নিম্নের কোন নিয়ামকটি একটি অঞ্চলের বা দেশের জলবায়ু নির্ধারণ করে না?
A
অক্ষরেখা
B
দ্রাঘিমারেখা
C
উচ্চতা
D
সমুদ্রস্রোত
উত্তরের বিবরণ
জলবায়ুর নিয়ামক হলো সেই সব উপাদান, যেগুলো আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
প্রধান জলবায়ুর নিয়ামকগুলো
১. অক্ষাংশ
-
সূর্যই পৃথিবীর তাপ ও আলোর মূল উৎস।
-
অক্ষাংশের ভেদে সূর্যের কিরণ কোথাও লম্বভাবে, আবার কোথাও তীর্যকভাবে পড়ে।
-
নিরক্ষরেখার কাছাকাছি সূর্যকিরণ প্রায় লম্বভাবে পড়ে এবং দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য প্রায় সমান থাকে।
-
তাই নিরক্ষীয় অঞ্চলে সবসময় তুলনামূলকভাবে বেশি গরম থাকে।
২. সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা
-
কোনো স্থানের উচ্চতা যত বেশি, তাপমাত্রা তত কম হয়।
-
একই অক্ষাংশে থাকা দুই স্থানের মধ্যে যে স্থানের উচ্চতা বেশি, সেটি তুলনায় ঠান্ডা হয়।
৩. জলভাগ ও স্থলভাগের অবস্থান
-
স্থলভাগ দ্রুত গরম ও ঠান্ডা হয়, কিন্তু জলভাগ তুলনায় ধীরে গরম-ঠান্ডা হয়।
-
জলভাগের ওপর সূর্যের তাপের বড় অংশ বাষ্পীভবনে ব্যয় হয়, কিন্তু স্থলভাগে তা হয় না।
-
এজন্য স্থলভাগ সাধারণত বেশি উষ্ণ থাকে।
৪. পাহাড়-পর্বতের অবস্থান
-
পাহাড়-পর্বত জলবায়ুকে প্রভাবিত করে।
-
এগুলো কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
৫. বনভূমি
-
ঘন বনাঞ্চলে সূর্যের আলো পুরোপুরি প্রবেশ করতে পারে না।
-
এজন্য বনাঞ্চল আর্দ্র ও শীতল থাকে।
৬. সমুদ্র থেকে দূরত্ব
-
সমুদ্রের কাছাকাছি অঞ্চলে সামুদ্রিক আবহাওয়া বিরাজ করে, যা তুলনামূলকভাবে মৃদু।
-
সমুদ্র থেকে দূরে গেলে জলবায়ু চরম হয়ে যায়—গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরম, শীতে প্রচণ্ড ঠান্ডা।
৭. সমুদ্রস্রোত
-
উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের ওপর দিয়ে বইতে থাকা বাতাস উষ্ণ হয়।
-
বিপরীতে, শীতল সমুদ্রস্রোতের ওপর দিয়ে বইতে থাকা বাতাস শীতল হয়।
-
এতে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে।
৮. বায়ুপ্রবাহ
-
সমুদ্র থেকে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু এলে বৃষ্টি হয় এবং তাপমাত্রা কমে যায়।
-
আবার শুষ্ক বায়ু প্রবাহিত হলে তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
৯. বৃষ্টিপাত
-
যেখানে বেশি বৃষ্টি হয়, সেখানকার আবহাওয়া ঠান্ডা ও আর্দ্র থাকে।
-
যেখানে বৃষ্টি কম হয়, সেখানে গরম বেশি হয়।
১০. ভূমির ঢাল
-
সূর্যের দিকে মুখ করা ঢালে সূর্যকিরণ সরাসরি পড়ে, ফলে বেশি গরম হয়।
-
বিপরীতে, সূর্যের বিপরীতে থাকা ঢালে সূর্যের আলো তির্যকভাবে পড়ে, ফলে তুলনামূলক কম গরম হয়।
১১. জলীয়বাষ্প
-
বায়ুমণ্ডলের জলীয়বাষ্প পৃথিবীর তাপ ধরে রাখতে সাহায্য করে।
-
বেশি জলীয়বাষ্প থাকলে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম হয়।
১২. দিনের দৈর্ঘ্য
-
দিনের দৈর্ঘ্য বেশি হলে সূর্যের তাপে ভূপৃষ্ঠ বেশি উত্তপ্ত হয়।
-
রাত ছোট হলে শীত কম অনুভূত হয়।
১৩. বায়ুর আর্দ্রতা
-
আর্দ্র বায়ু জলবায়ুর ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
-
এ ধরনের বায়ুতে দিনে খুব গরম এবং রাতে খুব ঠান্ডা অনুভূত হয়।
উৎস: ভূগোল প্রথম পত্র, এইচএসসি প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

