থ হলো — কোমরের পেশি অতিরিক্ত সংকুচিত হয়ে মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বাঁক (lumbar curve) সোজা করে ফেলে। এটি মূলত পেশির টান ও সুরক্ষামূলক প্রতিক্রিয়ার কারণে ঘটে, যার ফলে পিঠে ব্যথা, কাঠিন্য ও অস্বস্তি দেখা দেয়। যথাযথ বিশ্রাম, ওষুধ, ও ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে এই অবস্থা সাধারণত সম্পূর্ণভাবে সেরে যায় এবং মেরুদণ্ড আবার স্বাভাবিক বাঁক ফিরে পায়।