ভিশন এবং মিশন-এর পার্থক্য কী?
ভিশন এবং মিশন — এই দুটি শব্দ সংগঠন, প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার মূল দিকনির্দেশনা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। তবে এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। সংক্ষেপে বলা যায়, ভিশন (Vision) হলো ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বা প্রতিষ্ঠানের “স্বপ্ন”, আর মিশন (Mission) হলো সেই লক্ষ্য অর্জনের “কর্মপরিকল্পনা” বা কার্যপদ্ধতি। অর্থাৎ, ভিশন বলে দেয় প্রতিষ্ঠান কোথায় যেতে চায়, আর মিশন বলে দেয় কীভাবে সেখানে পৌঁছাবে।
ভিশন সাধারণত একটি দীর্ঘমেয়াদি ধারণা—যেখানে কোনো প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যতে নিজেদের কী অবস্থানে দেখতে চায় তা প্রকাশ করে। এটি অনুপ্রেরণাদায়ক ও উচ্চাভিলাষী হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিশন হতে পারে: “দেশের সেরা মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠা।” অন্যদিকে, মিশন হলো সেই ভিশন বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট পথনির্দেশ। যেমন: “গুণগত শিক্ষার প্রসার, দক্ষ শিক্ষক গড়ে তোলা ও আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।”
ভিশন এবং মিশনের পার্থক্য স্পষ্টভাবে বোঝার জন্য নিচের উপাত্তটি দেখা যেতে পারে—
| বিষয় | ভিশন (Vision) | মিশন (Mission) |
|---|---|---|
| সংজ্ঞা | প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ আকাঙ্ক্ষা বা লক্ষ্য | সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য করণীয় কাজের বিবরণ |
| সময়কাল | দীর্ঘমেয়াদি (Future-oriented) | বর্তমান ও নিকট ভবিষ্যৎ (Action-oriented) |
| উদ্দেশ্য | প্রতিষ্ঠান কোথায় পৌঁছাতে চায় তা নির্ধারণ করে | কীভাবে সেখানে পৌঁছানো যাবে তা নির্ধারণ করে |
| প্রকৃতি | অনুপ্রেরণামূলক ও দিকনির্দেশনামূলক | বাস্তবসম্মত ও কার্যকর পরিকল্পনামূলক |
| উদাহরণ | “একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন।” | “গবেষণা, শিক্ষা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনা।” |
ভিশন একটি প্রতিষ্ঠানের “গন্তব্য” নির্ধারণ করে, আর মিশন সেই গন্তব্যে পৌঁছানোর “যাত্রাপথ” নির্দেশ করে। তাই একটি সফল প্রতিষ্ঠান সর্বদা তাদের ভিশন ও মিশনের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখে। ভিশন যদি হয় অনুপ্রেরণার উৎস, তবে মিশন হয় সেই অনুপ্রেরণাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার মাধ্যম।
ফলে বলা যায়, ভিশন হলো “আমরা ভবিষ্যতে কী হতে চাই”, আর মিশন হলো “আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে এখন কী করছি”—এই দুই ধারণা একসঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব, লক্ষ্য ও কৌশলকে স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করে।