1
Updated: 1 month ago
কোনটি জলবায়ুর উপাদান নয়?
Created: 1 month ago
A
উষ্ণতা
B
আর্দ্রতা
C
সমুদ্রস্রোত
D
বায়ুপ্রবাহ
জলবায়ু
-
কোনো স্থানের বায়ুর তাপমাত্রা, চাপ, আর্দ্রতা, মেঘাচ্ছন্নতা, বৃষ্টিপাত ও বাতাসের প্রবাহের যে দৈনন্দিন অবস্থা দেখা যায়, তাকে আবহাওয়া বলে।
-
কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে (প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর) কোনো অঞ্চলের আবহাওয়ার গড় অবস্থাকেই জলবায়ু বলা হয়।
-
অর্থাৎ জলবায়ু হলো কোনো অঞ্চলের দীর্ঘদিনের বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তর বা ট্রপোমণ্ডলের সার্বিক চিত্র।
আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রধান উপাদান
-
বায়ুর তাপমাত্রা বা উষ্ণতা
-
বায়ুর চাপ
-
বায়ুর আর্দ্রতা
-
বৃষ্টিপাত
মনে রাখতে হবে, সমুদ্রস্রোত জলবায়ুর সরাসরি উপাদান নয়, এটি জলবায়ুর একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক।
উৎস: ভূগোল ও পরিবেশ, নবম–দশম শ্রেণি

0
Updated: 1 month ago
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নিম্নের কোন পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ সবচেয়ে ফলপ্রসূ হবে?
Created: 1 month ago
A
কমিউনিটি পর্যায়ে
B
জাতীয় পর্যায়ে
C
উপজেলা পর্যায়ে
D
আঞ্চলিক পর্যায়ে
কমিউনিটি ভিত্তিক ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
-
কমিউনিটি ভিত্তিক উদ্যোগ:
জাতীয়, উপজেলা বা আঞ্চলিক পর্যায়ের ব্যবস্থার তুলনায় কমিউনিটি পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ বেশি কার্যকর। কারণ এতে স্থানীয় জনগণ সরাসরি অংশগ্রহণ করে এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হয়।
এছাড়াও, ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতার চেয়ে দলগতভাবে মানুষকে সচেতন করা বেশি ফলপ্রসূ।
উপকূলীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগের চিত্র
-
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল প্রায় ৭১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ।
-
এখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন: সমুদ্র সমতলের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং নদীভাঙন নিয়মিত ক্ষতি সৃষ্টি করে।
-
তাই দুর্যোগ মোকাবিলা ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উপকূলীয় জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মূল পদ্ধতি
১. সতর্কবার্তা প্রচার: আবহাওয়ার তথ্যভিত্তিক পূর্বাভাস এবং সতর্কবার্তা সময়মতো জনগণের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া।
২. ভূ-উপগ্রহ ও রাডার বিশ্লেষণ: বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও স্পারসো সংস্থা উপগ্রহ চিত্র ও রাডার চিত্র ব্যবহার করে পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ উন্নত করা।
৩. বন্যা পূর্বাভাস: পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র থেকে বন্যার পূর্বাভাস কার্যক্রম উন্নয়ন করা।
৪. ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি: সরকারি সংস্থা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ব ও পরবর্তী সতর্কীকরণ, উদ্ধার ও পুনর্বাসনের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
৫. সামরিক সহযোগিতা: জরুরি সময়ে চিকিৎসা, উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসনে সামরিক বাহিনী বেসামরিক প্রশাসনকে সাহায্য করে।
৬. মিডিয়ার ভূমিকা: বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন দুর্যোগ সংক্রান্ত সতর্কবার্তা প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৭. বেসরকারি সংস্থার অবদান: অক্সফাম, ডিজাস্টার ফোরাম, কেয়ার বাংলাদেশ, কারিতাস, প্রশিকা, সিসিডিবি, বিডিপিসি এবং রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
উৎস: ভূগোল ও পরিবেশ, এসএসসি প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।

0
Updated: 1 month ago
সমবৃষ্টিপাত সম্পন্ন স্থানসমূহকে যোগকারী রেখাকে বলা হয়-
Created: 1 month ago
A
আইসোথার্ম
B
আইসোবার
C
আইসোহাইট
D
আইসোহেলাইন
সমরেখ পদ্ধতি (Isopleth Method)
মানচিত্রে ভিন্ন ভিন্ন স্থানের একই পরিমাণগত মান বা ঘনত্ব নির্দেশ করতে যে রেখা টানা হয়, তাকে সমমান রেখা (Isopleth line) বলা হয়। এ ধরনের রেখা নির্দিষ্ট মানের ওপর দিয়ে টানা হয় এবং সাধারণত প্রকৃতিক বিষয় যেমন আবহাওয়া, জলবায়ু ইত্যাদি প্রদর্শনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ:
-
সমোষ্ণ রেখা (Isotherm): ভূপৃষ্ঠের এমন স্থানগুলোর সংযোগ যেখানে তাপমাত্রা সমান।
-
সমচাপ রেখা (Isobar): বায়ুর সমচাপযুক্ত স্থানগুলোকে যুক্ত করা রেখা।
-
সমবর্ষণ রেখা (Isohyet): সম বৃষ্টিপাতযুক্ত স্থানগুলোকে সংযুক্ত করা রেখা।
-
সমোচ্চ রেখা (Contour): সমান উচ্চতার স্থানগুলোকে সংযুক্ত করা রেখা।
বিশেষ তথ্য
-
এই সমস্ত রেখা কল্পনাপ্রসূত, মানচিত্রে প্রদর্শনের সুবিধার জন্য ব্যবহার করা হয়।
উৎস: ব্যবহারিক ভূগোল ও পরিবেশ, এসএসএইচএল, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

0
Updated: 1 month ago