'ত্রিনয়ন' শব্দে 'ন' ব্যবহৃত হওয়ার কারণ কী?
A
এটি তদ্ভব শব্দ
B
এটি দেশি শব্দ
C
এটি সমাসবদ্ধ শব্দ
D
এটি বিদেশি শব্দ
উত্তরের বিবরণ
• "ণ-ত্ব বিধান":
বাংলা ভাষায় বহু তৎসম বা সংস্কৃত শব্দে মূর্ধন্য-ণ এবং দন্ত্য-ন এর ব্যবহার রয়েছে। এগুলো বাংলা বানানেও অবিকৃতভাবে রক্ষিত হয়।
এখানে:
-
তৎসম শব্দের বানানে ণ-এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ণ-ত্ব বিধান।
-
ট-বর্গীয় ধ্বনির আগে তৎসম শব্দে সব সময় 'ণ' ব্যবহৃত হয়।
-
ঋ, র, ষ এর পরে 'ণ' বসে।
যেসকল ক্ষেত্রে ণ-ত্ব বিধান প্রযোজ্য নয়:
১. সমাসবদ্ধ শব্দে সাধারণত ণ-ত্ব বিধান খাটে না। এরূপ ক্ষেত্রে ‘ন’ হয়। যেমন- ত্রিনয়ন, সর্বনাম ইত্যাদি।
২. ত-বর্গীয় বর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয় ন কখনো (ণ হয় না)। যেমন- অন্ত, গ্রন্থ ইত্যাদি।
৩. বাংলা (দেশি), তদ্ভব ও বিদেশি শব্দের বানানে 'ণ' লেখার প্রয়োজন হয় না।
উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম-দশম শ্রেণি (সংস্করণ ২০১৯)
0
Updated: 1 month ago
কাকে 'চলিষ্ণু অভিধান' বলা হয়?
Created: 2 weeks ago
A
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
B
চন্দ্রকুমার দে
C
দীনেশচন্দ্র সেন
D
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের এক অসাধারণ বাঙালি ব্যক্তিত্ব— একজন বহুভাষাবিদ, বিশিষ্ট শিক্ষক, দার্শনিক ও গবেষক। তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যচর্চায় যুগান্তকারী অবদান রাখেন এবং ভাষাতত্ত্বে তাঁর অনুসন্ধানমূলক কাজ তাঁকে সর্বজনস্বীকৃত মর্যাদা এনে দেয়।
জীবনপরিচয়:
-
জন্ম: ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই, পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে।
-
তিনি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি গভীর অনুরাগী একজন গবেষক ছিলেন।
-
ভাষা, সাহিত্য ও দর্শনের গভীর অধ্যয়নের জন্য তিনি ‘জ্ঞানতাপস’ নামে পরিচিতি পান।
-
তাঁকে আরও বলা হয় ‘চলিষ্ণু অভিধান’, কারণ তিনি অসংখ্য ভাষায় পারদর্শী ছিলেন এবং তাঁর জ্ঞানের পরিধি ছিল অত্যন্ত বিস্তৃত।
ভাষা ও জাতিসত্তা বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গি:
-
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তাঁর একটি বিখ্যাত উক্তি আজও স্মরণীয়—
“আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।”
এই বক্তব্যে তিনি ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে জাতিসত্তার ঐক্য ও মানবতার বার্তা প্রকাশ করেছিলেন।
গবেষণা ও সাহিত্যকর্ম:
-
১৯৫৯ সালে তিনি রচনা করেন অমূল্য ভাষাতাত্ত্বিক গ্রন্থ ‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’, যা বাংলা ভাষার উৎপত্তি, বিকাশ ও ধ্বনিগত বিশ্লেষণে এক প্রামাণ্য দলিল।
-
তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনাসমূহ:
-
ভাষা ও সাহিত্য
-
বাঙ্গালা ব্যাকরণ
-
বাংলা সাহিত্যের কথা
-
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস
-
অন্যান্য অবদান:
-
তিনি বাংলা একাডেমির ‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’ সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন, যা বাংলা উপভাষার সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
0
Updated: 2 weeks ago
'রুখের তেন্তুলি কুমীরে খাই’--এর অর্থ কী?
