সরকারি নোট কয়টি?
বাংলাদেশের মুদ্রা ব্যবস্থায় দুটি প্রধান ধরণের কাগজের অর্থ প্রচলিত রয়েছে—একটি হলো বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত নোট, আরেকটি হলো সরকারি ট্রেজারি নোট। সরকারি নোট হলো সরকারের নিজস্ব দায়ে ইস্যু করা অর্থ, যা দেশের অর্থনৈতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সীমিতভাবে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ৩ প্রকার সরকারি নোট প্রচলিত আছে, যা দেশের ইতিহাস, অর্থনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। নিচে এই বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।
প্রধান তথ্যসমূহ:
-
সরকারি নোটের সংখ্যা: বর্তমানে বাংলাদেশে ৩টি সরকারি নোট প্রচলিত আছে।
-
ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষ: এসব নোট ইস্যু করে বাংলাদেশ সরকার, তবে তা ছাপানো ও প্রচলনের দায়িত্বে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক।
-
আইনি অবস্থান: সরকারি নোটগুলিকে legal tender অর্থাৎ আইনত বৈধ মুদ্রা হিসেবে গণ্য করা হয়, এবং এগুলো সরকারি কোষাগার ও ব্যাংকে গ্রহণযোগ্য।
-
প্রচলিত মূল্যমান: সরকারি নোট তিনটি হলো —
-
১ টাকার নোট
-
২ টাকার নোট
-
৫ টাকার নোট
এই তিনটি নোটই সরকারের দায়ে ইস্যুকৃত এবং সাধারণত খুচরা লেনদেনের কাজে ব্যবহৃত হয়।
-
-
বাংলাদেশ ব্যাংক নোট থেকে পার্থক্য:
-
সরকারি নোটে অর্থমন্ত্রীর স্বাক্ষর থাকে,
-
আর বাংলাদেশ ব্যাংক নোটে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের স্বাক্ষর।
-
এছাড়া সরকারি নোটে লেখা থাকে “Government of the People’s Republic of Bangladesh”, যেখানে ব্যাংক নোটে লেখা থাকে “Bangladesh Bank”।
-
-
ইতিহাস ও সূচনা: স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব নামে সরকারি নোট ইস্যু করে। প্রাথমিকভাবে ১, ২ ও ৫ টাকার নোট বাজারে আনা হয়, যা তখন দৈনন্দিন লেনদেনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
ব্যবহারিক গুরুত্ব:
-
এই নোটগুলো ছোট পরিসরের লেনদেন ও খুচরা বাজারে ব্যবহৃত হয়।
-
সরকার সরাসরি দায়ভার বহন করায়, এগুলো অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত।
-
-
ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য:
-
সরকারি নোটে জাতীয় প্রতীক, যেমন জাতীয় ফুল শাপলা, জাতীয় প্রাণী রয়েল বেঙ্গল টাইগার, বা জাতির জনকের প্রতিকৃতি থাকে।
-
এতে জলছাপ, সিকিউরিটি থ্রেড, মাইক্রো প্রিন্টিং ইত্যাদি আধুনিক নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয়।
-
-
মুদ্রা ব্যবস্থায় ভূমিকা:
যদিও সরকারি নোটের ব্যবহার বর্তমানে কিছুটা সীমিত, তবুও এগুলো দেশের মুদ্রা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এগুলোর অস্তিত্ব বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্ব ও সরকারের আর্থিক স্বাধীনতার প্রতীক।
বাংলাদেশে সরকারি নোটের এই তিনটি মূল্যমানের নোট এখনও কার্যকর ও বৈধ, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে টিকে আছে।