পর্যায় সারণী কাকে বলে?
যে সারণিতে মৌল ও যৌগ পদার্থের উপাদানগুলিকে তাদের পারমাণবিক সংখ্যা, গুণাবলি ও রাসায়নিক ধর্ম অনুসারে সাজানো হয়, তাকে পর্যায় সারণী বলে। এই সারণির মাধ্যমে উপাদানগুলোর মধ্যে সম্পর্ক, ধর্মের পরিবর্তন এবং রাসায়নিক আচরণ সহজে বোঝা যায়।
পর্যায় সারণী সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য নিচে দেওয়া হলো:
-
সংজ্ঞা: মৌলগুলিকে তাদের পারমাণবিক সংখ্যা ক্রমানুসারে সাজিয়ে যে সারণি তৈরি করা হয়েছে, সেটিই হলো পর্যায় সারণী।
-
উদ্ভাবক: ১৮৬৯ সালে রুশ বিজ্ঞানী দিমিত্রি মেন্ডেলিভ প্রথম পর্যায় সারণী তৈরি করেন, যা পরবর্তীতে উন্নত ও সংশোধিত হয়।
-
বর্তমান রূপ: বর্তমানে ব্যবহৃত আধুনিক পর্যায় সারণীটি মোসেলি-এর প্রস্তাব অনুসারে পারমাণবিক সংখ্যা ভিত্তিক। এতে মোট ৭টি পর্যায় (period) এবং ১৮টি গোষ্ঠী (group) আছে।
-
উদ্দেশ্য:
-
উপাদানগুলির ধর্মের নিয়মিত পরিবর্তন বোঝানো।
-
নতুন মৌল আবিষ্কারে সহায়তা করা।
-
রাসায়নিক বিক্রিয়ার ধরন অনুমান করা।
-
-
বৈশিষ্ট্য:
-
একই গোষ্ঠীর উপাদানগুলির রাসায়নিক ধর্ম প্রায় একরকম।
-
একই পর্যায়ের উপাদানগুলির ভৌত ধর্ম ক্রমান্বয়ে পরিবর্তিত হয়।
-
ধাতু, অধাতু ও উপধাতু উপাদানগুলিকে সুশৃঙ্খলভাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
-
-
উদাহরণ:
-
প্রথম গোষ্ঠীতে আছে হাইড্রোজেন (H), লিথিয়াম (Li), সোডিয়াম (Na), পটাসিয়াম (K)।
-
সপ্তদশ গোষ্ঠীতে আছে হ্যালোজেন মৌল — ফ্লোরিন (F), ক্লোরিন (Cl), ব্রোমিন (Br)।
-
সুতরাং, পর্যায় সারণী হলো এমন একটি বৈজ্ঞানিক বিন্যাস যেখানে মৌলগুলিকে তাদের পারমাণবিক সংখ্যা ও ধর্ম অনুসারে সাজিয়ে রসায়নের মূল কাঠামোকে সহজভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।