পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবক কাকে বলে?
পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবক হলো একটি পদার্থের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রে পোলারাইজেশন বা ধ্রুবণ ক্ষমতার পরিমাপ, যা শূন্যস্থান বা মুক্ত স্থান (Vacuum) এর তুলনায় সেই পদার্থের বৈদ্যুতিক প্রভাবকে নির্দেশ করে।
বিদ্যুত্চুম্বকীয় বিজ্ঞানে পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবককে সাধারণত Dielectric Constant বা Relative Permittivity বলা হয়। এটি একটি সংখ্যা যা প্রকাশ করে কোনো পদার্থের মধ্যে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র প্রয়োগ করলে কতটুকু চার্জ সংরক্ষণ বা শক্তি সঞ্চয় করতে সক্ষম। সহজভাবে বলা যায়, শূন্যস্থান (Vacuum) যেখানে সর্বনিম্ন বৈদ্যুতিক প্রতিরোধ থাকে, সেখানে একটি পদার্থের বৈদ্যুতিক প্রতিক্রিয়ার মাত্রা শূন্যস্থানীয় মানের তুলনায় কত গুণ বেশি, সেটাই পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবক নির্দেশ করে।
পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবকের বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার:
-
এটি পদার্থের বৈদ্যুতিক পোলারাইজেশন ক্ষমতা নির্দেশ করে।
-
শূন্যস্থানকে ধ্রুবক ১ ধরা হয়, অর্থাৎ vacuum-এর তুলনায় অন্যান্য পদার্থের ধ্রুবক বেশি।
-
ধ্রুবক বেশি মানে পদার্থ শক্তিশালীভাবে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রকে কমিয়ে দেয় বা চার্জ সংরক্ষণে সক্ষম।
-
পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবক বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রে, যেমন কন্ডেনসার বা ক্যাপাসিটরে, শক্তি সঞ্চয় ও বৈদ্যুতিক ফ্লাক্স নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়।
-
পদার্থের রসায়নিক গঠন এবং তাপমাত্রা পরিবর্তনের সঙ্গে এটি পরিবর্তিত হতে পারে।
পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবকের উদাহরণ:
| পদার্থ | পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবক (Dielectric Constant) |
|---|---|
| শূন্যস্থান (Vacuum) | 1 |
| জল (Water) | 80 (প্রায়) |
| বায়ু (Air) | 1.0006 |
| কাচ (Glass) | 5–10 |
| তেল (Oil) | 2–4 |
পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবক একটি পদার্থের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রে পোলারাইজেশন ও শক্তি সঞ্চয় ক্ষমতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শূন্যস্থান বা মুক্ত স্থানের তুলনায় পদার্থের বৈদ্যুতিক প্রভাবকে পরিমাপ করে। বৈদ্যুতিক যন্ত্র, ক্যাপাসিটার ও বৈদ্যুতিক গবেষণায় এর গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ এটি পদার্থের বৈদ্যুতিক প্রতিক্রিয়ার মান এবং ব্যবহারিক প্রয়োগ নির্ধারণে সহায়তা করে।