আমি এ কথা, এ ব্যথা, সুখব্যাকুলতা কাহার চরণতলে দিব নিছনি।'-রবীন্দ্রনাথের এ গানে 'নিছনি' কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
A
অপনোদন অর্থে
B
পূজা অর্থে
C
বিলানো অর্থে
D
উপহার অর্থে
উত্তরের বিবরণ
‘নিছনি’ (বিশেষ্য পদ)
অর্থ— অর্ঘ্য, নিবেদন। যেমন— “যদি না দিই নিছনি সেই প্রিয় সখার পার তলে” (ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ)।
এছাড়া শব্দটি রূপ, লাবণ্য, উপহার, বেশবিন্যাস অর্থেও ব্যবহৃত হয়।
তবে প্রদত্ত পঙ্ক্তিতে ‘নিছনি’ শব্দটি পূজা বা নিবেদন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
‘অপনোদন’ (বিশেষ্য পদ)
অর্থ— দূর করা, অপসারণ বা খণ্ডন।
‘বিলানো’ (ক্রিয়াপদ)
অর্থ— বণ্টন করা, দান বা বিতরণ করা।
উৎস: অভিগম্য অভিধান, বাংলা একাডেমি

0
Updated: 4 days ago
"প্রাণের বান্ধব রে বুড়ি হইলাম তোর কারণে।" - গানটির গীতিকার কে?
Created: 1 week ago
A
শাহ আবদুল করিম
B
রাধারমন
C
শেখ ওয়াহিদ
D
কুদ্দুস বয়াতি
“পরানের বান্ধবরে, বুড়ি হইলাম তোর কারণে”—এই জনপ্রিয় গানটির গীতিকার হলেন লোককবি শেখ ওয়াহিদুর রহমান। গানটি গেয়েছেন সুফিয়া কাঙালিনী।
শেখ ওয়াহিদুর রহমান (জন্ম: ১৯৩৯) মূলত সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার এক নির্জন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে। ফলে তাঁর গানে গ্রামীণ মাটি, প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও আঞ্চলিক স্বাদ সবসময়ই পাওয়া যায়।
তিনি যদিও খুব পরিচিত নাম নন, তবে তাঁর অনেক গান আমরা শুনি—কিন্তু গীতিকারের নাম উল্লেখ না থাকায় সাধারণ মানুষ তাঁকে চিনতে পারে না। এজন্য অনেক ক্ষেত্রে গানগুলোকে “অজ্ঞাত গীতিকার” হিসেবে ধরা হয়। অথচ শেখ ওয়াহিদ এই লোকগানের জগতে যথেষ্ট পরিচিত ও সম্মানিত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে মজার ছলে “দুষ্ট ছেলে” নামে ডাকতেন।
তিনি সহজ-সরল ভাষায় গান লিখে ‘বাউল কবি’ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তাঁর গানে বৈচিত্র্য অনন্য—পল্লিগীতি, ভাটিয়ালি, গণসঙ্গীত, মরমি ও আধ্যাত্মিক ধারা ছাড়াও শাক্ত পদাবলি লিখেছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু গান হলো:
-
আমার মাটির গাছে লাউ ধইরাছে
-
অপূর্ব তটিনী ওগো
-
অমৃত কূপের সুধা খেলে
-
অলি দরবেশ কারে বলে
-
আল-আরাবি নাবীজি আমার
-
আদমকে বানাইয়া খোদা
এছাড়াও তিনি বহু বিয়ের গানও রচনা করেছেন। যেমন—
-
মেনদি বাটো তোমরা সখি
-
মিতু আসবে নওশা সেজে
-
আজ ঝিলমিল ঝিলমিল
-
পালকি চড়ে যাইগো ভাবি
-
বিয়াই মজলিসে দেখবে
-
সখীরা সব সাজাও কন্যা
তাঁর গান শুনলেই বোঝা যায়—শেখ ওয়াহিদ লোকবাংলার সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি।
উৎস: ‘শেখ ওয়াহিদ গীতি সমগ্র’ – শেখ ওয়াহিদুর রহমান

0
Updated: 1 week ago
সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র সম্পাদিত পত্রিকার নাম কী?
Created: 4 days ago
A
গ্রামবার্তা
B
বঙ্গদর্শন
C
মাসিক পত্রিকা
D
সংবাদ প্রভাকর
১৮৭২ সালে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৮৯৪) কর্তৃক ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। উনিশ শতকের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, বিশেষত বাংলা গদ্যের গঠনে এর অবদান অবিস্মরণীয়। পত্রিকাটি ১৮৭৬ পর্যন্ত মাত্র চার বছর প্রকাশিত হয়। বঙ্গদর্শনের ভাষা ছিল খুব উন্নত মানের সাধু বাংলা।

0
Updated: 4 days ago
'সন্ধ্যাভাষা' কোন সাহিত্যকর্মের সঙ্গে যুক্ত?
Created: 14 hours ago
A
চর্যাপদ
B
পদাবলি
C
মঙ্গলকাব্য
D
রোমান্সকাব্য
চর্যাপদ
-
চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন, যা “চর্যাগীতি” বা “চর্যাগীতিকোষ” নামেও পরিচিত।
-
এটি বাংলা ভাষার প্রথম কাব্যসংকলন বা গানের সংকলন।
-
চর্যাপদের মূল বিষয়বস্তু বৌদ্ধধর্ম অনুযায়ী সাধনা ও ভজনের তত্ত্ব।
-
চর্যাপদে বৌদ্ধ সহজিয়াগণ রচনা করেছেন।
-
১৯০৭ সালে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রয়েল লাইব্রেরি থেকে এটি আবিষ্কার করেন।
-
চর্যাপদের ভাষাকে বলা হয় ‘সন্ধ্যা’ বা ‘সান্ধ্য ভাষা’, যা কখনও স্পষ্ট এবং কখনও অস্পষ্ট; তাই একে ‘আলো-আঁধারি ভাষা’ বলাও হয়।
-
প্রাচীন ছন্দে রচিত চর্যাপদের পদগুলোর আধুনিক বিশ্লেষণে মাত্রাবৃত্ত ছন্দ ধরা হয়েছে।
চর্যাপদ বিষয়ে গবেষণা
-
১৯২০ সালে বিজয়চন্দ্র মজুমদার চর্যাপদের ভাষা নিয়ে প্রথম আলোচনা করেন।
-
১৯২৬ সালে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বৈজ্ঞানিকভাবে চর্যাপদের ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যাকরণ ও ছন্দ বিশ্লেষণ করে প্রমাণ করেন যে, চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত।
-
এছাড়াও ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ড. সুকুমার সেন, ড. শশীভূষণ দাশগুপ্ত চর্যাপদের ভাষা ও বিষয়বস্তু নিয়ে গবেষণা করেছেন।
-
১৯৪৬ সালে ড. শশীভূষণ দাশগুপ্ত চর্যাপদের সহজিয়ান প্রসঙ্গে অন্তর্নিহিত তত্ত্ব ব্যাখ্যা করেন।
-
বিহারের পণ্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়ন বৌদ্ধ সিদ্ধাচর্য, বৈদ্ধ সহজান এবং চর্যাগীতিকা নিয়ে ইংরেজি ও হিন্দিতে বিস্তৃত গবেষণা করেছেন।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম।

0
Updated: 14 hours ago