সম্পদ কাকে বলে?

সম্পদ বলতে এমন সব বস্তু বা দ্রব্যকে বোঝায়, যা মানুষের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম, সীমিত পরিমাণে বিদ্যমান, অর্থনৈতিক মূল্যসম্পন্ন, এবং হস্তান্তরযোগ্য। সহজভাবে বলা যায়, যেসব জিনিস মানুষের জীবনধারণ, উৎপাদন, ও উন্নয়নের কাজে লাগে, সেগুলোকেই সম্পদ বলা হয়।
সম্পদের তিনটি মূল বৈশিষ্ট্য আছে—উপযোগিতা, সীমাবদ্ধতা, ও হস্তান্তরযোগ্যতা।
-
উপযোগিতা (Utility):
কোনো বস্তুকে সম্পদ হিসেবে গণ্য করতে হলে সেটির মানুষের উপকারে আসা আবশ্যক। যেমন—জল, জমি, খনিজ পদার্থ, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, শ্রম ইত্যাদি মানুষের জীবনে উপযোগ সৃষ্টি করে। তাই এগুলো সম্পদ। -
সীমাবদ্ধতা (Scarcity):
যদি কোনো বস্তু অসীম পরিমাণে পাওয়া যায়, তাহলে সেটি সম্পদ নয়। সম্পদ সেইসব দ্রব্য, যা মানুষের চাহিদার তুলনায় সীমিত। উদাহরণস্বরূপ, অক্সিজেন বায়ুমণ্ডলে প্রচুর থাকলেও তা সাধারণত সম্পদ নয়, কিন্তু চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিশুদ্ধ অক্সিজেন সীমিত হওয়ায় তা সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। -
হস্তান্তরযোগ্যতা (Transferability):
সম্পদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এর মালিকানা পরিবর্তন করা যায়। যেমন—জমি, গাড়ি, অর্থ, বা ভবন অন্যের কাছে বিক্রি বা হস্তান্তর করা সম্ভব। এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই সম্পদ অর্থনৈতিক লেনদেনে ভূমিকা রাখে। -
বাহ্যিক সত্তা (External Existence):
সম্পদ অবশ্যই বাহ্যিকভাবে অস্তিত্বশীল হতে হবে। কোনো মানসিক ভাবনা বা অনুভূতি, যেমন ভালোবাসা বা আনন্দ, সম্পদ নয় কারণ তা দৃশ্যমান বা পরিমাপযোগ্য নয়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, সম্পদ এমন একটি উপাদান যা মানুষের প্রয়োজন পূরণে সহায়তা করে, সীমিত পরিমাণে পাওয়া যায় এবং অর্থনৈতিক বিনিময়ের মাধ্যমে ব্যবহারযোগ্য। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের মাধ্যমে সম্পদ একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক স্থিতি ও জীবনমান বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।