বাংলাদেশের উপকূলীয় সমভূমিতে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী যে ধরনের বন্যা কবলিত হয় তার নাম -
A
নদীজ বন্যা
B
আকস্মিক বন্যা
C
বৃষ্টিজনিত বন্যা
D
জলোচ্ছ্বাসজনিত বন্যা
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশে বন্যা একটি খুব পরিচিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সাধারণভাবে বলা যায়, নদীর পানি যখন দু’পারের এলাকা ছাড়িয়ে আশেপাশের গ্রাম, শহর, বন্দর ও বাড়িঘর প্লাবিত করে এবং বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ফসল ধ্বংস করে, তখন সেই পরিস্থিতিকেই বন্যা বলা হয়। বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছরই দেশের অনেক অঞ্চল বন্যায় আক্রান্ত হয়।
বন্যার ধরন ও প্রকৃতি অনুযায়ী এটিকে মূলত চারটি ভাগে ভাগ করা যায়:
মৌসুমী বন্যা
-
বর্ষার সময় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে যে বন্যা হয়, তাকে মৌসুমী বন্যা বলা হয়।
-
কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের জন্য এটি সাধারণত বড় ক্ষতি করে না, তবে মাঝে মাঝে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
-
যদি মৌসুমী বন্যার মাত্রা স্বাভাবিক হয়, তবে এটি ফসল উৎপাদনে সহায়ক হতে পারে।
আকস্মিক বন্যা
-
বর্ষার বাইরে হঠাৎ বৃষ্টি বা পাহাড়ি ঢলের কারণে যে বন্যা হয়, তাকে আকস্মিক বন্যা বলা হয়।
-
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে এ ধরনের বন্যা বেশি ঘটে।
-
বিশেষ করে বোরো মৌসুমে এটি হলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
জলোচ্ছ্বাসজনিত বন্যা
-
উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছাসের ফলে যে বন্যা হয়, তাকে জলোচ্ছ্বাসজনিত বন্যা বলা হয়।
-
এই ধরনের বন্যার পানি সাধারণত ৩–৬ মিটার উঁচু হয় এবং ভূ-ভাগের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেয়।
-
জলোচ্ছ্বাসজনিত বন্যার স্থায়িত্ব তুলনামূলকভাবে কম হয়।
নগর বন্যা
-
শহরাঞ্চলে সঠিক ও পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকলে বর্ষার সময় ভারী বৃষ্টির কারণে বন্যা দেখা দেয়।
-
ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোতে এ ধরনের বন্যা বেশি ঘটে।
উৎস: বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, নবম-দশম শ্রেণি
0
Updated: 1 month ago
কোন পর্যায়ে দুর্যোগের ক্ষতি মূল্যায়ন করা হয়?
Created: 1 month ago
A
উদ্ধার পর্যায়ে
B
প্রভাব পর্যায়ে
C
সতর্কতা পর্যায়ে
D
পুনর্বাসন পর্যায়ে
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
সাধারণভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বলতে বোঝায়—দুর্যোগের আগে ও পরে এমন সব পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে ক্ষয়ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা যায়। যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, তাই ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
নতুবা দুর্যোগে সবকিছু হারিয়ে মানুষের জীবন হয়ে ওঠে অত্যন্ত কষ্টকর। এজন্যই আজকের বিশ্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য
১. দুর্যোগকালে জীবন, সম্পদ ও পরিবেশের ক্ষতি কমানো বা সম্ভব হলে এড়ানো।
২. ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ত্রাণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সহায়তা দেওয়া।
৩. দুর্যোগ পরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা চক্র (Disaster Management Cycle)
এই চক্রকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা যায়—
ক. দুর্যোগ-পূর্ব ঝুঁকি হ্রাস পর্যায়
খ. দুর্যোগ-পরবর্তী পুনরুদ্ধার পর্যায়
‘‘পুনর্বাসন’’ বলতে বোঝায়—
-
ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো মেরামত বা আরও উন্নত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।
-
ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে দেওয়া এবং তাদের সংগঠিতভাবে সক্ষম করে তোলা।
-
