মিথস্ক্রিয়া বলতে কী বুঝায়?
মিথস্ক্রিয়া শব্দটি এমন একটি প্রক্রিয়া বা অবস্থা বোঝায়, যেখানে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি, প্রাণী, বস্তু বা উপাদান একে অপরের সঙ্গে পারস্পরিকভাবে প্রভাবিত হয় বা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অর্থাৎ, যখন এক পক্ষের আচরণ, কর্ম বা পরিবর্তন অন্য পক্ষকে প্রভাবিত করে এবং উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক বা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়, তখন সেটিকেই মিথস্ক্রিয়া বলা হয়।
শব্দের উৎপত্তি ও অর্থ:
“মিথস্ক্রিয়া” শব্দটি দুটি অংশে গঠিত—
-
‘মিথ’ মানে পারস্পরিক বা একে অপরের মধ্যে,
-
‘স্ক্রিয়া’ মানে ক্রিয়া বা কার্যকলাপ।
অতএব, মিথস্ক্রিয়া অর্থ “পারস্পরিক ক্রিয়া” বা “দ্বিমুখী প্রভাব”।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে মিথস্ক্রিয়ার ব্যবহার:
১. সামাজিক মিথস্ক্রিয়া:
সমাজবিজ্ঞানে মিথস্ক্রিয়া বলতে বোঝায়, মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, যোগাযোগ ও আচরণ বিনিময়।
যেমন—
-
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে কথোপকথন একটি সামাজিক মিথস্ক্রিয়া।
-
সমাজে বসবাসের সময় মানুষ একে অপরের সঙ্গে নানা ধরনের মিথস্ক্রিয়ায় জড়িত থাকে।
২. বৈজ্ঞানিক মিথস্ক্রিয়া:
পদার্থবিজ্ঞান বা রসায়নে মিথস্ক্রিয়া বোঝায় দুই বা ততোধিক কণিকা বা পদার্থের পারস্পরিক প্রভাব।
যেমন—
-
অণু ও পরমাণুর মধ্যে রাসায়নিক মিথস্ক্রিয়া হয়।
-
বিদ্যুৎ ও চৌম্বক বলের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া ঘটে।
৩. জৈবিক মিথস্ক্রিয়া:
জীববিজ্ঞানে এটি প্রাণীর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্দেশ করে।
যেমন—
-
মৌমাছি ও ফুলের মধ্যে পরাগায়ণ প্রক্রিয়া একটি জৈব মিথস্ক্রিয়া।
সংক্ষেপে:
মিথস্ক্রিয়া হলো এমন এক পারস্পরিক প্রভাব বা যোগাযোগের প্রক্রিয়া, যেখানে এক পক্ষের কাজ অন্য পক্ষকে প্রভাবিত করে, এবং উভয়ের মধ্যে কার্য-প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এটি সমাজ, বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান—প্রায় সব ক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা।