খাদ্য কী?

Avatar
calender 19-11-2025

যে সমস্ত পদার্থ জীবদেহ গ্রহণ করে শরীর গঠন, বৃদ্ধি, শক্তি উৎপাদন ও দেহের ক্ষয় পূরণে ব্যবহার করে, সেগুলোকে খাদ্য বলে। অর্থাৎ, খাদ্য হলো এমন সব বস্তু যা আমাদের শরীরকে শক্তি দেয়, গঠন করে, বাড়ায় এবং সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। মানুষ, প্রাণী—সব জীবই বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল; খাদ্য ছাড়া কোনো জীব দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারে না।

নিচে খাদ্য সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো তালিকাভুক্তভাবে তুলে ধরা হলো—

  • খাদ্যের সংজ্ঞা:
    যে সব বস্তু জীবদেহ গ্রহণ করে শক্তি পাওয়া, দেহ গঠন, বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ও দেহের ক্ষয় পূরণে ব্যবহার করে, তাকে খাদ্য বলে।

  • খাদ্যের প্রধান কাজ:

    • শক্তি যোগায়: হাঁটা, দৌড়ানো, কথা বলা, পড়াশোনা—সব কাজের শক্তি আসে খাদ্য থেকে।

    • দেহ গঠন করে: হাড়, মাংসপেশি, রক্ত, দাঁত ইত্যাদি গঠনে খাদ্যের পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন।

    • দেহের ক্ষয় পূরণ করে: প্রতিদিন দেহের কোষ নষ্ট হয়; নতুন কোষ গঠনে খাদ্য সাহায্য করে।

    • রোগ প্রতিরোধ করে: উপকারী খাদ্যদ্রব্য শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

  • খাদ্যে থাকা প্রধান পুষ্টি উপাদান:

    • কার্বোহাইড্রেট: শক্তির মূল উৎস (যেমন ভাত, রুটি, আলু)।

    • প্রোটিন: দেহ গঠন ও ক্ষয় পূরণে সাহায্য করে (যেমন মাছ, ডাল, ডিম, মাংস)।

    • চর্বি (ফ্যাট): শক্তির সঞ্চিত উৎস, শরীরকে উষ্ণ রাখে (যেমন তেল, ঘি, বাদাম)।

    • ভিটামিন: দেহের বিভিন্ন রাসায়নিক ক্রিয়ায় সহায়তা করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় (যেমন ফল, সবজি)।

    • খনিজ লবণ: হাড়, দাঁত ও রক্ত গঠনে সাহায্য করে (যেমন ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি)।

    • পানি: দেহের ভেতরে খাদ্য পরিবহন, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও বর্জ্য অপসারণে অপরিহার্য।

  • খাদ্যের প্রকারভেদ (কাজের ভিত্তিতে):

    • শক্তিবর্ধক খাদ্য: ভাত, রুটি, আলু, তেল, চিনি ইত্যাদি।

    • গঠনমূলক খাদ্য: মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল ইত্যাদি।

    • নিয়ামক খাদ্য: ফল, শাক–সবজি, পানি ইত্যাদি—যেগুলো দেহের বিভিন্ন ক্রিয়া ঠিক রাখে।

  • সুষম খাদ্য কীভাবে বুঝব:

    • যখন খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি – সবই প্রয়োজন অনুযায়ী থাকে, তখন তাকে সুষম খাদ্য বলা হয়।

    • সুষম খাদ্য দেহকে সুস্থ, কর্মক্ষম ও রোগমুক্ত রাখতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে।

  • খাদ্যের অভাব ও অতিরিক্ততার ক্ষতি:

    • অভাব: শরীর দুর্বল হওয়া, রক্তশূন্যতা, খর্বাকৃতি, রোগবালাই বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।

    • অতিরিক্ততা ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্য: মোটা হওয়া, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ আরও অনেক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

  • সহজ উদাহরণ:

    • একজন ছাত্র যদি নিয়মিত ভাত, ডাল, সবজি, মাছ/ডিম, ফল ও পর্যাপ্ত পানি খায়, তবে সে সুষম খাদ্য পায় এবং তার পড়াশোনা, খেলাধুলা, দেহের বৃদ্ধি—সবই ভালোভাবে চলতে পারে।

সব মিলিয়ে, খাদ্য হলো জীবদেহের শক্তি, গঠন, বৃদ্ধি ও সুস্থতা বজায় রাখার মূল ভিত্তি, যার সঠিক ও সুষম গ্রহণ ছাড়া কোনো মানুষই সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে না।

আরো পড়ুনঃ পরিবেশের উপাদান গুলো কি কি?

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved