বহুব্রীহি সমাস হলো এমন একটি সমাস, যেখানে সমাসবদ্ধ পদ দুটির অর্থ সরাসরি বোঝানো হয় না; বরং এই সমাস অন্য কিছুর বা অন্য ব্যক্তির নির্দেশ করে। অর্থাৎ, সমাসের মিশ্র অর্থ নয়, বরং এতে ইঙ্গিত থাকে এক বহিরাগত বিষয়ের প্রতি।
🔸 সংজ্ঞা:
যে সমাসে পূর্বপদ ও পরপদের সম্মিলিত অর্থ অন্য কিছুর ইঙ্গিত দেয়, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে।
📘 উদাহরণ:
-
চতুরানন = চারটি মুখ যাঁর — বোঝানো হয়েছে ব্রহ্মাকে।
-
ত্রিনয়ন = তিনটি চোখ যাঁর — বোঝানো হয়েছে শিবকে।
এখানে ‘চতুরানন’ বা ‘ত্রিনয়ন’ বললে মুখ বা চোখ বোঝায় না, বরং বোঝানো হয় এমন এক ব্যক্তিকে যার সেই বৈশিষ্ট্য আছে।
🔁 ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস কী?
ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস হলো এক বিশেষ ধরণের বহুব্রীহি, যেখানে সমাসটি গঠিত হয় দুটি একরকম বিশেষ্য শব্দ দিয়ে, যা মিলে একজাতীয় কাজ বা পারস্পরিক আচরণ প্রকাশ করে।
🔸 সংজ্ঞা:
যে বহুব্রীহি সমাসে দুটি একরূপ বিশেষ্য শব্দ একত্র হয়ে একে অপরের প্রতি সংঘটিত কাজ বোঝায়, তাকে ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস বলে।
📘 উদাহরণ:
সমাস | বিশ্লেষণ | অর্থ |
---|
লাঠালাঠি | লাঠি + লাঠি | লাঠি দিয়ে একে অপরকে মারা (যুদ্ধ) |
কানাকানি | কান + কান | কানে কানে ফিসফিস করে কথা বলা |
কোলাকুলি | কোল + কোল | একে অপরকে জড়িয়ে ধরা (আলিঙ্গন) |
এই ধরণের শব্দে একই বস্তু বা অঙ্গের পুনরাবৃত্তি থাকে এবং তা পারস্পরিক কোনো কার্যক্রম নির্দেশ করে।
উৎস:
ভাষা-শিক্ষা – ড. হায়াৎ মামুদ