বাংলাদেশের কোন অঞ্চলের পরিবেশ বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি নিষ্কাশন ও সেচের (FCDI) কারণে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে?
A
বরেন্দ্র অঞ্চল
B
মধুপুর গড় অঞ্চল
C
উপকূলীয় অঞ্চল
D
চলন বিল অঞ্চল
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের পরিবেশ বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি নিষ্কাশন ও সেচের (FCDI) কারণে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প (Flood Control, Drainage and Irrigation Projects):
- অনুচ্চ ভূ-সংস্থানের কারণে একটি স্বাভাবিক বৎসরে বাংলাদেশের ভৌগোলিক এলাকার কমপক্ষে ২০% এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে থাকে।
- ১৯৯৮ সালের মতো মারাত্মক পর্যায়ে গেলে বন্যা কবলিত এলাকার পরিমাণ প্রায় ৭০% এ গিয়ে পৌঁছতে পারে।
- বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পসমূহ বন্যার তীব্রতা হ্রাসকরণে অথবা বন্যা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বন্যার পানি নিষ্কাশনের উপায় হিসেবে ব্যবহূত হয়, যেগুলো শস্য উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনুকূল অবস্থার সৃষ্টি করে।
⇒ ১৯৬৪ সালে দেশজুড়ে ৫৮টি বন্যা প্রতিরোধ এবং নিষ্কাশন প্রকল্প সম্বলিত একটি মাস্টার প্ল্যান গৃহীত হয়েছিল যার আওতাভুক্ত এলাকা ছিল ৫.৮ মিলিয়ন হেক্টর।
- তিন ধরনের পোল্ডার বা উদ্ধারকৃত নিম্নভূমি এই বন্যা প্রতিরোধ ও নিষ্কাশন কর্মকান্ডের পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত ছিল: পোল্ডারসহ মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে পানি নিষ্কাশন; টাইডাল স্লুইস গেটের মাধ্যমে জোয়ারের পানি নিষ্কাশন; এবং পাম্পের মাধ্যমে বন্যার পানি নিষ্কাশন।
- ১৯৯৩ সালে সর্বমোট আর্দ্রভূমির পরিমাণ ছিল ৩.১৪ মিলিয়ন হেক্টর যার মধ্যে ১.৫৫ মিলিয়ন হেক্টরে চাষাবাদ হয়েছিল এবং ১.৩৮ মিলিয়ন হেক্টর ভূমি থেকে পানি নিষ্কাশিত হয়েছিল ভূ-পৃষ্ঠের উপরের নালীসমূহের মাধ্যমে।
- অধিকন্তু নিষ্কাশন ব্যবস্থা সম্বলিত সেচের আওতাধীন এলাকার পরিমাণ ১.১৭ মিলিয়ন হেক্টরে এসে দাঁড়ায়।
- ১৯৯৯ সালে বন্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে এমন এলাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪.৬২ মিলিয়ন হেক্টরে।
- বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যার ক্ষয়ক্ষতি ও নেতিবাচক প্রভাব হ্রাস করণ এবং উদ্বৃত্ত পানি সেচকার্যে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বহু সংখ্যক ভেড়িবাঁধ, বাঁধ এবং খাল নির্মাণ ও খনন করেছে।
তিস্তা বাঁধ প্রকল্প:
- (পর্ব ১) রংপুর, লালমনিরহাট এবং নীলফামারী জেলায় অবস্থিত।
- প্রকল্পটির আওতাভুক্ত সর্বমোট এলাকার পরিমাণ ১,৩২,০০০ হেক্টর, এর মধ্যে সেচযোগ্য এলাকার পরিমাণ ১,১১,৪০৬ হেক্টর।
- তিস্তা নদীর উপর বাঁধ নির্মাণ করে প্রবাহের দিক পরিবর্তন করে নদীর পানিকে সেচ কার্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।
- খাল খনন করে শস্য ক্ষেত্র পর্যন্ত সেচের পানি নিয়ে যাওয়া হয়।
- প্রধানত বর্ষা মৌসুমে সম্পূরক সেচ হিসেবে এই প্রকল্পের আওতায় সেচকার্য পরিচালিত হয়।
- প্রকল্পটি সম্পাদিত হয় ১৯৯৩ সালে।
উত্তরাঞ্চলে নলকূপ প্রকল্প:
- দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলায় এই প্রকল্পের অবস্থান।
- প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকায় ২৫৪ মিমি ব্যাসের এবং ৯১.৪ মিটারের উপরে গড় গভীরতায় ৩৮০টি নলকূপ বসানো হয়।
- পিছনের বৎসরগুলিতে আরও অধিক সংখ্যক নলকূপ বসানো হয়েছে যার সর্বমোট সংখ্যা ১,২১৯ এ পৌঁছেছে।