Created: 1 month ago
A
তেজি কুমিরকে রুখে দিই
B
বৃক্ষের শাখায় পাকা তেঁতুল
C
গাছের তেঁতুল কুমিরে খায়
D
ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হয়
চর্যাগীতির মধ্যে কিছু গান কাব্যিক এবং তান্ত্রিক দিক নির্দেশ করে। কুক্কুরীপার রচিত চর্যাগীতি এই ধারার উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। তাঁর রচনাগুলোতে সমাজ, দৈনন্দিন জীবন এবং আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা একসাথে ফুটে ওঠে।
কুক্কুরীপা সম্পর্কিত তথ্য:
-
কুক্কুরীপা চর্যাগীতির তিনটি গান রচয়িতা (২, ২০, ৪৮ নম্বর)।
-
৪৮ সংখ্যক গানের একটি পুথি বর্তমানে লুপ্ত।
-
তিনি উচ্চবংশীয় ছিলেন বলে ধারণা করা হয়; তাঁর চর্যার ভাষা এ কথা নির্দেশ করে।
-
কুক্কুরীপা তান্ত্রিক নাম বা ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন; নামের সঙ্গে 'পা' যুক্ত থাকায় কেউ কেউ এটিকে গুরুপ্রতি শ্রদ্ধাসূচক ছদ্মনাম মনে করেন।
-
তারানাথের মতে, তাঁর সঙ্গে সবসময় একটি কুক্কুরী থাকত, এ থেকেই নামকরণ হয়েছে কুক্কুরীপা।
-
ধারণা করা হয়, তিনি বাংলার উত্তরখণ্ডের অধিবাসী ছিলেন। হিন্দিভাষীরা তাঁকে কপিলাবস্তু বা বুদ্ধের জন্মস্থান নেপালের লোক বলেছেন।
-
সংস্কৃত রচনা ‘মহামায়াসাধন’-এর রচয়িতা হিসেবে কুক্কুরীপার নাম পাওয়া গেছে, যা থেকে বোঝা যায় তিনি মহামায়ার উপাসক ছিলেন।
-
ড. শহীদুল্লাহর মতে, কুক্কুরীপা ৭৪০–৮২০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে জীবিত ছিলেন। ধারণা করা হয়, ৮০৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজা ধর্মপালের শাসনামলে তিনি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিলেন।
-
তাঁর রচিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে:
-
যোগভাবনাপ্রদেশ
-
স্রবপরিচ্ছদ
-
কুক্কুরীপার চর্যারপদসমূহ (মূল চর্যা ও আধুনিক গদ্যে অনুবাদ):
১. দুলি দুহি পীঢ়া' ধরণ ন জাই। রুখের তেন্তলি কুম্ভীরে খাই'।
-
মাদি কচ্ছপ দোহন করে দুগ্ধ-পাত্রে, দুধ ধরানো গেল না। গাছের তেঁতুল কুমিরে খায়।
২. আঙ্গন ঘরপণ সুন ভো বিআতী। কানেট চোরে নিল অধরাতী। -
ওগো প্রসূতি, ঘরের কাছে আঙিনা। অর্ধরাতে চোর কানপাশা নিয়ে গেল।
৩. সসুরা নিদ গেল বহুড়ী জাগই'। কানেট চোরে নিল কা গই মাগই। -
শ্বশুর নিদ্রা গেল, বধূ রইল জেগে। কানপাশা চোরে নিলে কার কাছে মাগা যায়?
৪. দিবসহি' বহুড়ী কাউহি' ডর' ভাই'। রাতি ভইলে কামরু জাই। -
দিনে বধূ কাকের ভয়ে ভীত হয়। রাত হলে কামরাজ্যে বা কামরূপে যায়।
৫. অইসনী” চর্যা কুকুরীপাত্র গাইল"। কোড়ি মাঝে একু হিঅহি" সমাইল। -
এমন চর্যা কুক্কুরীপা গাইলেন। কোটির মধ্যে একের চিত্তে তা প্রবেশ করল।
0
Updated: 1 month ago
'নয়-ছয়' বাগ্ধারার অর্থ-
Created: 1 month ago
A
অবজ্ঞা করা
B
অপচয়
C
তুচ্ছ জ্ঞান করা
D
ন্যাকামি করা
বাংলা বাগ্ধারা ও প্রবাদে মানুষের অভ্যাস, আচরণ ও সামাজিক বাস্তবতা সুন্দরভাবে প্রকাশ পায়। নিচে কয়েকটি বাগ্ধারার অর্থ ও একটি উদাহরণ দেওয়া হলো—
-
নয়-ছয় অর্থ অপচয় বা বিশৃঙ্খল অবস্থা।
বাক্য: সবগুলো টাকা নয়-ছয় করে উড়িয়ে দিও না, কিছু টাকা অন্তত সঞ্চয় কর। -
নাক সিঁটকানো অর্থ অবজ্ঞা করা।
-
নকড়া ছকড়া করা অর্থ তুচ্ছ জ্ঞান করা।
-
আদিখ্যেতা অর্থ ন্যাকামি বা অতিরিক্ত ভণিতা।
উৎস:
0
Updated: 1 month ago