বাগযন্ত্র কাকে বলে?
বাগযন্ত্র কাকে বলেঃ বাগযন্ত্র হলো ধ্বনি উচ্চারণের জন্য ব্যবহৃত সমস্ত প্রত্যঙ্গের সমষ্টি। মানবদেহের ফুসফুস থেকে শুরু করে ঠোঁট পর্যন্ত যে প্রত্যঙ্গগুলো ধ্বনি উৎপাদনে কাজ করে, সেগুলোই বাগযন্ত্রের অংশ। প্রতিটি অংশের নিজস্ব ভূমিকা ধ্বনিকে বৈচিত্র্যময় ও স্বচ্ছ করে।
বাগযন্ত্রের প্রধান অংশগুলো:
-
ফুসফুস: ধ্বনি সৃষ্টির জন্য বায়ুপ্রবাহের উৎস। শ্বাস গ্রহণ ও ত্যাগের মাধ্যমে বাতাস বের হয়, যা ধ্বনির মূল উৎস।
-
স্বরযন্ত্র: শ্বাসনালির উপরের অংশে অবস্থিত। বাতাস স্বরযন্ত্রের মধ্য দিয়ে চলে যাওয়ায় ধ্বনি উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে অধিজিহ্বা, স্বররন্ধ্র ও ধ্বনিদ্বার অন্তর্ভুক্ত।
-
জিভ: মুখগহ্বরের নিচে অবস্থান করে। জিভের উচ্চতা, অবস্থান এবং মুখগহ্বরের সঙ্গে স্পর্শের ধরন অনুযায়ী ধ্বনির বৈচিত্র্য তৈরি হয়।
-
আলজিভ: কোমল তালুর পিছনে ঝুলন্ত মাংসপিণ্ড। উচ্চারণের সময় এটি নেমে গেলে কিছু বাতাস নাকের মাধ্যমে বের হয়, যা নাসিক্য ধ্বনি সৃষ্টি করে।
-
তালু: মুখবিবরের ছাদ। শক্ত তালু ও কোমল তালু নিয়ে গঠিত। ধ্বনির ধরন নির্ভর করে তালু ও জিভের স্পর্শের ওপর।
-
মূর্ধা: শক্ত তালু ও উপরের পাটির দাঁতের মধ্যবর্তী উত্তল অংশ। কিছু ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় জিভ মূর্ধার সঙ্গে স্পর্শ করে।
-
দন্তমূল ও দাঁত: জিভের স্পর্শে বেশ কিছু ব্যঞ্জনধ্বনি উৎপন্ন হয়।
-
ওষ্ঠ: বাকপ্রত্যঙ্গের বাইরের অংশ। স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণে গুরুত্বপূর্ণ।
-
নাসিকা: নাকের ছিদ্র দিয়ে বাতাস বের হয়ে ধ্বনি উৎপন্ন হয়, বিশেষ করে নাসিক্য ধ্বনিতে।
বাগযন্ত্রের প্রতিটি অংশ মিলিয়ে ধ্বনি উৎপাদনকে নিখুঁত করে, যা ভাষা শেখা ও উচ্চারণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।