আদিম যুগে মানুষ দলবদ্ধভাবে বসবাস করত কেন?
 
                        আদিম যুগে মানুষ দলবদ্ধভাবে বসবাস করত প্রধানত নিরাপত্তা, খাদ্য সংগ্রহ, ও পারস্পরিক সহযোগিতার প্রয়োজনের কারণে। সেই সময় মানুষ ছিল প্রকৃতিনির্ভর, তাই বন্য পশুর আক্রমণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও খাদ্যাভাব থেকে বাঁচতে একা নয়, বরং দলবদ্ধভাবে বসবাস করাই ছিল সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও তথ্যউপাত্ত:
নিরাপত্তার জন্য:
- 
আদিম যুগে মানুষ ছিল বন্য প্রাণী, বজ্রপাত, বন্যা ও অগ্নিকাণ্ডের মতো প্রাকৃতিক বিপদের মুখোমুখি। 
- 
একা থাকলে এসব বিপদে টিকে থাকা কঠিন ছিল। দলবদ্ধভাবে থাকলে সবাই মিলে পাহারা দিতে পারত, বিপদের সময় প্রতিরোধ গঠন করা যেত। 
- 
উদাহরণস্বরূপ, বন্য জন্তুর আক্রমণে দলবদ্ধ মানুষরা একত্রে আগুন জ্বেলে বা অস্ত্র ব্যবহার করে নিজেদের রক্ষা করত। 
খাদ্য সংগ্রহ ও শিকার:
- 
তখন মানুষ শিকার ও ফলমূল সংগ্রহ করে বেঁচে থাকত। 
- 
দলবদ্ধভাবে শিকার করলে সফলতার হার বাড়ত, যেমন—বড় প্রাণী ধরতে একাধিক মানুষের সমন্বয় প্রয়োজন ছিল। 
- 
খাদ্য সংগ্রহের পর সবাই ভাগাভাগি করে খেত, যা বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা দিত। 
সহযোগিতা ও পারস্পরিক নির্ভরতা:
- 
একে অপরকে সাহায্য করা ছিল জীবনের অংশ। কেউ অসুস্থ হলে অন্যরা যত্ন নিত, কেউ শিকার আনলে সবাই ভাগ করে খেত। 
- 
এভাবে সামাজিক বন্ধন ও পারস্পরিক আস্থা গড়ে ওঠে, যা সভ্যতার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। 
প্রজনন ও বংশবিস্তার:
- 
দলবদ্ধভাবে থাকার ফলে পুরুষ ও নারীর মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে, পরিবার ও গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়। 
- 
এতে বংশবিস্তার সহজ হয় এবং নতুন প্রজন্ম নিরাপদে বেড়ে উঠতে পারে। 
অস্তিত্ব রক্ষার কৌশল:
- 
আদিম মানুষ তখনও প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে সীমিত জ্ঞান রাখত। তাই তারা শিখেছিল—“একসাথে থাকলে টিকে থাকা সম্ভব।” 
- 
এই ধারণাই পরবর্তীতে সমাজ গঠনের সূচনা করে। 
| কারণ | ব্যাখ্যা | 
|---|---|
| নিরাপত্তা | বন্য প্রাণী ও প্রাকৃতিক বিপদ থেকে রক্ষা | 
| খাদ্য সংগ্রহ | দলবদ্ধভাবে শিকার ও খাদ্য ভাগাভাগি | 
| সহযোগিতা | অসুস্থ বা দুর্বল সদস্যদের সহায়তা | 
| বংশবিস্তার | পরিবার ও গোষ্ঠী গঠন | 
| সামাজিক বন্ধন | পারস্পরিক নির্ভরতা ও সংগঠিত জীবন | 
সংক্ষেপে:
আদিম যুগে মানুষ দলবদ্ধভাবে বসবাস করেছিল কারণ একত্রে থাকা মানে ছিল নিরাপত্তা, খাদ্যের নিশ্চয়তা, এবং বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বৃদ্ধি। এই দলবদ্ধ জীবনই পরবর্তীকালে সমাজ ও সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করে।