তড়িৎ ঋণাত্মকতা কাকে বলে?
তড়িৎ ঋণাত্মকতা কাকে বলে:
তড়িৎ ঋণাত্মকতা হলো কোনো মৌলের সেই ধর্ম, যার দ্বারা সেই মৌল রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ইলেকট্রন আকর্ষণ করার প্রবণতা প্রকাশ করে। অর্থাৎ, একটি মৌল যত বেশি ইলেকট্রন নিজের দিকে টানতে সক্ষম, তার তড়িৎ ঋণাত্মকতা তত বেশি।
বিস্তারিত ব্যাখ্যা:
পরমাণুর কেন্দ্রের ধনাত্মক আধান ও বাইরের ইলেকট্রনের মধ্যে আকর্ষণ বলের তীব্রতার ওপর তড়িৎ ঋণাত্মকতা নির্ভর করে। যখন দুটি ভিন্ন মৌল যৌগ গঠনের জন্য যুক্ত হয়, তখন যে মৌলটি ইলেকট্রনকে বেশি টানতে পারে, তার তড়িৎ ঋণাত্মকতা বেশি বলা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, ফ্লোরিন (F) মৌল সব মৌলের মধ্যে সর্বাধিক তড়িৎ ঋণাত্মক। তার মান প্রায় ৩.৯৮ (পলিং স্কেলে)। বিপরীতে, সিজিয়াম (Cs) ও ফ্রানসিয়াম (Fr) সবচেয়ে কম তড়িৎ ঋণাত্মক মৌল।
তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান নির্ধারণ:
আমেরিকান রসায়নবিদ লিনাস পলিং প্রথম তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান নির্ধারণের পদ্ধতি প্রবর্তন করেন, যেটি “পলিং স্কেল” নামে পরিচিত। এই স্কেলে মান ০ থেকে ৪ পর্যন্ত নির্ধারিত হয়।
তড়িৎ ঋণাত্মকতার পরিবর্তনসূত্র:
-
পর্যায় সারণির একই পর্যায়ে বাম থেকে ডানে গেলে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বৃদ্ধি পায়।
-
একই গ্রুপে উপর থেকে নিচে গেলে তড়িৎ ঋণাত্মকতা কমে।
কারণ: বাম থেকে ডানে গেলে নিউক্লিয়াসে প্রোটনের সংখ্যা বাড়ে, ফলে কেন্দ্রীয় আকর্ষণ বল বেশি হয়; কিন্তু উপর থেকে নিচে গেলে পরমাণুর আকার বাড়ে, ফলে আকর্ষণ বল কমে যায়।
সংক্ষেপে:
তড়িৎ ঋণাত্মকতা হলো কোনো মৌলের ইলেকট্রন আকর্ষণের ক্ষমতা। এটি রাসায়নিক বন্ধনের প্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে— যেমন আয়নিক ও যৌগিক বন্ধন গঠনে মৌলগুলোর আচরণ বুঝতে এই ধর্ম অপরিহার্য।