চর্যাপদে কোন ধর্মমতের কথা আছে?
A
খ্রিস্টধর্ম
B
প্যাগনিজম
C
জৈনধর্ম
D
বৌদ্ধধর্ম
উত্তরের বিবরণ
চর্যাপদ ও বৌদ্ধধর্ম
-
চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন। এটি মূলত বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ/কবিতা বা গানের সংকলন।
-
চর্যাগুলো লিখেছিলেন বৌদ্ধ সহজিয়ারা, তাই এতে বৌদ্ধধর্ম ও তাদের ধর্মমতের উল্লেখ পাওয়া যায়।
-
১৯০৭ সালে ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজদরবার গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন।
-
পরে ১৯৩৮ সালে প্রবোধচন্দ্র বাগচী চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ উদ্ধার করেন, যা অনুবাদ করেছিলেন কীর্তিচন্দ্র।
-
বাংলা সাহিত্যের আদি যুগে লিখিত একমাত্র নিদর্শন হিসেবেই চর্যাপদকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপডিয়া।

0
Updated: 1 month ago
সবচেয়ে বেশি চর্যাপদ পাওয়া গেছে কোন কবির?
Created: 2 months ago
A
লুইপা
B
শবরপা
C
ভুসুকুপা
D
কাহ্নপা
কাহ্নপা এবং চর্যাপদে কবিদের অবদান
-
চর্যাপদের কবিদের মধ্যে কাহ্নপা সবচেয়ে বেশি পদ রচনা করেছেন।
-
তিনি মোট ১৩টি পদ রচনা করেছেন। এই সংখ্যার কারণে কাহ্নপাকে চর্যাপদের প্রধান কবি এবং সিদ্ধাচার্যদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বলা হয়।
-
কাহ্নপা রচিত পদগুলো হলো: ৭, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৮, ১৯, ২৪, ৩৬, ৪০, ৪২ ও ৪৫। তবে ২৪ নং পদটি আজ পাওয়া যায়নি।
-
তাঁর পদগুলোতে দূরদর্শী সমাজচিত্র এবং নিপুণ কবিত্ব শক্তি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
-
চর্যাপদে কাহ্নপা বিভিন্ন নামে লিখেছেন, যেমন: কাহ্নিল, কাহ্নি, কৃষ্ণচর্য, কৃষ্ণবজ্রপাদ এবং কাহ্নু।
অন্য কবিদের অবদান:
-
ভুসুকুপা: চর্যাপদের দ্বিতীয় সর্বাধিক পদ রচনা করেছেন, মোট ৮টি পদ।
-
শবরপা: ২৮ ও ৫০ নং দুটি পদ রচনা করেছেন।
-
লুইপা: ১ ও ২৯ নং দুটি পদ রচনা করেছেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 2 months ago
৮) হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে চর্যাপদের ভাষা কেমন?
Created: 2 months ago
A
সরল ও বোধগম্য
B
পূর্ণরূপে অন্ধকার
C
আলো আঁধারি ভাষা
D
সর্বজনবোধ্য ভাষা
চর্যাপদের ভাষা — সন্ধ্যাভাষা
সন্ধ্যাভাষা কী
-
চর্যাপদের ভাষাকে কেউ কেউ সন্ধ্যাভাষা বা সন্ধাভাষা বলেছেন।
-
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চর্যার ভাষা সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন—
“আলো আঁধারি ভাষা, কতক আলো, কতক অন্ধকার, খানিক বুঝা যায়, খানিক বুঝা যায় না। যাঁহারা সাধন-ভজন করেন, তাঁহারাই সে কথা বুঝিবেন, আমাদের বুঝিয়া কাজ নাই।”
এই কারণেই তিনি একে সন্ধ্যাভাষা বলেছেন। -
তবে তত্ত্বজ্ঞানীদের কাছে চর্যার ভাষা অবোধ্য নয়, তাই এই ব্যাখ্যা সর্বজনীনভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।
অন্য মতামত ও ব্যবহার
-
মুনিদত্ত তাঁর টীকায় সন্ধাভাষ, সন্ধাভাষা, সন্ধ্যাবচন, সন্ধ্যাসংকেত, সন্ধ্যা, ও ব্যাজ—এই শব্দগুলো চর্যার রূপকাশ্রিত দুর্বোধ্য অংশ বা প্রতীকী ভাষার ব্যাখ্যায় বারবার ব্যবহার করেছেন।
-
কারও মতে, ‘সন্ধ্যাদেশ’ নামে পরিচিত বিশেষ অঞ্চলের ভাষার সঙ্গে চর্যাপদের ভাষার মিল থাকায় এই নাম হয়েছে।
-
তিব্বতি ভাষায় সন্ধ্যাভাষা বলতে বোঝায়—প্রহেলিকাচ্ছলে প্রকাশিত দুরূহ তত্ত্বের ব্যাখ্যা।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম

0
Updated: 2 months ago
চর্ষাপদের কোন কবি নিজেকে বাঙালী বলে পরিচয় দিয়েছেন?
Created: 1 week ago
A
লুই পা
B
কুকুরী
C
কাহ্ন পা
D
ভুসুকুপা
উক্ত পঙ্ক্তি— “আজি ভুসুকু বঙ্গালী ভইলী, নিঅ ঘরিণী চণ্ডালে লেলী” — চর্যাপদ থেকে গৃহীত, যা ভুসুকু পাদ নামক সিদ্ধাচার্য রচিত। এই পঙ্ক্তির ভিত্তিতে গবেষকেরা মনে করেন, ভুসুকু ছিলেন একজন বাঙালি কবি, কারণ তিনি নিজেই এখানে “বঙ্গালী ভইলী” বলে উল্লেখ করেছেন।
-
পঙ্ক্তিটির অর্থ হলো— “আজ ভুসুকু বাঙালি হয়ে গেল; চণ্ডাল ঘরিণীকে (স্ত্রীকে) গ্রহণ করল।”
-
এখানে কবি আত্ম-উপলব্ধি ও সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীকী প্রকাশ ঘটিয়েছেন।
-
“বাঙালি ভইলী” কথাটি তাঁর নিজস্ব জাতিগত বা আঞ্চলিক পরিচয়ের ইঙ্গিত দেয়, যা তাঁকে বাংলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে।
-
চর্যাগানের প্রেক্ষাপটে এই পঙ্ক্তি ধর্মীয় সাধনার গূঢ়তত্ত্বও প্রকাশ করে— এখানে চণ্ডাল ঘরিণী বৌদ্ধ তন্ত্রে অশুদ্ধ বা নিষিদ্ধের মধ্য দিয়ে মুক্তির সন্ধান বোঝায়।
-
ফলে এই উক্তি সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক এবং তাত্ত্বিক— তিন দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি চর্যাগানের অন্যতম প্রাচীন বাঙালি কবি পরিচয়ের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত।

0
Updated: 1 week ago