প্রয়োজনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে অন্যত্র স্থানান্তর করে তাদের জীবিকা নিশ্চিত করা।
-
ক্ষতিগ্রস্ত গবাদিপশু, মাছ ইত্যাদির চিকিৎসা ও খামার পুনর্গঠন করা।
-
পুকুর, খাল, নদী, জলাশয়ে মৃত প্রাণী ও ময়লা দ্রুত অপসারণ করা এবং পানি বিশুদ্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ।
-
এলাকায় জমে থাকা জীবাণু, দুর্গন্ধ ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে পরিবেশকে বিষাক্ততা থেকে মুক্ত রাখা।
উৎস: ভূগোল দ্বিতীয় পত্র, এসএসসি প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
0
Updated: 1 month ago
২০০৪ সালের ভয়ংকর সুনামি ঢেউয়ের গতি ছিল ঘণ্টায় -
Created: 2 months ago
A
১০০-২০০ কি.মি
B
৩০০-৪০০ কি.মি
C
৭০০-৮০০ কি.মি
D
৯০০-১০০০ কি.মি
২০০৪ সালের ভয়ংকর সুনামি
-
২৬ ডিসেম্বর ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী ১৪টি দেশে ইতিহাসের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক সুনামি আঘাত হানে।
-
সুনামির উৎপত্তি হয় ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ সুমাত্রার ১০০ মাইল পশ্চিমে সমুদ্রের প্রায় ১৯ মাইল নিচে, যেখানে ৯.৩ মাত্রার এক ভূমিকম্প ঘটে।
-
এই ভূমিকম্প ৮–১০ মিনিট ধরে স্থায়ী হয় এবং শক্তিতে হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে প্রায় ২৩,০০০ গুণ বেশি ছিল।
-
সুনামির ঢেউ ঘণ্টায় ৭০০–৮০০ কিলোমিটার গতি ছাড়িয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসে।
-
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে শুরু করে সুদূর আফ্রিকার কিছু উপকূল পর্যন্ত এই ভয়ংকর সুনামি আঘাত হানে, কিছু স্থানে ঢেউ প্রায় ১০০ ফুট উঁচু হয়ে উপকূলে আছড়ে পড়ে।
উৎস: Britannica
1
Updated: 2 months ago
পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই কোন দুর্যোগ সংঘটিত হয়?
Created: 2 months ago
A
বন্যা
B
খরা
C
ভূমিকম্প
D
ঘূর্ণিঝড়
• পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই সংঘটিত হয়- ভূমিকম্প।
-----------------
• ভূমিকম্প:
- ভূ-অভ্যন্তরে আকস্মিক সৃষ্ট কম্পনের দরুণ আকস্মিকভাবে ভূমির যে কম্পন হয় তাকে ভূমিকম্প বলে।
- কোন ধরনের আগাম সতর্ক সংকেত ব্যতীত অর্থাৎ কার্যকর পূর্বাভাস ছাড়া সংঘটিত দুর্যোগ হলো ভূমিকম্প।
- ভূমিকম্প সংঘটনের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল চিহ্নিত করা সম্ভব হলেও ভূমিকম্প সংঘটনের পূর্বে সতর্কতা প্রাপ্তি এখনো সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে,
- বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ও শৈত্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে পূর্বাভাস পাওয়া যায়।
----------------------------------
• আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- ১৯৯৩ সালে সমগ্র বাংলাদেশকে তিনটি ভূমিকম্পনীয় সংঘটিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে।
- মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ (উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল), মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ (মধ্য অঞ্চল) এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ (দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল)।
- ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় নদীর গতিপথ পাল্টে যায়।
যেমন, ১৭৮৭ সালে আসামে (ডাউকি ফন্ট) যে ভূমিকম্প হয় তাতে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তলদেশ কিছুটা উচু হয় ফলে তার গতিপথ পাল্টে গিয়ে যমুনা নদী দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে।
- ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্রের নাম সিসমোগ্রাফ।
- ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণায়ক যন্ত্রের নাম রিখটার স্কেল।
তথ্যসূত্র: ভূগোল ও পরিবেশ- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিজ্ঞান, নবম-দশম শ্রেণি।
0
Updated: 2 months ago