সংকট তাপমাত্রা কী?
সংকট তাপমাত্রা হলো এমন একটি বিশেষ তাপমাত্রা, যার উপরে কোনো পদার্থকে তরল আকারে রূপান্তর করা সম্ভব হয় না, যতই চাপ প্রয়োগ করা হোক। সংকট তাপমাত্রার উপরে পদার্থকে অধিসংকটীয় তরল (Supercritical Fluid) বলা হয়, যা একই সঙ্গে গ্যাস ও তরলের বৈশিষ্ট্য বহন করে। এটি পদার্থের ভৌত ও রসায়নিক বৈশিষ্ট্য বোঝার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং শিল্পপ্রক্রিয়াজাতকরণ, রেফ্রিজারেশন সিস্টেম ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় মূল ভূমিকা রাখে। উদাহরণস্বরূপ, পানির সংকট তাপমাত্রা প্রায় ৩৭৪°C এবং কার্বন ডাই-অক্সাইডের সংকট তাপমাত্রা প্রায় ৩১°C।
সংকট তাপমাত্রা সম্পর্কে বিশদ ব্যাখ্যা:
-
সংকট তাপমাত্রা হলো সেই সীমা যেখানে তরল ও গ্যাসের পার্থক্য লোপ পায়।
-
সংকট তাপমাত্রার নিচে পদার্থকে চাপ প্রয়োগ করে তরল বা গ্যাসে রূপান্তর করা সম্ভব।
-
সংকট তাপমাত্রার উপরে পদার্থ একটি অধিসংকটীয় অবস্থায় থাকে, যা তরল ও গ্যাসের বৈশিষ্ট্য একসাথে প্রদর্শন করে।
-
এটি পদার্থের ঘনত্ব, ভিসকোসিটি এবং গুণগত মান বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
-
বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও শিল্পখাতে, বিশেষ করে গ্যাস তরলীকরণ ও রেফ্রিজারেশনে, সংকট তাপমাত্রার জ্ঞান অপরিহার্য।
প্রধান পদার্থের সংকট তাপমাত্রা এবং চাপের তালিকা:
| পদার্থ | সংকট তাপমাত্রা (°C) | সংকট চাপ (atm) | মন্তব্য |
|---|---|---|---|
| পানি (H₂O) | 374 | 218 | সর্বাধিক পরিচিত তরল-গ্যাস সংকট বিন্দু |
| কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂) | 31 | 73 | ঘরে তাপমাত্রাতেও অধিসংকটীয় অবস্থায় যায় |
| নাইট্রোজেন (N₂) | −147 | 34 | ঠান্ডা পরিবেশে ব্যবহার হয় |
| অক্সিজেন (O₂) | −118 | 50 | শিল্প ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ |
| অ্যামোনিয়া (NH₃) | 132 | 113 | রেফ্রিজারেশনে ব্যবহার হয় |
উপসংহার:
সংকট তাপমাত্রা হলো পদার্থের মৌলিক বৈশিষ্ট্য যা তরল ও গ্যাসের সীমা নির্ধারণ করে। এটি পদার্থবিদ্যা ও তাপগতিবিদ্যায় গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, যা বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং শিল্পপ্রক্রিয়াজাতকরণে অপরিহার্য। সংকট তাপমাত্রার উপরে পদার্থ একটি অধিসংকটীয় অবস্থায় রূপান্তরিত হয়, যা তরল ও গ্যাস—উভয়ের গুণাবলী ধারণ করে এবং বিভিন্ন প্রয়োগে ব্যবহারযোগ্য হয়।