- এসকল নলকূপের মাধ্যমে ৫৬,০৫২ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে।
বরেন্দ্র অঞ্চল:
- দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের বরেন্দ্রভূমি এবং মধ্যভাগের মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় অঞ্চল প্লাইস্টোসিন যুগের সোপান সমূহের অন্তর্গত।
- বরেন্দ্র অঞ্চল সোপান সমূহের গড় উচ্চতা ১৯ থেকে মিটারের মধ্যে অসংখ্য নদীনালা দ্বারা এ সোপান ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত।
- বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ পানি দ্বারা বছরব্যাপি সেচ সবিধা চালু হওয়ায় এলাকার এক ফসলি জমি তিন ফসলি জমিতে রুপান্তরিত হয়েছে।
- বর্তমানে বিএমডিএ কর্তৃক পরিচালিত ১৫৭৯০ টি সেচযন্ত্র হতে সেচের মাধ্যমে প্র্রায় ৪৫ লক্ষ মে.টন খাদ্য শস্য উৎপাদিত হচ্ছে।
- বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি নিষ্কাশন ও সেচের ফলে বরেন্দ্র অঞ্চল খুব বেশি পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
- বরেন্দ্র অঞ্চল রাজশাহী বিভাগের প্রায় ৯,৩২০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।
- এ অঞ্চলে গভীর নলকূপের মাধ্যমে অধিক পরিমাণ পানি উত্তোলনের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে।
অন্যদিকে,
- বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলসমূহে ঘূর্ণিঝড়, সুনামি ও অন্যদেশের ভূমিকম্পের প্রভাব প্রভৃতির দ্বারা মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
উৎস: জাতীয় তথ্য বাতায়ন।

1
Updated: 1 month ago
নিচের কোন জেলাতে প্লাইস্টোসিন চত্বরভূমি রয়েছে?
Created: 1 month ago
A
চাঁদপুর
B
পিরোজপুর
C
মাদারীপুর
D
গাজীপুর
বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি
ভূপ্রকৃতির ভিত্তিতে বাংলাদেশকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়—
-
টারশিয়ারি যুগের পাহাড়,
-
প্লাইস্টোসিন যুগের সোপান বা উঁচুভূমি,
-
সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি।
প্লাইস্টোসিন যুগের সোপানসমূহ
-
আনুমানিক ২৫ হাজার বছর আগে যে সময়কাল ছিল, তাকে প্লাইস্টোসিন যুগ বলা হয়।
-
এ সময়ের মাটি সাধারণত লালচে বা ধূসর বর্ণের।
-
দেশের উত্তর-পশ্চিমে বরেন্দ্রভূমি, মধ্যাঞ্চলে মধুপুর ও ভাওয়ালের গড়, আর পূর্বে কুমিল্লার লালমাই উচ্চভূমি—এসবই প্লাইস্টোসিনকালের উঁচুভূমি হিসেবে গড়ে ওঠে।
বরেন্দ্রভূমি
-
গঠিত হয়েছে রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ, রাজশাহী, বগুড়া, জয়পুরহাট এবং রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অংশ নিয়ে।
-
আয়তন প্রায় ৯,৩২০ বর্গকিলোমিটার।
-
চারপাশের সমভূমি থেকে এর উচ্চতা ৬–১২ মিটার।
-
এটি প্লাইস্টোসিন যুগের সবচেয়ে বড় উঁচুভূমি।
মধুপুর ও ভাওয়ালের গড়
-
অবস্থান: টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলার মধুপুর এবং গাজীপুর জেলার ভাওয়াল এলাকা।
-
আয়তন প্রায় ৪,১০৩ বর্গকিলোমিটার।
-
সমভূমির চেয়ে গড়ে ৩০ মিটার উঁচু।
-
এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উঁচুভূমি এবং গজারী বনের প্রধান কেন্দ্র।
লালমাই পাহাড়
-
কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে, লালমাই থেকে ময়নামতি পর্যন্ত বিস্তৃত।
-
আয়তন প্রায় ৩৪ বর্গকিলোমিটার।
-
গড় উচ্চতা ২১ মিটার।
উৎস: ভূগোল ও পরিবেশ, এসএসসি প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

0
Updated: 1 month ago
নিচের কোন ভৌগোলিক এলাকাটি 'রামসার সাইট' হিসেবে স্বীকৃত?
