দূরত্ব ও সরণ-এর মধ্যে পার্থক্য কী?
 
                        দূরত্ব ও সরণ দুটি শব্দ শুনতে কাছাকাছি মনে হলেও পদার্থবিজ্ঞানে এদের অর্থ ও ব্যবহার ভিন্ন। এই পার্থক্য বোঝা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ গতি, বেগ ও ত্বরণের মতো বিষয়গুলো বুঝতে এই ধারণা দরকার। নিচে সহজভাবে ব্যাখ্যা করা হলো—
দূরত্ব (Distance):
- 
কোনো বস্তু এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার সময় যে মোট পথ অতিক্রম করে, তাকে দূরত্ব বলে। 
- 
এটি একটি স্কেলার রাশি, অর্থাৎ এর শুধু মান আছে, দিক নেই। 
- 
দূরত্ব সর্বদা ধনাত্মক হয়, কখনো শূন্য বা ঋণাত্মক হয় না। 
- 
দূরত্ব নির্ণয় করা হয় মোট চলা পথের দৈর্ঘ্য দিয়ে। 
- 
একক হলো মিটার (m)। 
উদাহরণ:
একজন ছাত্র যদি বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে ২ কিমি দক্ষিণে এবং পরে ১ কিমি পূর্ব দিকে হাঁটে, তবে সে মোট ৩ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করেছে।
সরণ (Displacement):
- 
কোনো বস্তুর প্রারম্ভিক বিন্দু থেকে চূড়ান্ত বিন্দুর সরলরেখায় দূরত্ব এবং সেই রেখার দিকসহ মানকে সরণ বলে। 
- 
এটি একটি ভেক্টর রাশি, অর্থাৎ এর মান ও দিক উভয়ই আছে। 
- 
সরণ শূন্য, ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হতে পারে। 
- 
সরণ সর্বদা প্রারম্ভিক ও চূড়ান্ত অবস্থার মধ্যে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত পথ নির্দেশ করে। 
- 
এককও মিটার (m)। 
উদাহরণ:
উপরের একই ক্ষেত্রে, ছাত্রটির প্রারম্ভিক ও চূড়ান্ত বিন্দুর মধ্যে সরলরেখার দূরত্ব হবে √(2² + 1²) = √5 কিমি ≈ 2.24 কিমি (দক্ষিণ-পূর্ব দিকে)।
মূল পার্থক্যগুলো:
- 
দূরত্ব হলো মোট চলা পথ, সরণ হলো শুরুর স্থান থেকে শেষ স্থানের সরলরেখার দূরত্ব। 
- 
দূরত্বের দিক নেই, কিন্তু সরণের দিক আছে। 
- 
দূরত্ব সবসময় সমান বা সরণের চেয়ে বেশি হয়। 
- 
একই স্থানে ফিরে এলে দূরত্ব থাকে, কিন্তু সরণ হয় শূন্য। 
সংক্ষেপে:
দূরত্ব বলে “কতদূর চলেছে”, আর সরণ বলে “কোথা থেকে কোথায় গেছে”।