গঠনরীতিতে 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্য মূলত-
A
পদাবলি
B
ধামালি
C
গ্রেমগীতি
D
নাট্যগীতি
উত্তরের বিবরণ
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন: গঠন ও বৈশিষ্ট্য
গঠন ও রূপ
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন মূলত মধ্যযুগীয় বাংলার একটি যাত্রাপালা রূপের কাব্য। এটি নাট্যগীতিকাব্যের স্বরূপে রচিত, অর্থাৎ গীত ও সংলাপের সমন্বয়ে নাট্যরসসমৃদ্ধ। কাব্যে গল্প বলার পাশাপাশি সংলাপের মাধ্যমে চরিত্রগুলোর অনুভূতি প্রকাশ করা হয়েছে। কবি কখনও নিজেই কাহিনির মধ্যে প্রবেশ করে বর্ণনা যোগ করেছেন, আবার কখনও সংস্কৃত শ্লোক ব্যবহার করে গল্পের সংযোগ স্থাপন করেছেন। এতে নাটকীয়তা বজায় রেখেই কাব্যিক সৌন্দর্য পাওয়া যায়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও আবিষ্কার
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রথম কাব্য হিসেবে পরিচিত।
-
১৯০৯ সালে বসন্তরঞ্জন রায় পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাকিল্যা গ্রামের দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে এর পুথি আবিষ্কার করেন।
-
প্রথম পৃষ্ঠায় কোনো নাম না থাকায় বসন্তরঞ্জন রায় পুথিটিকে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন নামে ডাকেন। কখনও এটিকে শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ নামেও উল্লেখ করা হয়।
-
১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পুথিটিকে বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় প্রকাশ করে।
-
পুথির প্রথম দুটি এবং শেষ পৃষ্ঠা না পাওয়ায় কাব্যের সম্পূর্ণ নাম ও কবির পরিচয় নিশ্চিত নয়। তবে কবির ভণিতায় ‘চণ্ডীদাস’ এবং প্রায় সকল স্থানে ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ পাওয়া যায়, তাই কবি হিসেবে বড়ু চণ্ডীদাসকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বিষয়বস্তু ও কাঠামো
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন গীতি-আলেখ্য রূপের কাব্য।
-
প্রধান বিষয়: রাধা-শ্রীকৃষ্ণের প্রণয়লীলা।
-
বিন্যস্ত: মোট ১৩ খণ্ডে ৪১৮টি পদ।
-
মূল চরিত্র: কৃষ্ণ, রাধা, বড়ায়ি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 1 month ago
’শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের অংশ নয় কোনটি?
Created: 4 weeks ago
A
নৌকা খণ্ড
B
হার খণ্ড
C
রাধা বিরহ
D
প্রণয় খণ্ড
“শ্রীকৃষ্ণকীর্তন” কাব্যটি বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রথম কাব্য হিসেবে স্বীকৃত। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে বসন্তরঞ্জন রায় এটি আবিষ্কার করেন এবং ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। কাব্যটির প্রাপ্তি, রচনা এবং চরিত্র ও কাঠামো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো নিম্নরূপ:
-
কাব্যের প্রথম দুটি এবং শেষ পৃষ্ঠা পাওয়া যায়নি, ফলে কবির নাম এবং কাব্যের পুরো নাম স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে কবির ভণিতায় চণ্ডীদাস এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে বড়ু চণ্ডীদাস পাওয়া যাওয়ায়, গ্রন্থের কবি হিসেবে বড়ু চণ্ডীদাসকে গ্রহণ করা হয়।
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন হলো গীতি-আলেখ্য, মূলত রাধা ও কৃষ্ণের প্রণয়লীলা এর বিষয়বস্তু। প্রধান চরিত্র: কৃষ্ণ, রাধা, বড়ায়ি।
-
কাব্যের চরিত্রগুলোর মধ্যে ঘাত-প্রতিঘাত, বাক-বিতণ্ডা, রাগ-দ্বেষ ইত্যাদি রয়েছে, ফলে কাব্যটি গতিশীল ও নাট্যরসশীল হয়েছে।
-
এতে গীতিরসের উপস্থিতি লক্ষণীয়। কাব্যটি শৃঙ্গাররসপ্রধান এবং ঝুমুর গানের বৈশিষ্ট্য বহন করে। এটি পয়ার ও ত্রিপদী ছন্দে রচিত।
-
কাব্যে খণ্ডিতপদসহ মোট ৪১৮টি পদ রয়েছে। পুঁথিতে সংস্কৃত শ্লোক ১৬১টি অন্তর্ভুক্ত।
-
পুঁথির পাতার সংখ্যা ২২৬, অর্থাৎ পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪৫২; এর মধ্যে ৪৫টি পৃষ্ঠা পাওয়া যায়নি, ফলে প্রাপ্ত পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪০৭।
-
পুঁথির লিপি তিন হাতের লেখা। ৪১৮টি পদের মধ্যে কবির ভণিতা আছে ৪০৯টি।
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য মোট তের খণ্ডে বিভক্ত। খণ্ডগুলো হলো:
-
জন্মখণ্ড
-
তাম্বুলখণ্ড
-
দানখণ্ড
-
নৌকাখণ্ড
-
ভারখণ্ড
-
ছত্রখণ্ড
-
বৃন্দাবনখণ্ড
-
কালিয়দমনখণ্ড
-
যমুনাখণ্ড
-
হারখণ্ড
-
বাণখণ্ড
-
বংশীখণ্ড
-
রাধাবিরহ
-
-
লক্ষ্যণীয় যে, প্রণয় খণ্ড নামে কোন খণ্ড শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে নেই। তাই সঠিক উত্তর হলো প্রণয় খণ্ড।

0
Updated: 4 weeks ago
বাংলা সাহিত্যের কোন নিদর্শনটি গোয়াল ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়?
Created: 1 month ago
A
চর্যাপদ
B
মঙ্গলকাব্য
C
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন
D
রামায়ণ
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন
সাধারণ তথ্য:
-
কাল: মধ্যযুগের বাংলা
-
স্বীকৃতি: বাংলা ভাষার প্রথম কাব্য হিসেবে স্বীকৃত
-
আবিষ্কার: ১৯০৯, বসন্তরঞ্জন রায় → পশ্চিমবঙ্গ, বাঁকুড়া জেলার কাকিল্যা গ্রাম, শ্রী দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে
-
প্রকাশ: ১৯১৬, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ, সম্পাদনা: বসন্তরঞ্জন রায়
-
প্রথম দুটি ও শেষ পৃষ্ঠা হারিয়ে গেছে, তাই নাম ও কবির পরিচয় স্পষ্ট নয়
-
আবিষ্কর্তা ও সম্পাদক: বসন্তরঞ্জন রায় গ্রন্থের নামকরণ করেন প্রাচীন বৈষ্ণব লেখকদের ইঙ্গিত অনুসরণ করে
-
অন্য নাম: শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ
রচয়িতা ও কাব্যবস্তু:
-
রচয়িতা: বড়ু চণ্ডীদাস
-
প্রধান চরিত্র: কৃষ্ণ, রাধা, বড়াই
-
খণ্ড সংখ্যা: ১৩টি
উৎস:
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা

0
Updated: 1 month ago
'চর্যাগীতিকোষবৃত্তি' নামে মুনিদত্তের টীকার তিব্বতি অনুবাদ করেন কে?
Created: 1 month ago
A
ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী
B
রাজেন্দ্রলাল মিত্র
C
কীর্তিচন্দ্র
D
বিজয়চন্দ্র মজুমদার
চর্যাপদ ও প্রাচীন বাংলার পদসংগ্রহ
-
মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে তৃতীয় নেপাল সফরে নেপালের রাজগ্রন্থাগার থেকে প্রাচীন কিছু সাহিত্য পদ আবিষ্কার করেন।
-
তাঁর সম্পাদনায় এগুলো বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ১৯১৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়:
-
চর্যাচর্যবিনিশ্চয়
-
সরহপাদ ও কৃষ্ণপাদের দোহা
-
ডাকার্ণব-এর চারটি পুঁথি
-
গ্রন্থের নাম: ‘হাজার বছরের পুরাণ: বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা’
-
-
এগুলোর মধ্যে একমাত্র চর্যাচর্যবিনিশ্চয়ই প্রাচীন বাংলায় লেখা, বাকিগুলো অপভ্রংশ ভাষায় রচিত।
ভাষাতাত্ত্বিক ও ধর্মমত বিশ্লেষণ
-
১৯২৬ সালে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় Origin and Development of the Bengali Language (ODBL) গ্রন্থে এসব পদসংগ্রহের ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য প্রথম আলোচনা করেন।
-
১৯২৭ সালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ চর্যাপদের ধর্মমত সম্পর্কে প্রথম আলোচনা করেন।
-
১৯৩৮ সালে ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী চর্যার তিব্বতি অনুবাদ প্রকাশ করেন।
পদসংগ্রহের নাম সম্পর্কিত তথ্য
-
মুনিদত্তের সংস্কৃত টীকানুসারে পদসংগ্রহের নাম ছিল ‘আশ্চর্যচর্যাচয়’।
-
নেপালে প্রাপ্ত পুঁথিতে নাম দেওয়া হয়েছিল ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’।
-
ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী দুটি নাম মিলিয়ে ‘চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয়’ নামকরণ করেন।
-
কীর্তিচন্দ্র মুনিদত্তের টীকার তিব্বতি অনুবাদ ছিল ‘চর্যাগীতিকোষবৃত্তি’।
-
আধুনিক পণ্ডিতদের অনুমান: মূল সংকলনের নাম ছিল ‘চর্যাগীতিকোষ’, সংস্কৃত টীকার নাম ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম

0
Updated: 1 month ago