ব্যবসায় কী,ব্যবসায় কাকে বলে?

মানবজীবনের প্রয়োজন মেটাতে মানুষ নানা কাজ করে থাকে। কেউ পণ্য উৎপাদন করে, কেউ সেই পণ্য বিক্রি করে, আবার কেউ সেবা প্রদান করে। এই সব কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য যদি হয় লাভ অর্জন, তবে তাকে ব্যবসা বলা হয়।
ব্যবসা শুধু কেনাবেচা নয়, এটি সমাজ ও অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা মানুষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রাষ্ট্রের উন্নয়নেও অবদান রাখে।
ব্যবসার সংজ্ঞা: মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত বিভিন্ন ধরনের উৎপাদন ও বণ্টনসহ সকল বৈধ, ধারাবাহিক ও ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে ব্যবসা বলে।
উৎপাদন ও বণ্টন কার্যক্রম: ব্যবসা শুরু হয় উৎপাদন থেকে এবং শেষ হয় ভোক্তার হাতে পণ্য বা সেবা পৌঁছানোর মাধ্যমে। অর্থাৎ, উৎপাদন, সংরক্ষণ, পরিবহন, বিপণন—সবই ব্যবসার অংশ।
লাভ অর্জনের উদ্দেশ্য: ব্যবসার প্রধান লক্ষ্য মুনাফা অর্জন। তবে এই মুনাফা অর্জনের জন্য ব্যবসায়ীকে বাজার বিশ্লেষণ, পরিকল্পনা ও সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কাজ করতে হয়।
ঝুঁকির উপস্থিতি: ব্যবসায় সবসময় কিছু না কিছু ঝুঁকি থাকে—যেমন মূল্য ওঠানামা, প্রতিযোগিতা, বাজার পরিবর্তন ইত্যাদি। এই ঝুঁকি সত্ত্বেও ব্যবসায়ী পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যান।
ধারাবাহিকতা: ব্যবসা কোনো এককালীন কাজ নয়। এটি একটি নিয়মিত ও ধারাবাহিক কার্যক্রম। একই ধরনের লেনদেন বারবার ঘটে এবং সময়ের সাথে ব্যবসা বৃদ্ধি পায়।
বৈধতা: বৈধতার নীতি ব্যবসায়ের একটি মৌলিক শর্ত। অবৈধ বা অনৈতিক কর্মকাণ্ড কখনোই প্রকৃত ব্যবসা হিসেবে গণ্য হয় না।
অর্থনৈতিক কার্যক্রম: ব্যবসা এমন একটি অর্থনৈতিক কার্যক্রম যা মানুষের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি অর্থের বিনিময়ে পণ্য ও সেবা সরবরাহ করে। এটি জাতীয় আয় বৃদ্ধি করে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে।
ব্যবসার ধরণ:
-
-
উৎপাদনমূলক ব্যবসা: পণ্য তৈরি বা উৎপাদনের মাধ্যমে লাভ অর্জন।
-
বণ্টনমূলক ব্যবসা: উৎপাদিত পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছে দেওয়া।
-
সেবামূলক ব্যবসা: ব্যাংক, বীমা, পরিবহন ইত্যাদি সেবা প্রদান।
-
-
ব্যবসার গুরুত্ব:
ব্যবসা সমাজে পণ্য ও সেবা সরবরাহ করে, কর্মসংস্থান তৈরি করে, জাতীয় আয় বৃদ্ধি করে এবং মানুষের জীবনমান উন্নত করে।সংক্ষেপে বলা যায়, মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে উৎপাদন, বণ্টন ও সেবা প্রদানের মাধ্যমে বৈধ ও ধারাবাহিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমই ব্যবসা। এটি ব্যক্তি ও রাষ্ট্র—উভয়ের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।