পরিবাহী, অপরিবাহী এবং অর্ধ পরিবাহী পদার্থ কাকে বলে?
পরিবাহী, অপরিবাহী এবং অর্ধপরিবাহী পদার্থ হলো পদার্থের বৈদ্যুতিক চালকের ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে তাদের শ্রেণীবিন্যাস। পদার্থের বৈদ্যুতিক গুণাবলী বিভিন্ন কারণের ওপর নির্ভর করে যেমন তার আণবিক গঠন, ব্যান্ড গ্যাপ (Band Gap) এবং ইলেকট্রনের মুক্ততার সহজতা। বৈদ্যুতিক প্রকৌশল এবং পদার্থবিজ্ঞানে এই ধরনের শ্রেণীবিন্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদেরকে কোন পদার্থ বৈদ্যুতিক সঞ্চালনে সক্ষম এবং কোনটি নয় তা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।
বিস্তারিত ব্যাখ্যা:
-
পরিবাহী পদার্থ (Conductors):
-
পরিবাহী পদার্থ এমন পদার্থ যা বিদ্যুৎ সহজেই পরিবহন করতে সক্ষম।
-
এর মধ্যে ইলেকট্রনগুলো খুব সহজে গতিশীল হয়।
-
সাধারণ উদাহরণ: তামা (Copper), রূপা (Silver), অ্যালুমিনিয়াম (Aluminum)।
-
বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, তার এবং কেবল তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
-
-
অপরিবাহী পদার্থ (Insulators):
-
অপরিবাহী পদার্থ বিদ্যুৎ সঞ্চালনে সক্ষম নয় বা খুব সীমিতভাবে সক্ষম।
-
এ ধরনের পদার্থে ইলেকট্রনগুলো খুব কঠিনভাবে বাধ্য থাকে।
-
সাধারণ উদাহরণ: কাচ (Glass), রাবার (Rubber), প্লাস্টিক (Plastic)।
-
বিদ্যুৎ সংযোগের সুরক্ষার জন্য কভারিং বা আবরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
-
-
অর্ধপরিবাহী পদার্থ (Semiconductors):
-
অর্ধপরিবাহী পদার্থের বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা পরিবাহক এবং অপরিবাহকের মধ্যে থাকে।
-
তাপমাত্রা, আলোক বা অণুজীবের সংযোগের মাধ্যমে এদের পরিবাহিতা বাড়ানো বা কমানো যায়।
-
সাধারণ উদাহরণ: সিলিকন (Silicon), জার্মেনিয়াম (Germanium)।
-
আধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্র, কম্পিউটার চিপ, ট্রানজিস্টর ও ডায়োড তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
-
টেবিল আকারে পার্থক্য:
| পদার্থের ধরন | বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা | উদাহরণ | ব্যবহার |
|---|---|---|---|
| পরিবাহী (Conductor) | উচ্চ | তামা, রূপা, অ্যালুমিনিয়াম | তার, কেবল, বৈদ্যুতিক যন্ত্র |
| অপরিবাহী (Insulator) | নিম্ন বা খুব কম | কাচ, রাবার, প্লাস্টিক | সুরক্ষা আবরণ, কভারিং |
| অর্ধপরিবাহী (Semiconductor) | মধ্যম | সিলিকন, জার্মেনিয়াম | ট্রানজিস্টর, ডায়োড, ইলেকট্রনিক চিপ |
উপসংহার: পদার্থকে তার বৈদ্যুতিক পরিবাহিতার ভিত্তিতে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। পরিবাহী পদার্থ সহজে বিদ্যুৎ পরিবহন করে, অপরিবাহী পদার্থ তা প্রায় পরিবহন করতে পারে না, আর অর্ধপরিবাহী পদার্থে পরিবাহিতা নিয়ন্ত্রণযোগ্য। এই শ্রেণীবিন্যাস ইলেকট্রনিক্স এবং বিদ্যুৎ প্রকৌশলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।