Created: 1 month ago
A
রামসাগর
B
বগা লেইক (Lake)
C
টাঙ্গুয়ার হাওর
D
কাপ্তাই হ্রদ
রামসার কনভেনশন
-
রামসার কনভেনশন (Ramsar Convention) হলো জলাভূমি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিশ্বের দেশগুলোর যৌথ উদ্যোগ।
-
এটিই পরিবেশ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে গৃহীত প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি।
-
১৯৭১ সালে ইরানের রামসার শহরে বিভিন্ন দেশ একত্র হয়ে Convention on Wetlands নামে চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।
-
চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয় ২১ ডিসেম্বর, ১৯৭৫ সালে।
-
বর্তমানে এর সদস্য দেশের সংখ্যা ১৭২টি।
বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
-
বাংলাদেশ ২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৯২ সালে রামসার কনভেনশনের সদস্য হয়।
-
দেশে মোট ২টি স্থান রামসার সাইট হিসেবে স্বীকৃত:
১. সুন্দরবন
২. টাঙ্গুয়ার হাওর
উৎস:

0
Updated: 1 month ago
'জুম' চাষ পদ্ধতি বাংলাদেশের কোন জেলাসমূহে দেখা যায়?
Created: 1 month ago
A
সাতক্ষীরা, যশোহর, কুষ্টিয়া
B
নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ
C
বগুড়া, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম
D
চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাসমূহ
জুমচাষ (Jhum) পদ্ধতি
-
জুমচাষ বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে, বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
-
জুমচাষ মানে হলো স্থানের পরিবর্তন করে চাষ করা। এর মাধ্যমে কৃষকরা এক জায়গায় কয়েক বছর (প্রায় ১–৩ বছর) ফসল চাষ করেন, তারপর সেই জমিকে দীর্ঘ সময় (১০–৪০ বছর) বনায়ন ও মাটির উর্বরতা পুনরুদ্ধারের জন্য ফেলে দেন।
-
চাষ করার পদ্ধতিতে বন কেটে বা পোড়ানো হয়, তাই এটিকে সাধারণভাবে ‘সুইডেন চাষাবাদ’ বা জঙ্গল পরিষ্কার ও পোড়ানো চাষাবাদ’ বলা হয়।
-
জুমচাষ কেবল বাংলাদেশে নয়, ভারত, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, থাইল্যান্ডসহ অন্যান্য পাহাড়ি দেশে দেখা যায়।
-
বাংলাদেশে এটি প্রধানত রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে হয়। এছাড়া সিলেটের কিছু পাহাড়ি এলাকায়ও জুমচাষ হয়।
-
পার্বত্য অঞ্চলের উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা এবং সংস্কৃতির সঙ্গে জুমচাষের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
জুমচাষের নেতিবাচক প্রভাব:
-
মাটির উর্বরতা হ্রাস।
-
ভূমিক্ষয় ও পাহাড়ি ঢালে ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা বৃদ্ধি।
-
বন উজাড় ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল নষ্ট।
-
নদী, হ্রদ ও জলাশয় ভরাট হওয়া।
উৎস: বাংলাপিডিয়া; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি, সপ্তম শ্রেণি।

0
Updated: 1 month ago