আখলাকে হামিদাহ অর্থ কী?
 
                        “আখলাকে হামিদাহ” (Akhlaqe Hamidah) একটি আরবি শব্দগুচ্ছ, যার অর্থ হলো “সুন্দর বা প্রশংসনীয় চরিত্র” বা “উত্তম নৈতিক গুণাবলি”। ইসলামিক নৈতিক দর্শনে এই শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করা হয় এমন সব আচরণ, চরিত্র ও গুণের জন্য, যা আল্লাহ তায়ালা ও সমাজ উভয়ের দৃষ্টিতে প্রশংসনীয় এবং গ্রহণযোগ্য।
বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও অর্থ বিশ্লেষণ:
“আখলাক” (أخلاق) শব্দটি আরবি “خلق” (খুলুক) থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ স্বভাব, চরিত্র বা আচরণ। “হামিদাহ” (حميدة) মানে প্রশংসনীয়, ভালো বা মহৎ। তাই “আখলাকে হামিদাহ” মানে এমন নৈতিক গুণাবলি যা একজন মানুষকে নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ করে তোলে।
ইসলামী নৈতিক দৃষ্টিতে ‘আখলাকে হামিদাহ’-এর মূল গুণাবলি:
- 
সত্যবাদিতা (Truthfulness) – কথায় ও কাজে সত্যের অনুশীলন। 
- 
ধৈর্য (Patience) – কষ্ট ও বিপদে সংযম থাকা। 
- 
নম্রতা (Humility) – অহংকার বর্জন ও বিনয়ী আচরণ। 
- 
দয়া ও সহানুভূতি (Compassion) – অন্যের দুঃখে সহমর্মী হওয়া। 
- 
ন্যায়পরায়ণতা (Justice) – সবার প্রতি সমান আচরণ করা। 
- 
কৃতজ্ঞতা (Gratitude) – আল্লাহ ও মানুষের অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞ থাকা। 
- 
ক্ষমাশীলতা (Forgiveness) – অন্যের ভুল ক্ষমা করে দেওয়া। 
আখলাকে হামিদাহ-এর বিপরীত শব্দ:
এর বিপরীত হলো “আখলাকে জামিমাহ” (Akhlaqe Zamimah), যার অর্থ “নিন্দনীয় চরিত্র” বা “খারাপ গুণাবলি”, যেমন মিথ্যা বলা, অহংকার, হিংসা, কৃপণতা ইত্যাদি।
কুরআন ও হাদীসের প্রেক্ষাপটে:
- 
কুরআনে বলা হয়েছে, “তুমি তো মহান চরিত্রের অধিকারী।” (সূরা আল-কলম, আয়াত ৪) — এখানে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর চরিত্রকে ‘আখলাকে হামিদাহ’-এর আদর্শ রূপ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। 
- 
হাদীসে রাসূল (সা.) বলেন: “তোমাদের মধ্যে সে-ই সর্বোত্তম, যার চরিত্র সর্বোত্তম।” 
উপসংহার:
অতএব, “আখলাকে হামিদাহ” অর্থ উত্তম নৈতিক চরিত্র বা প্রশংসনীয় গুণাবলি, যা মানুষকে নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ ও সমাজে সম্মানিত করে তোলে। ইসলামী দৃষ্টিতে এটি মানুষের আধ্যাত্মিক ও সামাজিক পরিপূর্ণতার মূলভিত্তি।