ঘন এর সূত্র কি?
                        ঘন বা কিউব হলো কোনো ঘনবস্তু বা ঘনাকৃতির আয়তন নির্ণয়ের সূত্র। এটি এমন এক জ্যামিতিক আকৃতি যার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা সমান হয়। সহজভাবে বললে, কোনো বস্তুর তিনটি সমান মাত্রা একত্রে গুণ করলে তার ঘনফল বা আয়তন পাওয়া যায়। নিচে ঘনের সূত্র ও তার সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হলো।
ঘনের সূত্র:
ঘনের আয়তন = বাহ³
অর্থাৎ, V = a³,
যেখানে a হলো ঘনের এক বাহুর দৈর্ঘ্য।
এখন ঘন সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো নিচে তালিকা আকারে দেওয়া হলো—
- 
সংজ্ঞা: ঘন (Cube) হলো এমন একটি ঘনবস্তু যার ছয়টি বাহু সমান দৈর্ঘ্যের বর্গাকার পৃষ্ঠ দ্বারা গঠিত। অর্থাৎ, প্রতিটি বাহু সমান এবং সব কোণ ৯০°।
 - 
বাহুর নাম: ঘনের প্রতিটি দিককে বলা হয় বাহু। সাধারণত ঘনের প্রতিটি বাহু সমান হওয়ায় সূত্রে একটি মাত্র “a” ব্যবহৃত হয়।
 - 
ঘনের আয়তন নির্ণয়ের সূত্র:
আয়তন (V) = a³ = a × a × a
এখানে, যদি ঘনের বাহুর দৈর্ঘ্য ৫ সেন্টিমিটার হয়, তবে ঘনের আয়তন = ৫³ = ১২৫ ঘনসেন্টিমিটার। - 
ঘনের পৃষ্ঠতল ক্ষেত্রফল (Surface Area):
মোট ক্ষেত্রফল = ৬a²
কারণ ঘনের ৬টি সমান বর্গাকার পৃষ্ঠ আছে। - 
ল্যাটারাল সারফেস এরিয়া (পাশের পৃষ্ঠতল ক্ষেত্রফল):
ল্যাটারাল সারফেস এরিয়া = ৪a²
এটি ঘনের পাশের চারটি পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল নির্দেশ করে। - 
ঘনের কর্ণ (Diagonal):
ঘনের কর্ণ (d) নির্ণয়ের সূত্র: d = √3a
এখানে ঘনের কর্ণ বলতে বোঝায় এক কোণ থেকে বিপরীত কোণ পর্যন্ত টানা সরলরেখা। - 
একক: আয়তনের একক হলো ঘন সেন্টিমিটার (cm³), ঘন মিটার (m³), ঘন ডেসিমিটার (dm³) ইত্যাদি।
 - 
ঘনের বৈশিষ্ট্য:
- 
ঘনের সব বাহু সমান।
 - 
সব কোণ সমকোণ (৯০°)।
 - 
ঘনের বিপরীত বাহুগুলো সমান্তরাল।
 - 
এটি একটি নিয়মিত ঘনবস্তু বা Regular Solid।
 
 - 
 - 
বাস্তব জীবনের উদাহরণ:
ঘনের আকৃতির উদাহরণ হলো— বরফের টুকরো, পাশার দানা (dice), উপহারের বাক্স, ছোট ঘন আকৃতির কাঠের ব্লক ইত্যাদি। - 
ঘনের ব্যবহার:
- 
স্থাপত্যে ঘন আকার ব্যবহার করা হয় কক্ষ বা ভবনের মডেল তৈরিতে।
 - 
গণিতে আয়তন নির্ণয়ের মৌলিক ধারণা শেখাতে ঘন গুরুত্বপূর্ণ।
 - 
প্রকৌশলে বিভিন্ন ঘন আকৃতির উপাদানের আয়তন নির্ণয়ে এটি ব্যবহৃত হয়।
 
 - 
 - 
অতিরিক্ত তথ্য:
ঘনের আয়তন সবসময় তিনটি সমান মাত্রার গুণফল দ্বারা পাওয়া যায়, অর্থাৎ ঘন মানে এক মাত্রার ঘনফল। এজন্যই একে “কিউব” বলা হয়, এবং কোনো সংখ্যার কিউব মানে সেই সংখ্যা তিনবার গুণ করা, যেমন ৪³ = ৪×৪×৪ = ৬৪। 
সবশেষে বলা যায়, ঘনের সূত্র V = a³ আমাদেরকে শুধু কোনো বস্তুর আয়তনই নয়, বরং স্থানিক ধারণা (spatial understanding) শেখায়। এটি জ্যামিতির একটি মৌলিক সূত্র, যা দৈনন্দিন জীবনের নানা প্রয়োগে ব্যবহৃত হয়।