দ্রব কাকে বলে?

দ্রব এমন এক পদার্থ যা অন্য কোনো পদার্থে দ্রবীভূত হয়ে একজাতীয় মিশ্রণ তৈরি করে। এটি সাধারণত কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকতে পারে, তবে সবসময়ই দ্রাবকের সঙ্গে মিশে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। নিচে দ্রব সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো সহজ ভাষায় তুলে ধরা হলো—
সংজ্ঞা: যে পদার্থ দ্রাবকে দ্রবীভূত হয়ে একজাতীয় দ্রবণ তৈরি করে, তাকে দ্রব বলে। উদাহরণ হিসেবে চিনি বা লবণকে পানিতে মেশালে তারা দ্রব হিসেবে কাজ করে।
দ্রবণের ভূমিকা: দ্রব হলো দ্রবণের অন্যতম প্রধান উপাদান। এটি দ্রাবকের সঙ্গে বিক্রিয়া না করে মিশে যায় এবং একটি স্বচ্ছ ও সমজাতীয় মিশ্রণ তৈরি করে।
দ্রবের প্রকারভেদ:
- কঠিন দ্রব: যেমন—লবণ বা চিনি।
- তরল দ্রব: যেমন—অ্যালকোহল বা গ্লিসারিন।
- গ্যাসীয় দ্রব: যেমন—কার্বন ডাই–অক্সাইড (যা সোডা পানিতে মেশানো হয়)।
দ্রবণ গঠনের প্রক্রিয়া: দ্রব ও দ্রাবক একসঙ্গে মিশে সমজাতীয় মিশ্রণ তৈরি করে। দ্রবের কণাগুলো দ্রাবকের অণুগুলোর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং একটি স্বচ্ছ দ্রবণ তৈরি করে।
দ্রবের উদাহরণ:
-
-
লবণ-পানির দ্রবণে লবণ হলো দ্রব।
-
চিনির দ্রবণে চিনি হলো দ্রব।
-
লেবুর শরবতে চিনি ও লেবুর রস দুটোই দ্রব হিসেবে কাজ করে।
-
দ্রবের গুরুত্ব: দৈনন্দিন জীবনে দ্রবের ভূমিকা বিশাল। ওষুধ তৈরি, খাদ্য প্রস্তুত, কৃষিকাজ, এমনকি রাসায়নিক গবেষণাতেও দ্রবের ব্যবহার অপরিহার্য।
দ্রব ও দ্রাবকের পার্থক্য:
-
-
দ্রব হলো যা মিশে যায়।
-
দ্রাবক হলো যে পদার্থে মিশে যায়।
যেমন—লবণ-পানির মিশ্রণে লবণ দ্রব এবং পানি দ্রাবক।
-
দ্রবের দ্রবণীয়তা: সব দ্রব সমানভাবে দ্রবীভূত হয় না। কারও দ্রবণীয়তা বেশি, কারও কম। যেমন—চিনি পানিতে সহজে দ্রবীভূত হয়, কিন্তু তেল হয় না।
তাপমাত্রা ও চাপের প্রভাব: তাপমাত্রা ও চাপ দ্রবের দ্রবীভবন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাধারণত তাপমাত্রা বাড়ালে কঠিন দ্রব সহজে দ্রবীভূত হয়।
বাস্তব জীবনের ব্যবহার: রান্নায়, পানীয় তৈরিতে, চিকিৎসায়, এমনকি শিল্পক্ষেত্রে দ্রবের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন—ওষুধে দ্রব হিসেবে গ্লুকোজ ব্যবহৃত হয়, পানীয়তে কার্বন ডাই–অক্সাইড দ্রব হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
দ্রব তাই এমন এক পদার্থ যা অন্য পদার্থের সঙ্গে মিশে একজাতীয় দ্রবণ গঠনে সাহায্য করে। এটি আমাদের চারপাশে নানাভাবে ব্যবহৃত হয় এবং রসায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা।