শক্তি কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি?
শক্তি (Energy) হলো কোনো বস্তুর বা সিস্টেমের কাজ করার ক্ষমতা। যখন কোনো বস্তু বল প্রয়োগ করে অন্য বস্তুকে স্থানান্তরিত করে, গতি পরিবর্তন করে বা তার অবস্থায় পরিবর্তন আনে, তখন বলা হয় যে ঐ বস্তুর শক্তি রয়েছে। অর্থাৎ, শক্তি হলো এমন এক মৌলিক গুণ যা দ্বারা কাজ সম্পাদন করা যায়। এটি সৃষ্টি বা ধ্বংস হয় না—বরং এক রূপ থেকে অন্য রূপে পরিবর্তিত হয়। এই নীতি “শক্তির নিত্যতার সূত্র (Law of Conservation of Energy)” নামে পরিচিত।
শক্তির সংজ্ঞা:
যে পরিমাণ কাজ কোনো বস্তুর দ্বারা সম্পন্ন করা যায়, সেটিই তার শক্তি।
গাণিতিকভাবে:
শক্তির প্রকারভেদ ও উদাহরণ:
শক্তিকে মূলত দুই প্রকারে ভাগ করা হয়—
-
(১) যান্ত্রিক শক্তি (Mechanical Energy):
এটি এমন শক্তি যা বস্তুর গতি বা অবস্থানের কারণে থাকে। এটি আবার দুই ভাগে বিভক্ত—-
গতিশক্তি (Kinetic Energy): কোনো বস্তুর গতির কারণে যে শক্তি থাকে।
যেমন— চলন্ত গাড়ি, প্রবাহিত নদী, বাতাসের গতি ইত্যাদি।
সূত্র: -
স্থিতিশক্তি (Potential Energy): কোনো বস্তুর অবস্থান বা অবস্থার কারণে যে শক্তি থাকে।
যেমন— টানটান ধনুক, উঁচু স্থানে রাখা পাথর ইত্যাদি।
সূত্র:
-
-
(২) অযান্ত্রিক শক্তি (Non-Mechanical Energy):
এটি যান্ত্রিক নয়, বরং অন্যান্য ভৌত ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। এর মধ্যে রয়েছে—-
তাপ শক্তি (Heat Energy): দেহের কণাগুলোর গতির কারণে উৎপন্ন শক্তি, যেমন আগুনের তাপ।
-
আলোক শক্তি (Light Energy): সূর্য, বাতি বা আগুন থেকে নির্গত শক্তি।
-
রাসায়নিক শক্তি (Chemical Energy): খাদ্য, জ্বালানি বা ব্যাটারির ভেতর সঞ্চিত শক্তি।
-
বৈদ্যুতিক শক্তি (Electrical Energy): ইলেকট্রনের গতির কারণে উৎপন্ন শক্তি, যা ঘরবাড়ি ও শিল্পে ব্যবহৃত হয়।
-
পরমাণবিক শক্তি (Nuclear Energy): পরমাণুর কেন্দ্রক ভেঙে বা যুক্ত হয়ে যে বিপুল শক্তি নির্গত হয়।
-
সারসংক্ষেপ:
সব শক্তিই একে অপরের মধ্যে রূপান্তরিত হতে পারে— যেমন বৈদ্যুতিক শক্তি থেকে তাপ শক্তি, রাসায়নিক শক্তি থেকে যান্ত্রিক শক্তি ইত্যাদি। তাই বলা যায়, শক্তি হলো প্রকৃতির কাজ সম্পাদনের মূল চালিকা শক্তি।