১৯৫২ সালে তৎকালীন ভাষা আন্দোলন কিসের জন্ম দিয়েছিল?
A
এক রাজনৈতিক মতবাদের
B
এক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের
C
এক নতুন জাতীয় চেতনার
D
এক নতুন সমাজ ব্যবস্থার
উত্তরের বিবরণ
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন: একটি জাতীয় চেতনার সূচনা
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগ্রাম, যা বাঙালি জাতিসত্তার জাগরণে অনন্য ভূমিকা পালন করে।
এই আন্দোলন মূলত ভাষার মর্যাদা ও মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে গড়ে ওঠে এবং পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের প্রতিফলন ছিল।
যদিও ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে, তবুও এর সূচনা হয়েছিল বহু আগে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি প্রথম উঠে আসে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পূর্বপর্বেই। কিন্তু পাকিস্তান সরকার বাংলা ভাষাকে অবহেলার নীতি গ্রহণ করলে ১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে আন্দোলনের সূচনা হয়।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাস্তায় নামা আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হলে ছয়জন তরুণ শহীদ হন। এই ত্যাগ জাতিকে না শুধু ভাষার অধিকার এনে দেয়, বরং তা রাজনৈতিক সচেতনতা, ছাত্রশক্তির উত্থান, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ এবং নারী জাগরণের পথও সুগম করে।
বাংলা ভাষাকে অবমূল্যায়ন করার সিদ্ধান্তের কারণে মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তা হ্রাস পায় এবং দেশের রাজনৈতিক চিত্রপটেও বড় ধরনের পরিবর্তন সূচিত হয়। ভাষা আন্দোলন পরিণত হয় একটি জাতীয় আন্দোলনে, যার প্রভাব বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ স্বাধীনতা সংগ্রামেও গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়।
তথ্যসূত্র:
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, এসএসসি প্রোগ্রাম, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।
0
Updated: 5 months ago
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
Created: 5 months ago
A
নুরুল আমিন
B
লিয়াকত আলী খান
C
মোহাম্মদ আলী
D
খাজা নাজিমুদ্দীন
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) রাজনৈতিক ও শাসনব্যবস্থার অবস্থা ছিল নিম্নরূপ—
-
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খাজা নাজিমউদ্দিন,
-
পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নুরুল আমিন,
-
আর পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল ছিলেন গোলাম মুহাম্মদ।
২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২:
এই দিনটি ইতিহাসের পাতায় ‘অমর একুশে’, ভাষা শহীদ দিবস এবং আজকের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এর প্রতিবাদে ঢাকা শহরে ছাত্রসমাজ এবং সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে আসে।
এই আন্দোলনে আত্মদানকারী ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনটি হয়ে ওঠে ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বাংলা ১৩৫৮ সনের ৮ ফাল্গুন, বৃহস্পতিবার দিনটি চিরস্মরণীয় হয়ে আছে ভাষার জন্য রক্তদানের এই বীরত্বপূর্ণ অধ্যায়ের মাধ্যমে।
তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া, শিক্ষক বাতায়ন ও বিবিসি বাংলা নিউজ।
0
Updated: 5 months ago
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন -
Created: 1 month ago
A
আবদুল হামিদ
B
গোলাম মোস্তফা
C
আবদুল কাদের
D
গাজীউল হক
একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঐতিহাসিক দিনটি বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়কে চিহ্নিত করে। ১৯৫২ সালের এই দিনে ছাত্রদের রক্তে রঙিন হয়েছিল ঢাকার রাজপথ, যা পরবর্তী সময়ে মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতির পথ প্রশস্ত করে।
-
তারিখ ও সময়: ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার, ৮ ফাল্গুন ১৩৫৮ বঙ্গাব্দ।
-
প্রাথমিক প্রস্তুতি: পূর্ব ঘোষণার ভিত্তিতে সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জমায়েত শুরু হয়।
-
সরকারি পদক্ষেপ: সরকার ১৪৪ ধারা জারি করলেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্ররা দুই জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে থাকে।
-
সভা ও সিদ্ধান্ত: বেলা ১১টায় ছাত্রসভা শুরু হয় এবং সেখানে ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
-
নেতৃত্ব ও বক্তৃতা: সভার সভাপতিত্ব করেন গাজীউল হক। বক্তব্য রাখেন শামসুল হক, মোহাম্মদ তোয়াহা, কাজী গোলাম মাহবুব, খালেক নেওয়াজ এবং আবদুল মতিন।
-
১৪৪ ধারা ভঙ্গ: সভাপতি ১০ জন করে ছাত্রদের ১৪৪ ধারা ভাঙার নির্দেশ দেন।
-
পুলিশের দমননীতি: পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করলেও ছাত্ররা বাধা উপেক্ষা করে মেডিকেল হোস্টেলের প্রধান ফটকের কাছে জমায়েত হন।
-
প্রতিবাদ ও লক্ষ্য: মেডিকেল হোস্টেলের কাছে জগন্নাথ হলের অডিটোরিয়ামে পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের সভা চলছিল। ছাত্রদের উদ্দেশ্য ছিল পরিষদে যোগদানকারী সদস্যদের কাছে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি পৌঁছে দেওয়া।
-
সংঘর্ষ: ছাত্ররা স্লোগান দিলে পুলিশ পুনরায় কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। ছাত্ররাও প্রতিবাদে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
-
গুলিবর্ষণ ও শহীদ: একপর্যায়ে পুলিশ গুলি চালায়। আব্দুল জব্বার ও রফিকউদ্দিন আহমদ ঘটনাস্থলেই শহীদ হন। প্রায় ১৭ জন গুরুতর আহত হন এবং তাদের মধ্যে রাত আটটার দিকে আবুল বরকত শহীদ হন।
0
Updated: 1 month ago
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যম কোন প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়?
Created: 1 month ago
A
চারুকলা ইন্সটিটিউট
B
বাংলা একাডেমী
C
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট
D
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি
বাংলা একাডেমী বাংলা ভাষা সংক্রান্ত দেশের সর্ববৃহৎ গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
-
এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৩৬২ বঙ্গাব্দের ১৭ অগ্রহায়ণ (৩ ডিসেম্বর ১৯৫৫) ঢাকার বর্ধমান হাউসে।
-
বাংলা একাডেমীর জন্ম হয়েছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং দেশের মুসলিম মধ্যবিত্তের জাগরণ ও আত্মপরিচয় বিকাশের প্রেরণায়।
-
১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত পূর্ব-পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনে শহীদুল্লাহ্ মূল সভাপতির অভিভাষণে একটি একাডেমি গড়ার কথা উল্লেখ করেন।
-
১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবার বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়।
-
দ্বিতীয়বার যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক বর্ধমান হাউসে বাংলা একাডেমীর উদ্বোধন করেন।
-
এর মাধ্যমে বাংলা ভাষার মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন বাস্তব রূপ পায়।
উৎস:
0
Updated: 1 month ago