যে সংখ্যাকে বিয়োগ করা হয় তাকে কী বলে?
যে সংখ্যাকে বিয়োগ করা হয় তাকে বিয়োগ্য সংখ্যা (Minuend) বলা হয়। এটি হলো সেই সংখ্যা, যার থেকে অন্য একটি সংখ্যা বিয়োগ করা হয় এবং যার মাধ্যমে অবশিষ্ট বা ফলাফল নির্ণয় করা যায়। বিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিয়োগ্য সংখ্যা সর্বদা প্রথমে অবস্থান করে। যেমন, ১৫ – ৭ = ৮ সমীকরণে ১৫ হলো বিয়োগ্য সংখ্যা, কারণ এখান থেকে ৭ বিয়োগ করে ৮ পাওয়া গেছে।
গাণিতিকভাবে বিয়োগ একটি মৌলিক গাণিতিক প্রক্রিয়া, যার উদ্দেশ্য হলো দুটি সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা। এখানে বিয়োগ্য সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, কারণ এটি ছাড়া বিয়োগ সম্ভব নয়। নিচে বিষয়টি আরও বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।
বিয়োগ প্রক্রিয়ার উপাদানসমূহ
বিয়োগের ক্ষেত্রে তিনটি প্রধান উপাদান রয়েছে—
-
বিয়োগ্য (Minuend): যে সংখ্যার থেকে বিয়োগ করা হয়।
-
বিয়োগক (Subtrahend): যে সংখ্যাটি বিয়োগ করা হয়।
-
অবশিষ্ট (Difference): বিয়োগের ফলাফল বা পার্থক্য।
উদাহরণসহ বিশ্লেষণ
| সমীকরণ | বিয়োগ্য (Minuend) | বিয়োগক (Subtrahend) | অবশিষ্ট (Difference) |
|---|---|---|---|
| ১০ – ৪ = ৬ | ১০ | ৪ | ৬ |
| ২৫ – ৯ = ১৬ | ২৫ | ৯ | ১৬ |
| ৪০ – ১৫ = ২৫ | ৪০ | ১৫ | ২৫ |
| ৯০ – ৬০ = ৩০ | ৯০ | ৬০ | ৩০ |
এই টেবিল থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, বিয়োগ্য সংখ্যা হলো সেই সংখ্যা যেটি বড় এবং যার থেকে ছোট সংখ্যা বিয়োগ করে অবশিষ্ট পাওয়া যায়।
বিয়োগের গাণিতিক রূপ
বিয়োগ ক্রিয়াটি সাধারণভাবে নিম্নরূপে প্রকাশ করা হয়:
বিয়োগ্য – বিয়োগক = অবশিষ্ট
অর্থাৎ, যদি ( a - b = c ), তবে এখানে
-
( a ) = বিয়োগ্য,
-
( b ) = বিয়োগক,
-
( c ) = অবশিষ্ট।
উদাহরণ:
( ৫০ - ২০ = ৩০ )
এখানে, ৫০ হলো বিয়োগ্য, কারণ এখান থেকে ২০ বিয়োগ করা হয়েছে এবং ফলাফল এসেছে ৩০।
বিয়োগ্য সংখ্যার ভূমিকা ও গুরুত্ব
-
এটি বিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম এবং মূল সংখ্যা।
-
বিয়োগক ও অবশিষ্ট নির্ভর করে বিয়োগ্যের মানের ওপর।
-
বিয়োগ্যের মান যত বড় হবে, অবশিষ্ট তত বড় হতে পারে (যদি বিয়োগক অপরিবর্তিত থাকে)।
-
বিয়োগ্য ছাড়া কোনো বিয়োগ ক্রিয়া শুরু করা যায় না।
বাস্তব জীবনে প্রয়োগ
বিয়োগ্য সংখ্যা শুধু গণিতে নয়, দৈনন্দিন জীবনের অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন—
-
টাকা-পয়সার হিসাব (যেমন: ১০০ টাকা থেকে ৪০ টাকা খরচ করলে ৬০ টাকা থাকে)।
-
দূরত্ব নির্ণয়ে (যেমন: ১৫ কিমি থেকে ৫ কিমি চললে ১০ কিমি বাকি থাকে)।
-
সময় গণনায় (যেমন: সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কত সময় পার হয়েছে)।
উপসংহার
সুতরাং, যে সংখ্যাকে বিয়োগ করা হয়, সেটিকেই বিয়োগ্য সংখ্যা বলা হয়। এটি বিয়োগ প্রক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দু, যার ওপর নির্ভর করে সম্পূর্ণ গাণিতিক বিশ্লেষণ সম্পন্ন হয়। বিয়োগ্যের সঠিক ব্যবহার জানা থাকলে গাণিতিক সমস্যা সমাধান আরও সহজ ও যৌক্তিকভাবে করা সম্ভব হয়।