একটি আদর্শ ফুলের কয়টি অংশ ও কী কী?
 
                        একটি আদর্শ ফুলে আসলে পাঁচটি প্রধান অংশ থাকে। ফুলের সম্পূর্ণ গঠন বুঝতে হলে এর পাঁচটি অংশকে সঠিকভাবে জানা দরকার। এই অংশগুলো হলো— বৃন্ত (Pedicel), বৃতি (Calyx), পাপড়ি (Corolla), পুংকেশর (Androecium) ও গর্ভকেশর (Gynoecium)।
নিচে প্রতিটি অংশের বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হলো—
বৃন্ত (Pedicel):
– এটি ফুলের নিচের দণ্ডের মতো অংশ, যা ফুলকে ডাঁটির সঙ্গে যুক্ত করে রাখে।
– বৃন্ত ফুলকে ধরে রাখে ও পুষ্টি সরবরাহ করে।
– কিছু ফুলে বৃন্ত থাকে (যেমন গোলাপ), আবার কিছু ফুলে থাকে না, সেগুলোকে অবৃন্ত ফুল বলে (যেমন গাঁদা)।
বৃতি (Calyx):
– এটি ফুলের প্রথম বা বাইরের স্তর।
– সাধারণত সবুজ রঙের হয় এবং ফুলের কলিকে (bud) রক্ষা করে।
– প্রতিটি ক্ষুদ্র পাতাকৃত অংশকে বৃন্তল (sepal) বলা হয়।
– কাজ: ফুল ফোটার আগে কলিকে সুরক্ষা দেওয়া।
পাপড়ি (Corolla):
– এটি ফুলের দ্বিতীয় স্তর, সাধারণত উজ্জ্বল রঙের ও দৃষ্টিনন্দন।
– প্রতিটি পাপড়িকে বলা হয় পাপড়িল (petal)।
– কাজ: রঙ ও গন্ধের মাধ্যমে পরাগবাহী পোকা আকর্ষণ করা।
পুংকেশর (Androecium):
– এটি ফুলের তৃতীয় অংশ এবং পুরুষ প্রজনন অঙ্গ।
– প্রতিটি পুংকেশর দুটি অংশ নিয়ে গঠিত —
পুংদণ্ড (Filament): সূক্ষ্ম দণ্ডের মতো অংশ।
পরাগধানী (Anther): এখানে পরাগরেণু (Pollen grains) থাকে।
– কাজ: পরাগরেণু উৎপন্ন করা, যা স্ত্রী অঙ্গে গিয়ে নিষেক ঘটায়।
গর্ভকেশর (Gynoecium):
– এটি ফুলের চতুর্থ ও সবচেয়ে ভেতরের অংশ, যা স্ত্রী প্রজনন অঙ্গ।
– এটি তিনটি অংশে বিভক্ত —
স্ত্রীগ্রাণ (Stigma): পরাগরেণু গ্রহণ করে।
স্ত্রীদণ্ড (Style): পরাগরেণুকে গর্ভাশয়ে নিয়ে যায়।
গর্ভাশয় (Ovary): এখানে বীজক (ovule) থাকে, যা নিষেকের পর বীজে পরিণত হয়।
সারসংক্ষেপে:
| অংশের নাম | ইংরেজি নাম | প্রধান কাজ | 
|---|---|---|
| বৃন্ত | Pedicel | ফুলকে ধরে রাখা ও পুষ্টি পরিবহন | 
| বৃতি | Calyx | কলিকে সুরক্ষা দেয় | 
| পাপড়ি | Corolla | পোকা আকর্ষণ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি | 
| পুংকেশর | Androecium | পরাগরেণু উৎপন্ন করা | 
| গর্ভকেশর | Gynoecium | বীজক ধারণ ও ফল তৈরি করা | 
সবশেষে বলা যায়, একটি আদর্শ ফুলে মোট পাঁচটি অংশ থাকে — বৃন্ত, বৃতি, পাপড়ি, পুংকেশর ও গর্ভকেশর। এই পাঁচটি অংশ একসঙ্গে ফুলের সৌন্দর্য, গঠন ও প্রজনন প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ করে।