স্টক কী?
স্টক একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ধারণা যা সাধারণত একটি কোম্পানির মালিকানার অংশ হিসেবে পরিচিত। স্টক বা শেয়ার, একটি কোম্পানির মূলধনের ক্ষুদ্র অংশের প্রতিনিধিত্ব করে, যার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির মালিকানা লাভ করে। যখন একটি কোম্পানি নতুন স্টক ইস্যু করে, তখন এটি মূলধন সংগ্রহের একটি উপায় হিসেবে কাজ করে, এবং বিনিয়োগকারীরা সেই স্টক কিনে কোম্পানির অংশীদার হয়ে ওঠে। স্টক মূলত দুটি প্রধান ধরনে ভাগ করা যায়: সাধারণ শেয়ার (Common Stock) এবং প্রেফার্ড শেয়ার (Preferred Stock)।
স্টকের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার বিনিয়োগের জন্য মুনাফা অর্জন করতে পারেন, যা কোম্পানির লাভের ভিত্তিতে হয়। সাধারণভাবে, স্টকের মূল্য বাজারের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করে ওঠানামা করে। স্টক শেয়ারহোল্ডারদের কোম্পানির লাভে অংশগ্রহণের অধিকার দেয়, তবে এর সাথে কিছু ঝুঁকিও থাকে। এখন আসুন, স্টকের প্রধান দিকগুলো এক নজরে দেখি:
১. স্টকের ধারণা
-
স্টক হলো একটি কোম্পানির মূলধনের ক্ষুদ্র অংশ, যার মাধ্যমে এক বা একাধিক ব্যক্তির কাছে মালিকানা স্থানান্তরিত হয়। এটি কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের স্বত্বের প্রতিনিধিত্ব করে।
২. স্টক কেনার সুবিধা
-
স্টক কেনার মাধ্যমে একজন বিনিয়োগকারী কোম্পানির লাভের অংশ লাভ করেন। সাধারণভাবে, স্টক একটি প্যাসিভ ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে দেখা হয় যা বিনিয়োগকারীদের ভবিষ্যতে মুনাফা এনে দিতে পারে।
৩. প্রকারভেদ
-
সাধারণ শেয়ার (Common Stock): সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির লাভের অংশ হিসাবে ডিভিডেন্ড পান এবং কোম্পানির বোর্ড সদস্য নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন। তবে, কোম্পানির কোনো সমস্যা হলে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
-
প্রেফার্ড শেয়ার (Preferred Stock): এই ধরনের শেয়ারহোল্ডারদের সাধারণ শেয়ারহোল্ডারের চেয়ে লাভে বেশি অগ্রাধিকার থাকে। তবে, তারা সাধারণ শেয়ারহোল্ডারের মতো ভোটাধিকার পায় না।
৪. বাজারে স্টকের মূল্য
-
স্টকের মূল্য বাজারের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করে ওঠানামা করে। এটি বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হতে পারে, যেমন কোম্পানির লাভের অবস্থা, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, বাজারের প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।
৫. স্টকের ঝুঁকি
-
স্টক বাজারে বিনিয়োগের সাথে কিছু ঝুঁকি জড়িত থাকে। বিশেষ করে, একটি কোম্পানি আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়লে বা লাভে না গেলে, স্টকের মূল্য পড়ে যেতে পারে এবং শেয়ারহোল্ডাররা তাদের বিনিয়োগের একটি অংশ হারাতে পারে।
৬. স্টক এবং কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ
-
যারা স্টক কেনেন, তারা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণের একটি অংশ পান। বিশেষ করে, সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কাছে কোম্পানির শেয়ারভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার থাকে।
৭. স্টকের লাভ
-
শেয়ারহোল্ডাররা দুইভাবে লাভ অর্জন করতে পারেন: প্রথমত, ডিভিডেন্ড পেয়ে, যা কোম্পানি তার লাভ থেকে শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ভাগ করে দেয়; এবং দ্বিতীয়ত, স্টকের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে, যেখানে তারা লাভের জন্য স্টক বিক্রি করতে পারেন।
৮. স্টক বিক্রয় এবং কেনা
-
স্টক মার্কেটে স্টক বিক্রয় ও কেনা হয়। বিনিয়োগকারীরা এই বাজারে তাদের স্টক কিনতে ও বিক্রি করতে পারেন, যেখানে মূলত স্টকের মূল্য নির্ধারণ হয়।
৯. স্টক ইস্যু ও নতুন স্টক
-
যখন কোম্পানি নতুন স্টক ইস্যু করে, তখন এটি মূলধন সংগ্রহের একটি উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিনিয়োগকারীরা নতুন স্টক কিনে কোম্পানির মালিকানায় অংশগ্রহণ করেন।
১০. স্টক এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা
-
স্টকের মূল্য বাজারের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতিনিধিত্ব করে। অর্থনৈতিক মন্দা বা প্রবৃদ্ধির সময় স্টকের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে ওঠানামা করতে পারে।
স্টক বাজার এবং শেয়ারহোল্ডিং সম্পর্কে জানলে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন যে এটি কেবলমাত্র একটি বিনিয়োগের মাধ্যম নয়, বরং একটি ব্যবসার অংশীদার হওয়ার সুযোগও। তবে, বিনিয়োগের সময় স্টক নিয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আপনি ঝুঁকি কমাতে পারেন এবং লাভ অর্জন করতে পারেন।