সফটওয়্যার পাইরেসি কি?

Avatar
calender 10-11-2025

সফটওয়্যার পাইরেসি বলতে মূলত এমন একটি অনৈতিক কাজকে বোঝায়, যেখানে কারও তৈরি করা সফটওয়্যার অনুমতি ছাড়া কপি, ব্যবহার বা বিক্রি করা হয়। এটি তথ্যপ্রযুক্তির জগতে একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়, কারণ এতে সফটওয়্যার নির্মাতার মেধাস্বত্ব ও আর্থিক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে ডিজিটাল যুগে সফটওয়্যার পাইরেসি একটি বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা শুধু সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকেই নয়, সাধারণ ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলছে।

সংজ্ঞা: কোন সফটওয়্যার প্রস্তুতকারকের অনুমতি ছাড়াই তার তৈরি প্রোগ্রাম কপি, বিক্রি, বিতরণ বা পরিবর্তন করে নিজের নামে চালানোকে Software Piracy বলা হয়। অর্থাৎ এটি হলো অন্যের মেধাস্বত্ব চুরি করার এক প্রকার প্রযুক্তিগত অপরাধ।

মূল উদ্দেশ্য: সাধারণত অর্থ সাশ্রয় বা অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে মানুষ পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করে। তবে এর মাধ্যমে সফটওয়্যার ডেভেলপাররা তাদের ন্যায্য আয় থেকে বঞ্চিত হন।

পাইরেসির ধরন:

    • Softlifting: একজন ব্যবহারকারী একটি সফটওয়্যার কিনে সেটি একাধিক কম্পিউটারে ইনস্টল করে।

    • Counterfeiting: মূল সফটওয়্যারের নকল সংস্করণ তৈরি করে বিক্রি করা।

    • Internet Piracy: ইন্টারনেটের মাধ্যমে অবৈধভাবে সফটওয়্যার ডাউনলোড বা শেয়ার করা।

    • Hard Disk Loading: কম্পিউটার বিক্রেতারা নতুন কম্পিউটারে অবৈধ সফটওয়্যার ইনস্টল করে বিক্রি করেন।

    আইনগত দিক: বাংলাদেশে “কপিরাইট আইন ২০০০” অনুযায়ী সফটওয়্যার পাইরেসি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে WIPO (World Intellectual Property Organization) এবং BSA (Business Software Alliance) সফটওয়্যার পাইরেসি রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

    পাইরেসির ক্ষতি:

      • সফটওয়্যার নির্মাতারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন।

      • ব্যবহারকারীরা ভাইরাস, ম্যালওয়্যার ও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েন।

      • দেশীয় আইটি শিল্পের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি হয়।

      • আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।

      প্রতিরোধের উপায়:

        • শুধুমাত্র লাইসেন্সকৃত সফটওয়্যার ব্যবহার করা।

        • সচেতনতা বৃদ্ধি ও ডিজিটাল নৈতিকতা শিক্ষার প্রসার ঘটানো।

        • আইনি ব্যবস্থা জোরদার করা এবং সফটওয়্যার ডেভেলপারদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

        • কোম্পানিগুলোতে অডিট সিস্টেম চালু করে অবৈধ সফটওয়্যার ব্যবহারের নজরদারি করা।

      সারসংক্ষেপে বলা যায়, সফটওয়্যার পাইরেসি হলো মেধাস্বত্ব লঙ্ঘনের এক গুরুতর অপরাধ, যা শুধু আইনভঙ্গ নয় বরং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্যও বড় বাধা। তাই নৈতিক দায়িত্ব ও আইনি সচেতনতার মাধ্যমে সবাইকে সফটওয়্যার পাইরেসি প্রতিরোধে এগিয়ে আসা উচিত।

      © LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

      Developed by WiztecBD