টাকা "দেবো" নাকি "দিব"?
সঠিক রূপ হলো “দিব”।
বাংলা ব্যাকরণ অনুযায়ী “দেবো” এবং “দিব” — উভয়ই “দেওয়া” ক্রিয়ার ভবিষ্যৎকাল নির্দেশ করে, কিন্তু তাদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে প্রমিততা ও ব্যবহারের ধরণে। “দিব” হলো প্রমিত ও ব্যাকরণসম্মত রূপ, আর “দেবো” হলো কথ্য বা আঞ্চলিক রূপ, যা দৈনন্দিন ভাষায় ব্যবহৃত হয় কিন্তু লিখিত বা পরীক্ষার ভাষায় সঠিক নয়।
ব্যাকরণগত বিশ্লেষণ:
বাংলা ভাষায় “দেওয়া” একটি অদ্বিতীয় ক্রিয়া। এর প্রমিত ভবিষ্যৎ রূপ হবে—
-
আমি দিব,
-
তুমি দিবে,
-
সে দিবে,
-
আমরা দিব,
-
তারা দিবে।
অর্থাৎ “দিব” হলো “দেওয়া” ক্রিয়ার ভবিষ্যৎ রূপের প্রমিত রূপ।
“দিব” রূপের ব্যবহার:
“দিব” শব্দটি সাহিত্য, সংবাদ, প্রবন্ধ, পাঠ্যপুস্তক এবং প্রমিত লেখায় ব্যবহৃত হয়। এটি ব্যাকরণ অনুযায়ী শুদ্ধ এবং সব ধরনের আনুষ্ঠানিক লেখায় গ্রহণযোগ্য।
উদাহরণ:
– আমি তোমাকে কাল টাকা দিব।
– প্রয়োজনে সাহায্য দিব।
– আমরা সময়মতো উত্তর দিব।
এই রূপে ভাষা হয় প্রমিত, সংক্ষিপ্ত ও ব্যাকরণসম্মত।
“দেবো” রূপের ব্যবহার:
“দেবো” শব্দটি কথ্যভাষায় বহুল ব্যবহৃত, তবে এটি প্রমিত নয়। বাংলাদেশের চলিত ভাষায় মানুষ সাধারণত বলে— “আমি টাকা দেবো”, “আমি খাবো”, “আমি করবো” ইত্যাদি। কিন্তু সাহিত্যিক বা ব্যাকরণিক দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলোর শেষে থাকা “ও” যুক্ত ধ্বনি আসলে কথ্যরীতির সংযোজন, যা লিখিত ভাষায় ব্যবহার করা উচিত নয়।
শুদ্ধতা ও গ্রহণযোগ্যতা:
বাংলা একাডেমির প্রমিত ভাষানীতি অনুযায়ী “দিব” রূপটি সঠিক। “দেবো” রূপটি উচ্চারণের সুবিধার জন্য প্রচলিত হলেও, তা লিখিত বা পরীক্ষার ভাষায় অশুদ্ধ হিসেবে গণ্য হয়।
সংক্ষেপে:
-
দিব = প্রমিত, শুদ্ধ, লিখিত ভাষায় ব্যবহৃত।
-
দেবো = কথ্য, প্রচলিত, কিন্তু প্রমিত নয়।
অতএব, পরীক্ষায় বা আনুষ্ঠানিক লেখায় সঠিকভাবে লিখতে হবে — “আমি টাকা দিব”, “দেবো” নয়।