পৃথিবীর সবচেয়ে অপরিষ্কার দেশ কোনটি?

Avatar
calender 14-11-2025

বিশ্বের “সবচেয়ে অপরিষ্কার দেশ” বা উচ্চ মাত্রার পরিবেশ দূষণযুক্ত দেশ নির্ধারণ বেশ জটিল একটি বিষয়, কারণ এখানে শুধুই ময়লা-আবর্জনার পরিমাণ নয়, বরং বায়ু, পানি, মাটি, বর্জ্যব্যবস্থা ও নাগরিক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত পরিমাপকগুলো একত্রে বিবেচনায় আসে। আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী Bangladesh এবং Chad-এর মতো দেশগুলো অত্যন্ত ভুল অবস্থায় রয়েছে। 

কেন বাংলাদেশের মতো দেশগুলো “অপরিষ্কার” দেশের তালিকায় উঠে আসছে?

বাংলাদেশের বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় কয়েকটি মূল কারণ কাজ করছে—

  • শহরে বায়ু দূষণ অত্যাধিক। ২০২৩-২৪-এর সময় বায়ুতে ক্ষুদ্র কণিকার (PM2.5) ঘনত্ব একাধিকবার ইউনাইটেড নেশনস ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের সুপারিশকৃত সীমার অনেক গুণ বেশি হয়েছে।

  • পানি ও ময়লার অব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে আবর্জনা ও রাসায়নিক পদার্থ নদী-খালে ভেসে যায়, যা স্যানিটেশন ও পরিবেশের জন্য হুমকি।

  • দ্রুত নগরায়ন ও শিল্পায়ন হয়েছে- কিন্তু পরিবেশ রক্ষা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ-ব্যবস্থার কাঠামো তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি। ফলে প্লাস্টিক বর্জ্য, ই-বর্জ্য ও অব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ মাটিতে বা জলনালায় জমা হচ্ছে।

“অপরিষ্কার” বলতে শুধু দাগ-ধুলোর বিষয় নয়

এখানে বিষয়টি শুধু দৃশ্যমান ময়লা-আবর্জনা নয়, বরং স্বাস্থ্য, পরিবেশীয় মান, নাগরিক জীবন ও ভবিষ্যতের প্রভাব নিয়েও। যেমন— বায়ু দূষণ দীর্ঘমেয়াদে ফুসফুস, হৃদরোগ ও শরীরের নানা অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে।
সুতরাং কোন দেশকে “অপরিষ্কার” বলা হলে তা মানে হলো- সেখানে পরিবেশগত মান অত্যন্ত নিম্ন, এবং জীবনের বিভিন্ন দিক—জল, বায়ু, মাটি, নাগরিক স্বাস্থ্য—সবই ঝুঁকিতে রয়েছে।

যদিও “সবচেয়ে অপরিষ্কার দেশ” শিরোনাম মজাদার মনে হতে পারে, কিন্তু এটি আসলে একটি সতর্কবাণী। যারা এ রকম তালিকায় উঠে এসেছেন, তাদের সামনে বড় সুযোগ রয়েছে পরিবেশ পুনরোয় ভাবার-কঠোরভাবে পরিকল্পনা করার। বাংলাদেশ যেমন এই চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে, তেমনি এটি পরিবর্তনের পথে এগিয়ে যেতে পারে যদি জনসচেতনতা, শক্তিশালী নীতি ও প্রযুক্তিগত সমাধান একসঙ্গে চলুক। তাই এই শিরোনাম শুধু দৃষ্টিকড়ক নয়, পরিবর্তনের আহ্বানও বটে।

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD