পূর্ণমাত্রা, অর্ধমাত্রা এবং মাত্রাহীন বর্ণ কয়টি?

Avatar
calender 25-10-2025

বাংলা ভাষার বর্ণগুলো উচ্চারণের সময় যে পরিমাণ সময় লাগে, তাকে বলা হয় মাত্রা। এই মাত্রার ভিত্তিতে বর্ণগুলো তিন ভাগে বিভক্ত—পূর্ণমাত্রাযুক্ত বর্ণ, অর্ধমাত্রাযুক্ত বর্ণ এবং মাত্রাহীন বর্ণ। মাত্রা দ্বারা বোঝানো হয় একটি বর্ণ উচ্চারণে কতটা সময় ব্যয় হয়। এই বিভাজন বাংলা উচ্চারণ, ছন্দ এবং কবিতার ছন্দবিন্যাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

পূর্ণমাত্রাযুক্ত বর্ণ হলো সেইসব বর্ণ, যেগুলো উচ্চারণে তুলনামূলক বেশি সময় নেয়। এরা মূলত স্বরবর্ণ। বাংলা ভাষায় পূর্ণমাত্রাযুক্ত বর্ণ রয়েছে ১১টি। এই বর্ণগুলো হলো—আ, অা, ই, ঈ, উ, ঊ, এ, ঐ, ও, ঔ এবং অ। এই বর্ণগুলোর উচ্চারণে সম্পূর্ণ মাত্রা ব্যবহৃত হয় এবং এগুলো স্পষ্টভাবে মুখ থেকে উচ্চারিত হয়। যেমন—‘আলো’, ‘উষা’, ‘ঐক্য’, ‘ওজন’ ইত্যাদি শব্দে এই পূর্ণমাত্রার ব্যবহার দেখা যায়।

অর্ধমাত্রাযুক্ত বর্ণ হলো সেইসব বর্ণ, যেগুলোর উচ্চারণে পূর্ণমাত্রার তুলনায় অর্ধেক সময় লাগে। এই শ্রেণির বর্ণগুলো অধিকাংশই ব্যঞ্জনবর্ণ। বাংলা ভাষায় অর্ধমাত্রাযুক্ত বর্ণের সংখ্যা ৩৩টি। এই বর্ণগুলো হলো—ক, খ, গ, ঘ, চ, ছ, জ, ঝ, ট, ঠ, ড, ঢ, ত, থ, দ, ধ, ন, প, ফ, ব, ভ, ম, য, র, ল, শ, ষ, স, হ, য়, ক্ষ এবং ঙ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়—‘কমল’, ‘মন’, ‘দেশ’, ‘ভাল’ ইত্যাদি শব্দে এই বর্ণগুলো অর্ধমাত্রায় উচ্চারিত হয়।

মাত্রাহীন বর্ণ হলো সেইসব বর্ণ যেগুলোর উচ্চারণে আলাদা কোনো সময় ব্যয় হয় না। এদের উচ্চারণ ক্ষীণ ও দ্রুত হয়। বাংলা ভাষায় মাত্রাহীন বর্ণ দুটি—‘ং’ (অনুস্বার) এবং ‘ঃ’ (বিসর্গ)। উদাহরণস্বরূপ, ‘চাঁদ’, ‘দুঃখ’, ‘সংশয়’ শব্দে এই মাত্রাহীন বর্ণ ব্যবহৃত হয়।

সব মিলিয়ে বলা যায়, বাংলা ভাষার বর্ণমালায় পূর্ণমাত্রাযুক্ত বর্ণ ১১টি, অর্ধমাত্রাযুক্ত বর্ণ ৩৩টি এবং মাত্রাহীন বর্ণ ২টি। অর্থাৎ মোট ৪৬টি বর্ণের মধ্যে এই তিন শ্রেণির বর্ণ ভাগ বিদ্যমান। এই বিভাজন বাংলা ভাষার ছন্দ, কবিতা, এবং উচ্চারণের নিয়ম বোঝার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD