আপেক্ষিক ত্রুটি কাকে বলে? 

Avatar
calender 10-11-2025

যে কোনো পরিমাপে নির্ভুল ফলাফল পাওয়া সবসময় সম্ভব হয় না। বাস্তবে আমরা যে ফলাফল পাই, তাতে কিছুটা ত্রুটি থেকে যায়। এই ত্রুটি কখনো বেশি, কখনো কম হতে পারে। কিন্তু পরিমাপের মানের সঙ্গে ত্রুটির তুলনা করলে আমরা একটি ধারণা পাই যে ফলাফলটি কতটা নির্ভরযোগ্য। এই তুলনাকেই বলা হয় আপেক্ষিক ত্রুটি। এটি মূলত পরিমাপের নির্ভুলতা নির্ধারণে ব্যবহৃত হয় এবং বিজ্ঞানে এর গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি।

মূল তথ্যাবলি:

  • সংজ্ঞা: আপেক্ষিক ত্রুটি হলো একটি পরিমাপের গড় ত্রুটি এবং প্রকৃত বা আসল মানের অনুপাত।

  • গাণিতিক প্রকাশ:
    আপেক্ষিক ত্রুটি = (পরম ত্রুটি / প্রকৃত মান)

  • চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ: যদি Δx হয় পরম ত্রুটি এবং X হয় প্রকৃত মান, তবে
    Relative Error = Δx / X

  • একক: আপেক্ষিক ত্রুটির কোনো একক নেই, কারণ এটি দুইটি একই ধরনের রাশির অনুপাত।

  • শতকরা আপেক্ষিক ত্রুটি: যখন আপেক্ষিক ত্রুটিকে ১০০ দ্বারা গুণ করা হয়, তখন একে শতকরা আপেক্ষিক ত্রুটি বলা হয়।
    অর্থাৎ,
    শতকরা আপেক্ষিক ত্রুটি = (Δx / X) × 100%

  • উদাহরণ: যদি কোনো দণ্ডের প্রকৃত দৈর্ঘ্য ১০০ সেন্টিমিটার হয় এবং পরিমাপিত দৈর্ঘ্য হয় ৯৮ সেন্টিমিটার, তবে
    পরম ত্রুটি = |100 - 98| = 2 সেমি
    আপেক্ষিক ত্রুটি = 2 / 100 = 0.02
    শতকরা আপেক্ষিক ত্রুটি = 0.02 × 100 = 2%
    অর্থাৎ, পরিমাপে ২% আপেক্ষিক ত্রুটি আছে।

  • ব্যবহার: আপেক্ষিক ত্রুটি ব্যবহার করা হয় বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা, প্রকৌশল পরিমাপ, এবং বিভিন্ন গাণিতিক বিশ্লেষণে। এটি নির্ধারণ করতে সাহায্য করে যে ফলাফল কতটা নির্ভরযোগ্য বা মানসম্পন্ন।

  • গুরুত্ব:

    • এটি মাপের গুণমান নির্দেশ করে।

    • দুটি ভিন্ন পরীক্ষার নির্ভুলতা তুলনা করতে সাহায্য করে।

    • ছোট আপেক্ষিক ত্রুটি মানে পরিমাপটি নির্ভুল, আর বড় মানে ত্রুটিপূর্ণ।

  • বিশেষ দ্রষ্টব্য: আপেক্ষিক ত্রুটি সবসময় ধনাত্মক ধরা হয়, কারণ এটি ত্রুটির মান নির্দেশ করে, দিক নয়।

সুতরাং, আপেক্ষিক ত্রুটি হলো এমন একটি অনুপাত যা দ্বারা বোঝা যায় একটি পরিমাপের ত্রুটি প্রকৃত মানের তুলনায় কতটা। এটি বিজ্ঞান ও গণিতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, কারণ এর মাধ্যমে আমরা পরীক্ষার ফলাফলের নির্ভুলতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ধারণ করতে পারি।

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD