আধান বা চার্জ কাকে বলে?

Avatar
calender 30-10-2025

আধান বা চার্জ হলো কোনো বস্তুর সেই ভৌত ধর্ম, যার কারণে বস্তুটি বৈদ্যুতিক বলের অধীন হয় বা বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র সৃষ্টি করে। অর্থাৎ, কোনো পদার্থে ইলেকট্রন হারানো বা গ্রহণ করার ফলে যে বৈদ্যুতিক ধর্ম প্রকাশ পায়, তাকে আধান বা বৈদ্যুতিক চার্জ বলা হয়। এটি দুই প্রকারের হতে পারে—ধনাত্মক (Positive) ও ঋণাত্মক (Negative) চার্জ। যখন কোনো বস্তু ইলেকট্রন হারায়, তখন সেটি ধনাত্মক চার্জযুক্ত হয় এবং যখন ইলেকট্রন গ্রহণ করে, তখন সেটি ঋণাত্মক চার্জযুক্ত হয়।

বৈদ্যুতিক চার্জ পদার্থবিজ্ঞানের একটি মৌলিক পরিমিতি, যা কুলম্ব (Coulomb, চিহ্ন C) এককে পরিমাপ করা হয়। এটি কণার সংখ্যা ও প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। যেমন, একটি ইলেকট্রনের আধানের মান হলো –1.602 × 10⁻¹⁹ কুলম্ব, এবং প্রোটনের আধান একই পরিমাণে কিন্তু বিপরীত চিহ্নে অর্থাৎ +1.602 × 10⁻¹⁹ কুলম্ব

চার্জ সংরক্ষিত থাকে, অর্থাৎ কোনো বন্ধ সিস্টেমে মোট চার্জ কখনো বৃদ্ধি বা হ্রাস পায় না। শুধু এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে স্থানান্তরিত হয়। এই ধর্মকে বলা হয় চার্জ সংরক্ষণ নীতি (Law of Conservation of Charge)

বস্তুতে চার্জ সৃষ্টির সাধারণ তিনটি উপায় আছে—ঘর্ষণ (Friction), পরিবাহী সংযোগ (Conduction) এবং আবেশ (Induction)। ঘর্ষণে এক বস্তুর ইলেকট্রন অন্য বস্তুর কাছে স্থানান্তরিত হয়, ফলে একটিতে ধনাত্মক এবং অন্যটিতে ঋণাত্মক চার্জ জমা হয়। পরিবাহী সংযোগে চার্জ সরাসরি এক বস্তুর থেকে অন্য বস্তুর মধ্যে প্রবাহিত হয়। আর আবেশ প্রক্রিয়ায় কোনো সরাসরি সংযোগ ছাড়াই চার্জ বিভাজন ঘটে।

নিচের টেবিলটি আধানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে দেখায়—

বৈশিষ্ট্য বিবরণ
প্রকৃতি ধনাত্মক ও ঋণাত্মক দুই প্রকার
একক কুলম্ব (C)
মৌলিক আধান 1.602 × 10⁻¹⁹ C
সংরক্ষণ সর্বদা সংরক্ষিত
স্থানান্তর প্রক্রিয়া ঘর্ষণ, পরিবাহী সংযোগ, আবেশ
কার্য বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র ও বল সৃষ্টি করে

সারসংক্ষেপে বলা যায়, আধান বা চার্জ হলো পদার্থের একটি মৌলিক ধর্ম যা বৈদ্যুতিক বল সৃষ্টি করে এবং যার উপস্থিতিতেই বিদ্যুৎ ও চৌম্বকত্বের বিভিন্ন ঘটনা সংঘটিত হয়।

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD