নিম্নের কোন দুর্যোগটি বাংলাদেশের জনগণের জীবিকা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে?
A
ভূমিকম্প
B
সমুদ্রের জলস্তরের বৃদ্ধি (Sea level rise)
C
ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস
D
খরা বা বন্যা
উত্তরের বিবরণ
সমুদ্রের জলস্তরের বৃদ্ধি ও বাংলাদেশের জীবিকার ওপর প্রভাব
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল প্রায় ৭১৬ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমেই বাড়ছে।
এর ফলে লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং নদীভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়মিত আঘাত হানছে। এসব কারণে উপকূলের অসংখ্য নিম্নআয়ের মানুষ জীবিকা হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে।
লবণাক্ততা বৃদ্ধি
-
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততা দ্রুত বাড়ছে।
-
কৃষি জমি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খুলনা ও বাগেরহাট জেলায়। গত ৩০ বছরে খুলনায় লবণাক্ততা বেড়েছে প্রায় ২১%, আর বাগেরহাটে ১৫.৮৮%।
-
একসময় নড়াইল, যশোর ও গোপালগঞ্জে লবণাক্ততা প্রায় ছিল না, এখন সেখানেও তা ছড়িয়ে পড়ছে।
-
বর্তমানে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ১৪ হাজার বর্গকিলোমিটার জমি লবণাক্ত মাটিতে পরিণত হয়েছে।
-
ধারণা করা হচ্ছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যদি আরও ৪৫ সেন্টিমিটার বাড়ে তবে লবণাক্ততা আরও ভেতরের দিকে প্রবেশ করবে এবং কৃষি উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
-
ঋতুভেদে লবণাক্ততার তারতম্য লক্ষ্য করা যায়—বর্ষায় প্রায় ১০%, আর শুষ্ক মৌসুমে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৪০% (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ২০২০)।
-
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে লবণাক্ত ভূমির পরিমাণ ১৯৭৩ সালে ছিল ৮৩.৩ মিলিয়ন হেক্টর, ২০০০ সালে ১০২ মিলিয়ন হেক্টর, ২০০৯ সালে ১০৫.৬ মিলিয়ন হেক্টর, এবং ২০১৯ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ১০৯.৮ মিলিয়ন হেক্টর (ইউএসবি ও আইপিএস রিপোর্ট, ২০২০)।
সমুদ্রপৃষ্ঠ ও জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধি
-
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমেই বাড়ছে। এর ফলে উপকূলীয় এলাকায় ভাঙন বেড়ে গেছে।
-
কুতুবদিয়া ও সন্দ্বীপের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ইতোমধ্যেই সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
-
পূর্ব হিমালয় থেকে প্রবাহিত পানির প্রায় ৯০% এর বেশি বাংলাদেশের নদীপথ দিয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মেশে।
-
ইউএনডিপি (২০১৯) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে হাতিয়ার চরচঙ্গা স্টেশনে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়েছে ৫.৭৩ মিমি, আর সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্টে বেড়েছে ৩.৩৮ মিমি।
উৎসঃ বিবিএ বাংলা, বাংলাদেশ স্টাডিজ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

0
Updated: 1 month ago
সুন্দরবনে বাঘ গণনায় ব্যবহৃত হয় -
Created: 1 month ago
A
পাগ-মার্ক
B
ফুটমার্ক
C
GIS
D
কোয়ার্ডবেট
সুন্দরবনের বাঘ গণনা পদ্ধতি
সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বনভূমি। এর মোট আয়তন প্রায় ১০,০০০ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশে সুন্দরবনের বিস্তৃত এলাকা আয়তন প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার, যা বনটির মোট আয়তনের প্রায় ৬২%।বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলা সুন্দরবনের সঙ্গে সংলগ্ন।
সুন্দরবনের প্রধান বৃক্ষ হলো সুন্দরী, যার নাম থেকেই বনের নামকরণ হয়েছে। এছাড়া এখানে গরান, গেওয়া, কেওড়া, ধুন্দল, গোলপাতা ইত্যাদি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ গাছ পাওয়া যায়। ১৮৭৮ সালে পুরো সুন্দরবন সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ৭ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে ৭৯৮তম World Heritage Site ঘোষণা করে।
সুন্দরবনের বাঘ পর্যবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো পাগ-মার্ক পদ্ধতি (পায়ের ছাপ দিয়ে গণনা)। তবে এই পদ্ধতিতে ভুলের সম্ভাবনা বেশি থাকে। বর্তমানে ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্যভাবে বাঘ গণনার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, এবং প্রায় সব দেশ এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করে।
উৎস: বাংলাদেশ বনবিভাগ ওয়েবসাইট

0
Updated: 1 month ago
সমবৃষ্টিপাত সম্পন্ন স্থানসমূহকে যোগকারী রেখাকে বলা হয়-
Created: 1 month ago
A
আইসোথার্ম
B
আইসোবার
C
আইসোহাইট
D
আইসোহেলাইন
সমরেখ পদ্ধতি (Isopleth Method)
মানচিত্রে ভিন্ন ভিন্ন স্থানের একই পরিমাণগত মান বা ঘনত্ব নির্দেশ করতে যে রেখা টানা হয়, তাকে সমমান রেখা (Isopleth line) বলা হয়। এ ধরনের রেখা নির্দিষ্ট মানের ওপর দিয়ে টানা হয় এবং সাধারণত প্রকৃতিক বিষয় যেমন আবহাওয়া, জলবায়ু ইত্যাদি প্রদর্শনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ:
-
সমোষ্ণ রেখা (Isotherm): ভূপৃষ্ঠের এমন স্থানগুলোর সংযোগ যেখানে তাপমাত্রা সমান।
-
সমচাপ রেখা (Isobar): বায়ুর সমচাপযুক্ত স্থানগুলোকে যুক্ত করা রেখা।
-
সমবর্ষণ রেখা (Isohyet): সম বৃষ্টিপাতযুক্ত স্থানগুলোকে সংযুক্ত করা রেখা।
-
সমোচ্চ রেখা (Contour): সমান উচ্চতার স্থানগুলোকে সংযুক্ত করা রেখা।
বিশেষ তথ্য
-
এই সমস্ত রেখা কল্পনাপ্রসূত, মানচিত্রে প্রদর্শনের সুবিধার জন্য ব্যবহার করা হয়।
উৎস: ব্যবহারিক ভূগোল ও পরিবেশ, এসএসএইচএল, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

0
Updated: 1 month ago
সমুদ্রপৃষ্ঠ ৪৫cm বৃদ্ধি পেলে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে climate refugee হবে?
Created: 1 month ago
A
৩ কোটি
B
৩.৫ কোটি
C
৪ কোটি
D
৪.৫ কোটি
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও বাংলাদেশে সম্ভাব্য ফলাফল
মানুষের অতিরিক্ত গ্রিনহাউস গ্যাস (যেমন: কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড) নির্গমনের কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা দ্রুত বাড়ছে। এই পরিবর্তনের ফলে বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটছে, এবং স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছে।
বাংলাদেশ এ ধরনের ঝুঁকির মধ্যে সবচেয়ে অগ্রগামী। অন্যান্য দেশ এখনও বিপদের মুখোমুখি হয়নি, আমাদের দেশ ইতিমধ্যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব অনুভব করছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক গবেষণা অনুযায়ী:
-
আগামী ৫০ বছরে যদি সমুদ্রপৃষ্ঠ ৩ ফুট (প্রায় ৯১ সেন্টিমিটার) বৃদ্ধি পায়, তবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত হবে এবং প্রায় ১৭% জমি পানির নিচে চলে যেতে পারে।
-
আনুমানিক ৩–৩.৫ কোটি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে জলবায়ু উদ্বাস্তু হয়ে যেতে পারেন।
-
ইন্টারন্যাশনাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (IPCC) জানিয়েছে, ২০৩০ সালের পর নদীর জল প্রবাহ কমতে পারে, ফলে এশিয়ায় পানির ঘাটতি দেখা দেবে। ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
-
উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বন্যা, ঝড়, অনাবৃষ্টি ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি আরও বাড়বে। এই প্রভাব ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে অনুভূত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও তীব্র হবে।
উল্লেখযোগ্য তথ্য:
-
সমুদ্রপৃষ্ঠের মাত্রা ৪৫ সেন্টিমিটার বাড়লে বাংলাদেশের প্রায় ১০.৯% ভূমি প্লাবিত হবে।
-
এতে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৩.৫ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।
উৎস: World Bank ওয়েবসাইট

1
Updated: 1 month ago