'ধরন' ও 'ধরণ' এ দুটি শব্দের পার্থক্য কী?
“ধরন” এবং “ধরণ” — দুটি শব্দই দেখতে প্রায় এক হলেও, তাদের অর্থ, উৎস ও প্রয়োগে স্পষ্ট পার্থক্য আছে। দুটোই শুদ্ধ শব্দ, তবে তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ব্যবহৃত হয়।
ধরন শব্দটি এসেছে বাংলা ক্রিয়া “ধরা” থেকে। এর অর্থ হয় প্রকার, রীতি, পদ্ধতি, রূপ বা ধাঁচ। এটি কোনো কিছুর বৈশিষ্ট্য বা প্রকৃতিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এই শব্দটি সাধারণত এমন বিষয় বোঝায় যা ভিন্ন ভিন্ন ধাঁচ বা রূপে বিদ্যমান।
– কোনো কাজের বা বস্তুর প্রকারভেদ প্রকাশে ব্যবহৃত হয়।
– প্রাত্যহিক, সাহিত্যিক এবং প্রমিত বাংলায় সমানভাবে প্রচলিত।
– উদাহরণ: লেখার ধরন ভিন্ন হতে পারে; পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন বদলে গেছে; পোশাকের ধরনটি সুন্দর।
অর্থাৎ, “ধরন” শব্দটি এমন কিছুর প্রকৃতি বা রূপ নির্দেশ করে যার একাধিক প্রকার থাকতে পারে।
ধরণ শব্দটির উৎস সংস্কৃত ধাতু “ধৃ”, যার অর্থ ধারণ করা, বহন করা বা ধরে রাখা। এই শব্দটি বোঝায় এমন কিছু যা ধারণ বা সহ্য করতে সক্ষম।
– এটি প্রাচীন সংস্কৃতমূলক শব্দ, যার ব্যবহার সাধারণত সাহিত্য, ধর্মীয় গ্রন্থ বা প্রমিত ভাষায় দেখা যায়।
– উদাহরণ: পৃথিবীর ধরণ গোলাকার; সে অনেক কষ্ট ধরণ করতে পারে; ধরণী আমাদের সবাইকে ধারণ করে।
অর্থাৎ “ধরণ” শব্দটি বোঝায় ধারণ, সহনশীলতা বা যে ধারণ করে তার গুণাবলি।
দুটির পার্থক্য আরও স্পষ্টভাবে বোঝাতে বলা যায়—
-
ধরন মানে কোনো কিছুর প্রকার বা রূপ।
-
ধরণ মানে ধারণ বা ধারণক্ষমতা, যা মূলত সহনশীলতা বা ধারণশক্তি প্রকাশ করে।
অতএব, উভয় শব্দই অর্থবহ ও শুদ্ধ হলেও তাদের ব্যবহারের ক্ষেত্র আলাদা। “ধরন” ব্যবহার হয় প্রকার বা রূপ বোঝাতে, আর “ধরণ” ব্যবহার হয় ধারণ বা সহ্য করার ক্ষমতা বোঝাতে।