প্রেষণা বলতে কী বোঝায়?

Avatar
calender 31-10-2025

প্রেষণা বলতে বোঝায় কোনো ব্যক্তির অন্তর্নিহিত শক্তি বা মানসিক উদ্দীপনা, যা তাকে কোনো কাজ সম্পাদনে উদ্বুদ্ধ বা অনুপ্রাণিত করে। অর্থাৎ, এটি এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া যা মানুষকে লক্ষ্য অর্জনের পথে সক্রিয় করে এবং সেই কাজে স্থির থাকতে সাহায্য করে। প্রেষণা ছাড়া মানুষ কোনো কাজ সম্পূর্ণ করার আগ্রহ বা উদ্যম পায় না।

প্রেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তির কর্মোদ্যম বৃদ্ধি করা এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের প্রতি তার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা। এটি ব্যক্তির চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণকে প্রভাবিত করে এবং তার কর্মক্ষমতাকে গতি দেয়।

প্রেষণার বৈশিষ্ট্য

  • এটি মানুষের অন্তর্গত মানসিক শক্তি বা উদ্দীপনা।

  • এটি কোনো কাজ করার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে।

  • এটি লক্ষ্যনির্ভর এবং ফলাফলমুখী।

  • প্রেষণার মাধ্যমে মানুষ আত্মসন্তুষ্টি ও সফলতা লাভ করে।

  • এটি ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে, কারণ প্রত্যেকের প্রেষণার উৎস আলাদা।

প্রেষণার প্রকারভেদ
প্রেষণাকে সাধারণত দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়—

  • অভ্যন্তরীণ প্রেষণা (Intrinsic Motivation): এটি আসে নিজের ভেতর থেকে। যেমন—কোনো কাজ ভালো লাগার কারণে করা, শেখার আনন্দ পাওয়া, বা আত্মতৃপ্তি অর্জনের জন্য কাজ করা।

  • বহিঃপ্রেষণা (Extrinsic Motivation): এটি আসে বাইরের উৎস থেকে। যেমন—টাকা, পুরস্কার, প্রশংসা, পদোন্নতি বা সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়া।

উদাহরণ
১. একজন ছাত্র ভালো ফলাফলের জন্য মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করছে—এটি প্রেষণার উদাহরণ।
২. কোনো কর্মী বেতন বাড়ানোর আশায় কঠোর পরিশ্রম করছে—এটিও প্রেষণা।

প্রেষণার গুরুত্ব

  • এটি মানুষকে লক্ষ্য অর্জনে উৎসাহিত করে।

  • কর্মক্ষমতা ও মনোবল বৃদ্ধি করে।

  • সময় ব্যবস্থাপনা ও কাজের মান উন্নত করে।

  • সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়ায়।

  • ব্যক্তি ও সমাজের সার্বিক উন্নয়নে সহায়তা করে।

উপসংহার
অতএব, প্রেষণা হলো এমন এক মানসিক শক্তি যা মানুষকে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। এটি মানুষের কর্ম, মনোভাব ও আচরণের মূল চালিকা শক্তি। প্রেষণাই মানুষকে উদ্যমী, পরিশ্রমী ও সফল করে তোলে।

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD