রাদারফোর্ড ও বোর পরমাণু মডেলের পার্থক্য ব্যাখ্যা করো।

Avatar
calender 19-11-2025

পরমাণু নিয়ে বিজ্ঞানের ইতিহাসে অনেক মডেল প্রস্তাব করা হয়েছে। তার মধ্যে রাদারফোর্ড মডেলবোর মডেল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই দুটি মডেলের মধ্যে মূল পার্থক্য বোঝা গেলে আমরা পরমাণুর গঠন ও বৈশিষ্ট্য ভালোভাবে বুঝতে পারি।

১. রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল

  • প্রস্তাবক: আর্নেস্ট রাদারফোর্ড (১৯১১)

  • মূল ধারণা: পরমাণুর কেন্দ্রভাগে একটি ঘন, ধনাত্মক চার্জযুক্ত নিউক্লিয়াস থাকে।

  • ইলেকট্রনের অবস্থান: ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের চারপাশে বিন্যাসহীনভাবে ভ্রমণ করে।

  • সীমাবদ্ধতা: রাদারফোর্ড মডেল ব্যাখ্যা করতে পারেনি কেন ইলেকট্রন নিয়মিত কক্ষপথে থাকে এবং বিকিরণ করতে পারে না

  • মূল উদাহরণ: “সোনার ফয়েল পরীক্ষা” দ্বারা রাদারফোর্ড প্রমাণ করেছিলেন নিউক্লিয়াসের উপস্থিতি।

২. বোরের পরমাণু মডেল

  • প্রস্তাবক: নিলস বোর (১৯১৩)

  • মূল ধারণা: ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের চারপাশে নিয়মিত কক্ষপথে (orbit) অবস্থান করে, যা “স্থায়ী কক্ষপথ” নামে পরিচিত।

  • এনার্জি লেভেল: প্রতিটি কক্ষপথের সাথে একটি নির্দিষ্ট শক্তি স্তর (energy level) যুক্ত থাকে।

  • ফoton নির্গমন: ইলেকট্রন এক কক্ষপথ থেকে অন্য কক্ষপথে চলে গেলে ফোটন নিঃসরণ বা শোষণ করে।

  • সীমাবদ্ধতা: শুধু হাইড্রোজেন পরমাণুর জন্য সঠিকভাবে কাজ করে, ভারী পরমাণুর জন্য পুরোপুরি প্রযোজ্য নয়।

মূল পার্থক্য

বৈশিষ্ট্য রাদারফোর্ড মডেল বোর মডেল
ইলেকট্রনের অবস্থান বিন্যাসহীন নির্দিষ্ট কক্ষপথে
শক্তি স্তর উল্লেখ নেই নির্দিষ্ট শক্তি স্তর থাকে
বিকিরণ সমস্যা ব্যাখ্যা করতে পারে না ব্যাখ্যা করা সম্ভব, ফোটন নির্গমনের মাধ্যমে
প্রযোজ্যতা সব পরমাণুতে মূলত হাইড্রোজেনে কার্যকর

উপসংহার:
রাদারফোর্ড মডেল পরমাণুর কেন্দ্রভাগ নির্ধারণ করেছিল, কিন্তু ইলেকট্রনের কক্ষপথ ও স্থায়িত্ব ব্যাখ্যা করতে পারছিল না। বোর মডেল এই সীমাবদ্ধতা দূর করে ইলেকট্রনের স্থায়ী কক্ষপথ ও শক্তি স্তরের ধারণা যোগ করেছে। তাই, বোর মডেলকে রাদারফোর্ড মডেলের উন্নত সংস্করণ বলা যায়।

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved